Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে চুল্লিপাত্র বসছে আজ, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০২১, ১০:২০ এএম

পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথে বড় ধরনের অগ্রগতির সূচনা হচ্ছে আজ। আজ স্থাপন করা হবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘হৃৎপিÐ’ হিসেবে পরিচিত রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লিপাত্র। এটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল যন্ত্র। এর মাধ্যমেই শক্তি উৎপাদন হবে, যা কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হবে বিদ্যুৎ। আজ (রবিবার) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের এটি উদ্বোধন করবেন।
শনিবার বিকেলে পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন ও ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিএম ইমরুল কায়েস প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য এই ‘রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল’টি রাশিয়া থেকে পানিপথে ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গত বছরের অক্টোবরে দেশে পৌঁছেছে। সেটি স্থাপনের জন্য এক বছর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়। ‘রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল’ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেখানে মূল জ্বালানি থাকবে।
আরো জানা যায়, পারমাণবিক চুল্লির পাত্রটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন। এই চুল্লি কৃষ্ণসাগর ও সুয়েজ খাল পাড়ি দিয়ে মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে নৌপথে ঈশ্বরদীর পাকশীর পদ্মা নদী হয়ে রূপপুরে আনা হয়েছে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২০২৩ সালের এপ্রিলে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায় রূপপুর কর্তৃপক্ষ। আর ২০২৪ সালের ১৭ ফেব্রæয়ারি থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।
রূপপুরের কর্মকর্তারা বলছেন, রূপপুরে ইউনিট-১-এর ভৌত কাঠামোর ভেতরে চুল্লিপাত্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ ইউনিটের কাজ প্রায় শেষ বলা যায়। এ যন্ত্রের মধ্যেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম লোড করা হয়। বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলের পাশাপাশি রাশিয়ার জাতীয় টেলিভিশন আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। সারা বিশ্ব এটি দেখবে।
এদিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাশিয়া থেকে রূপপুরে এসেছেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ ও এটমস্ট্রয়এক্সপোর্টের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লোশকিন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতিমধ্যে রূপপুরে পৌঁছেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, প্রকল্প পরিচালক সৈকত আকবর। আগামীকাল সোমবার রাজধানী ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রোসাটমের মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
রূপপুর কর্তৃপক্ষ বলছে, রাশিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। এগুলো সময়মতো প্রকল্প এলাকায় পৌঁছানো হচ্ছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব যন্ত্রপাতি দেশে চলে আসবে। দেশেও প্রতিটি কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। দিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার লোক কাজ করার কথা থাকলেও রূপপুরে ২৫ থেকে ২৬ হাজার কর্মী কাজ করছেন প্রতিদিন।
রূপপুরে বর্তমানে সাড়ে চার হাজারের বেশি বিদেশি নাগরিক কাজ করছেন। তাঁদের অধিকাংশই রাশিয়ার নাগরিক। এ ছাড়া ইউক্রেন, উজবেকিস্তান, ভারতেরও কিছু দক্ষ প্রকৌশলী আছেন রূপপুর প্রকল্পে। বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেশের ১ হাজার ৪২৪ জনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধাপে ধাপে তাদের রাশিয়া পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ