Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনা

সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে : | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ক্ষতি কাটিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি খামার কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আর এই প্রণোদনার তালিকা নিয়ে ঢাকার সাভার উপজেলায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই তালিকার সাথে জড়িত এক কর্মকর্তা অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, মাঠকর্মীরা কিছু টাকার লোভে এই অনিয়ম করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব খামারি মাঠকর্মীদের প্রণোদনার একটি অংশ দিতে রাজি হয়েছে শুধু তাদেরকেই তালিকার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ঘুষের বিনিময়ে গবাদি পশু নেই এমন ব্যক্তিকেও প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কতজন খামারিকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম। তিনি তথ্যের জন্য তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে বলেন। সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর প্রণোদনার তালিকা চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে দৈনিক ইনকিলাবের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও প্রায় তিন মাসেও তথ্য দেয়া হয়নি। একাধিকবার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আজ, কাল, একসপ্তাহ পরে আসেন এই বলে ঘুরাতে থাকেন।

তবে উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেবের কাছেও সরকারি প্রণোদনার অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের এখানে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি হয় নাই। যার যার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেয়েছে। এই তালিকা দিয়ে কি করবেন। তারপরও দেখেন স্যার (ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম) কি বলেন। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে সাভার উপজেলায় গরু ও মুরগি খামারিদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এর আওতায় বিভিন্ন বিভাগে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা ১০ হাজার, ১৫ হাজার ২০ হাজার টাকাও দেয়া হচ্ছে। খামারিদের অভিযোগ, ঘুষের বিনিময়ে প্রণোদনার তালিকায় একই খামার দেখিয়ে দুই থেকে তিনজনের নামও দেয়া হয়েছে। গবাদি পশু নেই এমনও ব্যক্তিদেরও টাকা দেয়া হয়েছে।

তালিক তৈরির দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গরু ও মুরগির খামার মিলে মোট ২ হাজার ৯৯২ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরমধ্যে ৯০০ জনের টাকা নিয়ে সমস্যা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, মাঠপর্যায়ে লাইফস্টক সার্ভিস প্রভাইডারের (এলএসপি) ১৩ জন মাঠকর্মী হিসেবে যারা কাজ করেছে তারাই এই অনিয়মটা করেছে। তারা কিছু টাকার বিনিময়ে খামারিদের গরু বেশি দেখিয়ে তালিকা তৈরি করেছে যার প্রমাণও তিনি পেয়েছেন। কিন্তু এই অনিয়ম নিয়ে এই কর্মকর্তার কিছু করার ছিল না বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, তাদের এই তালিকার টাকা পাওয়ার পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পুনরায় প্রণোদনার জন্য আরও ২০০০ জনের একটি তালিকা করেছেন।

সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলামের কাছে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে অনিয়ম দুর্নীতির কোন সুযোগ নেই। প্রণোদনার টাকা যার যার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এসেছে।

এদিকে সরকারি প্রণোদনার টাকায় অনিয়মকারী মাঠকর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে প্রণোদনা না পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ