পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুড়িগ্রামে গণগ্রেফতারের ভয়ে ৩ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের পুরুষ মানুষ বাড়ি ছাড়া হয়েছে। আতঙ্কে রয়েছে ওই এলাকার নারী ও শিশুরা। গ্রামগুলোতে ভাটা পড়েছে ব্যবসা ও আয়মূলক কর্মকাণ্ডে। মজুরের অভাবে জমিতে নষ্ট হচ্ছে সবজি ক্ষেত। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির দালালরা মানুষের দুর্বলতাকে পুঁজি করে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্রেফতার আতঙ্কে ওইসব গ্রামে দিনের বেলা কিছু মানুষ চোখে পড়লেও বিকেল হওয়ার সাথে সাথে পুরুষ শূন্য হয়ে পরে গ্রামগুলো। এর ফলে হাটবাজারগুলোতে আগের মত থাকে না কোলাহল। নতুন মানুষ দেখলেই এড়িয়ে চলছে সবাই। বেচাকেনা না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসার সাথে জড়িত লোকজন।
উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের রামপ্রসাদ পাড়ার বাসিন্দা কৃষক বাবলু মিয়া (৬০) জানান, মামলার ভয়োত কামলারা পলাইছে। এ্যালা শাক তোলার কামলা পাবার নাগছি না। হামার এটে এবার ভালই শাকসবজি হইছে। কিন্তুক বর্তমানে এলাকাত পুরুষ মানুষ নাই। ফকির মিস্কিনও এই গ্রামোত আসপের চায় না।
একই ইউনিয়নের সাতদরগা গ্রামের মুদি দোকানদার জাহাঙ্গীর (৫৫) জানান, হামার এটে বেশিরভাগ পুরুষ মানুষ আর মাদরাসা ছাত্ররা বাড়ি ছাড়ি পালাইছে। মুই পঙ্গু মানুষ সাহস করি দোকানদারী করবের নাগছং। গণ্ডগোলের পর থাকি বেচাকেনা নাই। চা বেচেয়া কোনদিন দশ টেকা কোনদিন বা ২০ টেকা লাভ হয়। এই দিয়া কি সংসার চলে।
গত ১৩ অক্টোবরের ঘটনায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ৩টি ইউনিয়নের ৫টি মন্দিরের মধ্যে গুনাইগাছ ইউনিয়নে ৩টি মন্দিরে হামলা করা হয়। এগুলো হচ্ছে পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মণ পাড়া দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ও নেফড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ভাঙচুর করা হয়। এছাড়াও থেতরাই ইউনিয়নে হামলা করা হয় হোকডাঙ্গা ভারতপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির এবং বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে বেগমগঞ্জ সার্বজনীন দুর্গা মন্দির। এ সময় দুর্বৃত্তরা মন্দিরসহ প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ এবং বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
মামলার পর থেকে গুনাইগাছ ইউনিয়নের নেফড়া, কালুডাঙ্গা গ্রামের কাঠালীপাড়া, হাজীপাড়া, খারিজাপাড়া, মৌলভীপাড়া, পূর্বপাড়া, কালুডাঙ্গাপাড়া এবং থেতরাই ইউনিয়নের রামপ্রসাদ, হোকডাঙ্গা, কিশোরপুর, বকশিপাড়া, তেলিপাড়া, থেতরাই বাজার এলাকার ফকিরপাড়া, সাতদরগাহ্, বকশিরবাজার, দালালীপাড়া, মতুল্ল্যাটারী, বকশিপাড়া, নাপিতপাড়া, হাজীপাড়া, কানিপাড়া, তেলিপাড়া পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। দিনের বেলা নারী এবং বৃদ্ধরা বাজার ঘাট করলেও রাতের বেলা যেন এলাকা ফাঁকা হয়ে পড়ে। একদিকে পেটের জ্বালা অপরদিকে পুলিশী গ্রেফতার আতঙ্কে এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে কোন স্বস্তি নেই। পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে আশেপাশের গ্রামসহ হাট বাজারগুলোতে। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বিষয়টি নিয়ে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইমতিয়াজ কবীর জানান, এখন পর্যন্ত ৬৬ জনকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্যাবলি এবং ভিডিও’র মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নিরীহ কেউ যাতে ভোগান্তিতে না পড়ে সে ব্যাপারে পুলিশ সজাগ রয়েছে। আর গ্রামের সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে
এ ব্যাপারে উলিপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রামের মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে যাচাই-বাছাই করে আটক করা হচ্ছে। দালাল চক্রের বিষয়টিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের নজরেও এসেছে। সেটি কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।