পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপটে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা নিরাপত্তা নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, এসব ঘটনায় হিন্দুদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনা এবং তার জের ধরে সহিংসতার ঘটনাগুলোর সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, এ ঘটনা নিয়ে গতকাল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে, এই ঘটনা উদ্বেগজনক। তবে বাংলাদেশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছে তারা।
হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও প্রতিনিধিদের সাথে পূজার শুভেচ্ছা জানানোর অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা প্রতিবেশী ভারতের উদ্দেশেও হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, তাদেরও সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘সেখানেও (ভারতে) এমন কিছু যেন না করা হয়-যার প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে। আর আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে।’ প্রতিবছরের মত এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বা প্রতিনিধিদের সাথে বৃহস্পতিবার এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তবে এবার প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। পূজার অষ্টমীতে কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া যায় এবং এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় পূজামণ্ডপে হামলা হয়। সেই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের বক্তব্য ছিল মূলত তাদের নিরাপত্তার প্রশ্নে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত বলেছেন, পূজামণ্ডপে সহিংসতার ঘটনাগুলোর কারণে সারাদেশে হিন্দুদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, সেই পরিস্থিতি তারা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, ‘সংঘবদ্ধ আক্রমণ হয়েছে, সেজন্য আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থার সঙ্কট হচ্ছে এবং ভীতি তৈরি হয়েছে।’
ভারতের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা: বিশ্বে জঙ্গি তৎপরতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশি দেশকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবেশি দেশেও এমন কিছু যাতে না করা হয়, যার প্রভাব এখানে পড়ে। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় তারও একটা প্রভাব এসে পড়ছে। সেব্যাপারে আমাদের নিজেদের দেশ শুধু নয়, আমাদের প্রতিবেশি দেশকেও সজাগ থাকতে হবে।’ ভারতের উদ্দেশে তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রতিবেশি ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় সহযোগিতা করেছে। তাদের কথা আমরা সব সময় কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেখানেও (ভারতে) এমন কিছু যেন না করা হয়-যার প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে। আর আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে। সে ব্যাপারে তাদেরকেও একটু সচেতন থাকতে হবে।’
রাজনৈতিক অঙ্গনেও এই ইস্যু নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতারা বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিয়েছেন। সরকারের অনেকেই ঘটনার জন্য বিএনপির দিকে আঙুল তুলেছেন। আবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন ইস্যু থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে সরকারের ইঙ্গিতে এসব ঘটনা ঘটতে পারে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ সালের পর থেকে বিএনপি জামায়াত ধর্মের নামে বিভক্তি শুরু করেছে। এদিকে, পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা গত ২৪ ঘন্টায় আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা করে তাদের উদ্বেগ তুলে ধরেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিবসহ কয়েকজন সচিব এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধানদের সাথে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেছেন, সহিংসতা এবং ফেসবুক সহ সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং তারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। ‘যারা এধরনের অপচেষ্টা করবেন বা করে যাচ্ছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনে আওতায় আনা হবে’, বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা বলেছেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেও তারা যে প্রতিশ্রুতি পেলেন, তাতে ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত বিচার হবে বলে তারা আশা করছেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতির মোকবিলায় বাংলাদেশ সরকার যে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত তা লক্ষ্য করেছে। ভারতীয় দূতাবাস ও কনসুলেট বাংলাদেশ সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমানে যোগাযোগ রাখছে বলে জানানো হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ধর্মীয় সমাবেশে আক্রমণ সহ উদ্বেগজনক ঘটনার রিপোর্ট দেখেছি। আমরা এটাও লক্ষ্য করেছি যে, বাংলাদেশ সরকার দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য আইনরক্ষকদের মোতায়েন করেছে।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা জানি, বাংলাদেশ সরকার ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সাহায্যে বাংলাদেশে দুর্গাপুজো হয় এবং প্রচুর মানুষ সেখানে যান। আমাদের হাই কমিশন ও কনসুলেট সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলেছে।’ সূত্র : বিবিসি বাংলা, ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।