পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে দিন দিন ঝুঁকিতে পড়ছে দেশ। এই অবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়লেও সরকারের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই বলে অভিযোগ করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন।
এ সংগঠনটি বলছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মিথেন গ্যাসের ব্যবহারের ফলে পৃথিবী জুড়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত ১০ বছরে প্রায় পঞ্চাশ বারের কাছাকাছি ভূমিকম্প অনুভব করেছে দেশের জনগণ। অতি জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা এখন প্রতিবছরের স্বাভাবিক নিয়মে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল বিশ্ব দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার এসব কথা বলেন।
বাপ্পি সরদার বলেন, এ দিবসকে কেন্দ্র করে সরকারের সচেতনতামূলক কার্যক্রম দেখা যায়। কিন্তু সারাবছর বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে অগ্নিকাণ্ড, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, নদীর নাব্যতা সংকট, নদী দখল, কেমিক্যাল সার ব্যবহারের ফলে মিথেন গ্যাস বৃদ্ধি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, উন্নয়ন প্রকল্প বৃদ্ধির নামে বৃক্ষ কেটে ফেলাসহ বিভিন্ন কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং বন পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
দুর্যোগ প্রশমন করতে সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দেশে অগ্নিকাণ্ড কমাতে তদারকি বাড়াতে বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দেশের সব সামাজিক সংগঠনের সদস্যদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি বাড়াতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি বন্ধে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও রিসাইকেলিং ব্যবস্থা জোরদার করা, উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ স্বেচ্ছাসেবক গার্ড বাহিনী তৈরি করতে হবে। আগামী এক বছরের মধ্যে সরকারিভাবে ২০ লাখ স্বেচ্ছাসেবক তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।