Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশ বিক্রি করে তো ক্ষমতায় আসব না

খাদ্য দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেইনি বলে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। এটাই বাস্তব যে দেশ বিক্রি করে তো আমি ক্ষমতায় আসবো না। গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দেইনি বলেই আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হলো না। বৃহৎ দুটি দেশ আর প্রতিবেশি দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারিনি। সেসময় ক্ষমতায় না আসার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমার কথা ছিল- আগে আমার দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ হবে, অন্তত ৫০ বছরের মজুত থাকবে। তারপর যেটা অতিরিক্ত থাকবে সেটা আমি বেচতে পারি। তাছাড়া এই দেশের সম্পদ আমি বেচতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কথা আসলে একটা বিশাল দেশ আমেরিকা আর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পছন্দ হয়নি। কাজেই আমি ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি।

এ সময় তিনি খাদ্য উৎপাদন ও কৃষির আধুনিকায়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, মহামারি শুরুর দিকেই আমি আহ্বান জানিয়েছি যে, আমাদের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। সারাবিশ্বের অনেক দেশে এখন খাদ্যের অভাব। অনেক দেশ দুর্ভিক্ষ অবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার ভাষায় বলতে হয়, বাংলাদেশের মাটি আছে, মানুষ আছে, আমরা যেনো খাদ্যের অভাবে আর কখনও না ভুগি। উত্তরবঙ্গ আওয়ামী লীগ সরকার আমলেই মঙ্গা মুক্ত হয়, মঙ্গা মুক্তই থাকবে। বাংলাদেশে কখনও যেন আর দুর্ভিক্ষ হতে না পারে। কৃষিজমি কোনও মতেই যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। আমরা উৎপাদন করবো, উন্নয়ন করে যাবো। তবে সে উন্নয়নটা আমাদের কৃষি জমি সংরক্ষণ করেই করতে হবে।

সারাবিশ্বে প্রচুর খাদ্য অপচয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের অপচয়টা কমাতে হবে, অপচয় যেন না হয়। বিশ্বে কিন্তু একদিকে খাদ্যের অভাব, অপরদিকে প্রচুর খাদ্যের অপচয় হয়। এই অপচয় যেন না হয়। বরং যে খাদ্য অতিরিক্ত থাকে সেটাকে আবার পুনর্ব্যবহার করা যায় কীভাবে। সেটার বিষয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। সে ধরনের ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। উদ্ধৃত্ত যে খাদ্য থাকবে বা আপনি খেতে বসেও যে খাবারটা বেশি থাকবে সেটাও কীভাবে পুনর্ব্যবহার করা যায়, অন্য চাহিদা পূরণ করা যায় কি না- সেটাকেও গবেষণার মধ্যে রাখা দরকার।

কৃষি সম্প্রসারণ ও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্য চাহিদা ইনশাল্লাহ আমরা পূরণ করে যাবো। হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বিনামূল্যে খাদ্য দিয়েও তাদের খাদ্য চাহিদা আমরা পূরণ করবো। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। উৎপাদিত খাদ্যের মান ঠিক রাখা।

শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য শুধু উৎপাদন না খাদ্যের মানটা যেন ঠিক থাকে। বীজ উৎপাদনে বিভিন্ন গবেষণা করা হচ্ছে। বীজ আমরা উৎপাদন করবো, আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকবো না। সরকারিভাবে উৎপাদন করবে, মানসম্পন্ন বীজ সংগ্রহ এবং যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষিতে সফলতার জন্য বাংলাদেশি কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমরা চাহিদার উদ্ধৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন ধান উৎপাদনে তৃতীয়, শাকসবজি উৎপাদনে তৃতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং ইলিশ মাছ উৎপাদনে প্রথম স্থান অর্জন করেছি।

কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার, কৃষি বাতায়ন, কৃষক বন্ধু ফোন সেবা (৩৩৩১), কৃষকের জানালা, কৃষি কল সেন্টার (১৬১২৩) মাধ্যমে কৃষকদের সাথে তথ্য আদান-প্রদানের ব্যবস্থা, প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান, ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা, উন্নত বীজ ও সার সরবরাহ, গবেষণা, প্রশিক্ষণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণসহ কৃষি সম্প্রসারণে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন তিনি। বিশ্ব খাদ্য দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য- আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ, ভালো উৎপাদনই ভালো পুষ্টি, ভালো পরিবেশই উন্নত জীবন।

অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম।



 

Show all comments
  • সার‌ওয়ার ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:২২ এএম says : 1
    প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কাজের কথা বলছেন
    Total Reply(1) Reply
    • ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১২:৪৩ পিএম says : 0
  • Abdul Mannan Shahin ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৮ এএম says : 1
    আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ, সুজালা, শস্য-শ্যামলা আমাদের বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না ইনশাল্লাহ। আমাদের বাংলাদেশে যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে আমাদের যোগ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় আরো আরো এগিয়ে যাব আমরা সত্রুর মুখে ছাই দিয়ে, ইনশাল্লাহ আমাদের এই গতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Ronju Nuruzzaman ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 1
    ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নেতৃত্ব এবং দিক নির্দেশনায় দেশ আজ সমৃদ্ধশীল। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে , সুস্থ রাখুন, সুসাস্হ ও দীর্ঘ জীবন দান করুন। আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmudul Hasan Joy ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে যখন বাংলাদেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে। তাহলেই হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাদেশ ।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ রাজু স্বেচ্ছাসেবকলীগ ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 1
    অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়েছে বাংলাদেশ সরকার তাই শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • Sree Sajeeb Sutra Dhar ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
    দেশের মানুষ যদি দেশটাকে অারো বেশি ভালোবেসে কাজ করে দেশের জন্য তাহলে অারো উন্নতি করা সম্ভব
    Total Reply(0) Reply
  • Shariful Islam Pinu ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
    Positive Bangladesh. Congratulations & Best Wishes Honorable Prime Minister Sheikh Hasina...Joy Bangla Joy Bongobondhu
    Total Reply(0) Reply
  • SA Bally Tapadar ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
    আশাব্যঞ্জক তবে শিক্ষিত সমাজকে সম্পদে পরিণত করতে যা যা প্রয়োজন তার সব কঠিন পদক্ষেপ নিলেই দীর্ঘমেয়াদে উন্নতি ধরে রাখা সম্ভব!
    Total Reply(0) Reply
  • Maloy Baroi Virat ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:৩১ এএম says : 0
    দেশের মানুষের মানষিক পরিবর্তন না আসলে, বাহ্যিক আর অর্থনীতির উন্নতি স্থায়ী হবে না। সিঙ্গাপুরের মানুষ যে পরিমান সৎ আর কর্মঠ তাতে তাদের ছাড়িয়ে গেলেও আমরা উন্নত হতে পারব না। আচার-আচরণে আমরা কতটা পিছিয়ে তা দেখতে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। একটা লোকাল বাসে উঠলেই বোঝা যায়। একজন দ্বায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমি আমার সরকারের কাছে আবেদন জানাই দেশের সার্বিক উন্নতির
    Total Reply(0) Reply
  • Jashim Uddin ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১:৩২ এএম says : 0
    দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস নিন্ম আয়ের মানুষ। দয়া করে এদিকে নজর দিন। অনেক স্বপ্ন দেখাইছেন আর এসব স্বপ্ন দেখতে চাইনা। দুবেলা ভাত খেয়ে বাচতে চায় নিন্ম আয়ের মানুষ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ