পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশের বিভিন্ন শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বড় অংশ অপুষ্টির শিকার। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন- এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শুধু তৈরী পোশাক শিল্পেই কর্মরতদের মধ্যে শতকরা ৪৩ জন নারী অপুষ্টিতে ভুগছেন। এছাড়া ২০০৫ সালে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, অপুষ্টির কারণে শ্রমিকের কর্মক্ষমতা ও উৎপদানশীলতা ২০ ভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের রুপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শ্রমিকের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
আজ (রোববার) রাজধানীর একটি হোটেলে ’কর্মক্ষেত্রে পুষ্টি কার্যক্রম: শিক্ষণ বিনিময়’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে বক্তারা এই তথ্য তুলে ধরেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এম.পি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহসান-ই-এলাহী এর সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পুষ্টি সেবা এর লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত অ্যান্নে ভান লিউওয়েন, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) গৌতম কুমার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেলথ সার্ভিসেস ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব ও সান (স্কেলিং আপ নিউট্রিশন) ফোকাল কাজী জেবুন্নেসা বেগম, গেইন-বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, বিজিএমইএ-্এর প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান ও বিকেএমইএ-ও নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে শ্রমিকদের পুষ্টির গুরত্ব বিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন গেইন বাংলাদেশ-এর পোর্টপোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল।
এছাড়া অনুষ্ঠানে গেইন পরিচালিত পুষ্টি বিষয়ক প্রকল্প “স্বপ্ন”র চুড়ান্ত মূল্যায়নের গবেষণায় প্রাপ্ত বিভিন্ন ফলাফল তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, পোশাক কারখানার কর্মীদের কাজের গতি বাড়াতে দুপুরের পুষ্টিকর খাবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় বলা হয়, প্রশিক্ষিত ’পুষ্টি বন্ধুর’ মাধ্যমে অন্য সকল কর্মীদের পুষ্টি জ্ঞান প্রদানের বিষয়টি কার্যকর ও বাস্তবসম্মত।
বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত এবং উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা; তিনি ৪৮ বছর আগে পুষ্টি বিষয়টিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। সে কারণেই জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রুপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শ্রমিকের নিরাপদ খাবার ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। এছাড়া যারা খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সরবারহ ও বিপনন এর সাথে জড়িত তাদেরকেও নিরাপদ ও পুষ্টির বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
সেমিনার থেকে সরকারী, বেসরকারী ও প্রাইভেট সংস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি ‘ওয়ার্কফোর্স নিউট্রিশন অ্যালায়েন্স’ তৈরি করার ব্যাপারে সম্মতি জ্ঞাপন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।