পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘদিন ধরেই বিমানবন্দর কেন্দ্রীক সক্রিয় রয়েছে একাধিক ছিনতাইকারী ও ডাকাত দল। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এ ধরনের অপরাধীদের তৎপরতা বেড়ে গেছে অনেক। প্রবাসীরা দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর এলাকায় নানা কায়দায় সব হারাচ্ছেন অপরাধীদের হাতে জিম্মি হয়ে। এদের টার্গেট থেকে বাদ পড়ছেন না বিদেশী নাগরিকরাও। গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকা বিদেশ ফেরতদের টার্গেট করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কিংবা সখ্যতা গড়ে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে সর্বস্ব লুট করে নেয় চক্রের সদস্যরা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেন্দ্রীক সংঘঠিত ডাকাতির ঘটনার তদন্তের ধারাবাহিকতায় এ চক্রর তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উত্তরা বিভাগ। গ্রেফতার তিনজন হলো-মো. মাসুদুল হক ওরফে আপেল, মো. আমির হোসেন হাওলাদার ও মো. শামীম। গত শনিবার রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল মীরবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি পাসপোর্ট, দুটি এনআইডি কার্ড, দুটি এটিএম কার্ড, একটি আইপ্যাড, একটি ওয়ার্ক পারমিট কার্ড, একটি বিএমইটি কার্ড, একটি অফিস আইডি কার্ড, একটি স্টিলের চাকু ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
তবে গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর লিটন সরকার নামে এক প্রবাসী দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মিশর থেকে তুর্কি এয়ারলাইন্সযোগে দেশে আসেন। তিনি বিমানবন্দর টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে গোল চত্বরে ফুটওভার ব্রিজের নিচে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা হ্যান্ডব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ডাকাত দলের সদস্যরা ভিকটিমকে ঘটনাস্থল থেকে একটি বাসে তুলে ঘটনার বিষয়ে কাউকে কোনো কিছু না জানানোর জন্য ভয়-ভীতি, হুমকি প্রদর্শন করেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ অক্টোবর বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলাটি তদন্তের ধারাবাহিকতায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় উল্লেখ করে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার তিনজন কখনও ডাকাতি, কখনও ছিনতাই, কখনও অজ্ঞানপার্টির সদস্য হিসেবে তাদের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী দেশে আসা শুরু করায় বিমানবন্দরকে বেছে নিয়েছে চক্রটি। তারা বিদেশ থেকে আগত যেসব যাত্রী একা বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে তাদের টার্গেট করে। টার্গেট করা যাত্রীর সঙ্গে কৌশলে সম্পর্ক স্থাপন করে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে যাত্রীর সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অথবা সখ্যতা স্থাপন করে সুকৌশলে চেতনানাশক মিশ্রিত খাবার খাইয়ে সর্বস্ব লুট করে নেয়। অন্যদিকে ৫ অক্টোবর ব্রিটেন থেকে ঢাকায় আসেন ওমর শরিফ নামে এক ব্যক্তি। নাটোরের বড়াইগ্রাম যাওয়ার সময় বিমানবন্দর এলাকা থেকে অপহৃত হন তিনি। তাকে ঢাকার বাইরে নামিয়ে দেয়া হলেও তার পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় সব মালামাল লুট করা হয়।
প্রবাসীরা ঠিক কী কী কারণে ছিনতাইকারী চক্রের টার্গেট হচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, চক্রের সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বিমানবন্দর এলাকায় তারা গত এক বছরে অর্ধশতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। চক্রের মূলহোতা মাসুদুলের বিরুদ্ধেই রয়েছে সাতটি মামলা।
তিনি আরো বলেন, এক বছরে বিমানবন্দর এলাকায় অর্ধশতাধিক ডাকাতি, ছিনতাই ও অপহরণের ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে মাত্র সাতটি। দ্রুত বিদেশ ফিরে যাওয়ার তাড়া থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা ঝামেলা মনে করে মামলা করছেন না। আবার ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য বাংলাদেশে ঘুরতে আসা বিদেশিরাও দ্রুত পাসপোর্ট তুলে ফিরে যাচ্ছেন। যে কারণে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা কম হচ্ছে। আর এ সুযোগটাই নিয়েই সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র বিমানবন্দর এলাকায় প্রবাসী ও বিদেশিদের টার্গেট করে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।