Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমিতির ১৩২ কোটি টাকার হিসাব নেই

অভিযোগ বর্তমান কমিটির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির তিন বছরের কমিশন বাবদ আয়ের ১৩২ কোটি টাকার কোনো হিসাব পায়নি অডিট কমিটি। নানা অনিয়মের মাধ্যমে এই অর্থ সমিতির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটি আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে বর্তমান কমিটি।

গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতি বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আতাউল করিম ও সম্পাদক মো. শাহাব উদ্দিন সরকারসহ সমিতির অন্যান্য সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সমবায় অধিদফতর থেকে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমিতির ২০১৮-২০২০ সময়কালের অডিট রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চুক্তি মোতাবেক পিপিআই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা হতে রাজস্ব আদায়ে ঠিকাদারি বিল বাবদ সমিতি ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টাকাসহ মোট ১৩৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৬৩ টাকা পেয়েছে। এ অর্থ থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে হিসাব বিবরণীতে মাত্র ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা হিসাবভূক্ত করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের অবশিষ্ট ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকার কোনো হিসাব নেই। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ সমিতির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটি আত্মসাৎ করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

২০১৬ সালে সমিতির সভাপতি ছিলেন হাফিজ উদ্দিন ও সম্পাদক আতাউর রহমান মিয়া এবং ২০১৯ সালে সভাপতি ছিলেন মো. আক্তারুজ্জামান ও সম্পাদক ছিলেন মো. জাকির হোসেন। আলোচিত সময়ে সমিতির এ দুই কমিটির পিপিআই পরিচালনা পর্ষদে হাফিজ উদ্দিন, মো. আক্তারুজ্জামান ও মিঞা মো. মিজানুর রহমানসহ আরো বেশ কিছু সদস্য বিধিবহির্ভূত ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে খরচ ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করছে বর্তমান কমিটি।

কমিটি ও পরিচালনা পর্ষদ ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন পর্যন্ত সময়ে সমিতি ও পিপিআই প্রকল্পের বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা হিসাব থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই প্রায় ৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা উত্তোলন করেছে। যার হিসাবও পাওয়া যায়নি বলে অডিট রিপোর্টে উঠে এসেছে। বিগত ব্যবস্থাপনা কমিটির বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট থেকে নিয়মিত ও বৈধ কমিটি না থাকায় সমিতি ও সমিতির প্রকল্প পিপিআইয়ের অর্জিত তহবিল সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে ব্যয় বা বণ্টন হয়নি। এর আগেও সমিতির অর্থ নয়-ছয় হওয়ার অনেক আলামত রয়েছে। ব্যবস্থাপনা কমিটির বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ শুধু নয়, বরং সমিতির সম্পদ ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষও দখল করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

সমিতির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটিও ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী হিসেবে সংস্থার নীতির সঙ্গে একমত পোষণ করে এবং সমিতির দুর্নীতির বিষয়েও উক্ত নীতিতে অটল। এমন অবস্থায় যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতি তথা জনগণের টাকা নয়-ছয় করার কাজে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করুন। আর নির্বাচিত প্রতিনিধি যারা সমিতির অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অনিয়মকারীদের চিহ্নিত করার জন্য সদা সচেষ্ট তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করার অপরাধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলা, কারণ দর্শানোসহ অন্যান্য নিপীড়ণমূলক ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ