Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশালে ইলিশের আকালে আধিক্য পাঙ্গাসের

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে মৎস্য আহরণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পরে মেঘনার শাখা নদ-নদীগুলোতে পাঙ্গাস মাছের প্রাচুর্য জেলেদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। বরিশাল ও ভোলার ইলিশ মোকামের আড়তগুলোতে পাঙ্গাসের আধিক্য আড়তদারদের ২২ দিনের বিপণন নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিনই বরিশালের মাছের আড়তে বিপুল সংখ্যক পাঙ্গাস নিয়ে আসছে জেলেরা। বাজারেও শীতের এ মাছের প্রাচুর্যে খুশি উচ্চবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। দ্বীপজেলা ভোলার পূূর্বপাশে ভাটি মেঘনা আর পশ্চিমের তেতুলিয়া নদীর ভাটিতে সাগর মোহনা থেকে এ সময়ে যে পরিমাণ ইলিশ উজানে উঠে আসার কথা, তার যথেষ্ট ঘাটতিতে জেলেদের মুখের হাসি মিলিয়ে যাবার মধ্যেই প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ায় ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে।

গত কয়েক দিন ধরেই ভোলার উজানে চাঁদপুরের ভাটিতে বরিশালের হিজলা সংলগ্ন মেঘনা ও এর শাখা নদ-নদীগুলোতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ছে। ৩ থেকে দশ কেজি ওজনের এসব মাছ নদীতেই ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও দু’তিন হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে যখন পৌছায় তখন তা ৮শ’ টাকা কেজি। তারপরেও গত কয়েকদিন ধরে বাজারে পাঙ্গাসের প্রাচুর্য মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের খাবারে ভালো আমিষের যোগান দিচ্ছে।
মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, শীতের সময় মেঘনা ও এর শাখা নদ-নদীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছও ধরা পড়ে। এবার তা কিছুটা আগেই মেঘনা ও তেতুলিয়ার ভাটি থেকে উজানে চলে এসেছে। বিজ্ঞানীদের সরেজমিন গবেষণায় ২০১৯ সালে ইলিশের মূল প্রজননকালীন ২২ দিনে দেশের প্রধান ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রসমূহে পরীক্ষামূলক নমুনায়নে ৮৩% ইলিশের রেনুর সাথে ১৭% অন্যান্য মাছের রেনু পোনাও পাওয়া যায়। ফলে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন ২২ দিনে উপকূলে অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন স¤পন্ন হচ্ছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা। যা দেশে অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদফতর। এবার নদ-নদীতে গত কয়েক দিনের পাঙ্গাসের আগাম বিচরণকে অত্যন্ত ভালো লক্ষণ মনে করে সহনীয় আহরণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা।
এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদফতরের বরিশালের বিভাগীয় উপ-পরিচালক জানান, ইলিশ প্রজননের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ-নদীতে শুধু পাঙ্গাস নয় বিভিন্ন মাছেরও প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ভালো লক্ষণ বলেও মনে করেন তিনি। তবে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পরেও নদ-নদীতে ইলিশের প্রাচুর্য কিছুটা কম থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, ইলিশ জীবনচক্রে স্বাদু পানি থেকে নোনা পানিতে এবং সেখান থেকে পুনরায় স্বাদু পানিতে অভিপ্রয়ান করে। উপকূলের ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মূল প্রজনন ক্ষেত্রে মুক্ত ভাসমান অবস্থায় ডিম ছেড়ে বেশিরভাগ ইলিশই আবার সাগরের নোনা পানিতে বিচরণ করছে। সুতরাং প্রজননত্তোর এসময়ে দেশের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ইলিশের বিচরণ অনেকটা সীমিত থাকাই স্বাভাবিক বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ