Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কুলাউড়ায় বিস্ময়জাগানো এক গাছে ‘পঞ্চব্রীহি’ ধান

মো. নাজমুল ইসলাম, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহাটি গ্রামে এক ধান গাছে পাঁচবার ফলন দিবে। এমন এক নতুন জাতের ধান গাছ উদ্ভাবন করেছেন ধান গবেষক ও জিনবিজ্ঞানী কুলাউড়ার আবেদ চৌধুরী।
সরেজমিন দেখা যায়, কানিহাটি গ্রামের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে আমতলা মাঠে দুই বিঘা জমি ঘিরে টান টান উত্তেজনা। কারণ এই জমির ধান সাধারণ নয়, এই ধান ভিন্ন প্রকৃতির। বিস্ময়জাগানো পাকা ফসল কাটা শুরু হয়েছে। চারা রোপনের পর এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো ধান কাটা হলো। একবার রোপণে এ ধানের গাছে বছরজুড়ে পাঁচবার ফলন আসায় নিভৃত কানিহাটি গ্রাম থেকে সৃষ্টি হবে নতুন এক ইতিহাস।

নতুন এ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ধান গবেষক ও জিনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী। তিনি ইনকিলাবকে জানান, বোরো হিসেবে গত বছরের প্রথমে লাগানো এ ধান ১১০ দিন পর পেকেছে। একই গাছে পর্যায়ক্রমে ৪৫ থেকে ৫০ দিন পরপর একবার বোরো, দুই বার আউশ এবং দুই বার আমন ধান পেকেছে।
ইতোমধ্যে কৃষকরা এক জমি থেকে পাঁচবার ধান কেটেছেন। আবেদ চৌধুরী জানান, জমিতে এক গাছে ধানের পাঁচ ফলনের ঘটনা পৃথিবীতে বিরল। তিনি এক গাছেই ছয়বার ফসল তোলার গবেষণা চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি নতুন জাতের ধান সারাদেশেই চাষাবাদ সম্ভব কিনা তা যাচাই করবেন। এজন্য বিভিন্ন জেলায় এ ধানের পরীক্ষামূলক চাষ করবেন।

কুলাউড়ার কানিহাটি গ্রামের সন্তান আবেদ চৌধুরী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা শেষে চাকরি নিয়ে চলে যান অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানকার জাতীয় গবেষণা সংস্থার প্রধান ধানবিজ্ঞানী হিসেবে ২০ বছর ধানের জিন নিয়ে গবেষণা করেছেন। পেশাগত কারণে বিদেশের মাটিতে গবেষণা করলেও দেশে তার গ্রাম কানিহাটিতে গড়ে তুলেছেন খামার।

আবেদ চৌধুরী বলেন, ‘আম-কাঁঠালের মতো বছরের পর বছর টিকে থাকার সৌভাগ্য ধান গাছের হয় না- এটা কোনোভাবেই মানতে পারছিলাম না। তাই গবেষণা শুরু করি।’ একই গাছ থেকে পাঁচবার ধান বেরিয়ে আসে। ফলে এই ধানের নাম তিনি দিতে চান ‘পঞ্চব্রীহি’।
নামকরণের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ধানকে ব্রীহি বলা হয়। এটা যেহেতু পাঁচবার ফলন দিয়েছে, সেহেতু ‘পঞ্চব্রীহি’ নাম দিতে চাই। পরবর্তী ষষ্ঠবার ফল দিলে ‘ষষ্ঠব্রীহি’ নামকরণ করা যেতে পারে। তবে এই ধানের নাম এখনও তিনি চূড়ান্ত করেননি।

নতুন জাতের ধানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কানিহাটি গ্রামের কৃষক রাসেল মিয়া জানান, পরীক্ষমূলকভাবে দুই বিঘা জমিতে ধান রোপন করা হলে সফলভাবে পাঁচবার গাছ থেকে ধান কাটা হয়েছে। গাছ থেকে একবার ধান কাটা হলে ধান গাছের গুড়ি (নেরা) যত্ন করে রেখে দিলে সেই গাছে আবার ফলন চলে আসে। তাই আগামী বোরো মৌসুমে এ অঞ্চলে প্রায় ২০ বিঘা জমিতে আবার উদ্ভাবনী নতুন ধান রোপন করা হবে।



 

Show all comments
  • Mostafa kamal ২২ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৩২ এএম says : 0
    Alhamdulillah
    Total Reply(0) Reply
  • হুসাইন ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের সব জেলাতেই এই ধানের চাষের ব্যবস্থা করতে হবে করতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • হুসাইন ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের সব জেলাতেই এই ধানের চাষের ব্যবস্থা করতে হবে করতে হবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ