পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিত ও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ৫০ লাখ টন ধান কেনার সুপারিশ করা হয়েছে। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ সুপারিশ করা হয়।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সঞ্চালনায় ছিলেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।
ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে চাল উৎপাদনের পরিমাণ তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে সাড়ে তিন কোটি টন ছাড়িয়ে গেছে। চাল উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা এলেও ১৬ কোটির বেশি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনও অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বক্তারা জানান, চাল-গমসহ খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও জনসংখ্যার তুলনায় খাদ্য চাহিদা কতটুকু তা যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা নেই। বর্তমান উৎপাদন ও ব্যবহারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও সুবিন্যস্ত নয়। ত্রæটি রয়েছে খাদ্য উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবস্থাপনাতে, যা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। তাই কৃষক ও ভোক্তা স্বার্থ রক্ষার দিকে যেমনি মনোযোগ দিতে হবে, তেমনি খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাব নেই। তবে অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ তথ্য না থাকার কারণে বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়, যার দায় মন্ত্রণালয়ও এড়াতে পারে না। কৃষিজমির বাণিজ্যিক ব্যবহার বা শ্রেণি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মূল ভ‚মিকা রাখতে পারে কৃষি মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, গত মৌসুমে দুর্যোগ ও করোনার কারণে আমন যথেষ্ট সংগ্রহ করা যায়নি বলে চাল আমদানি করতে হয়েছে। ফরিয়াদের মিলে ঢোকার প্রবেশাধিকার নেই। ব্যবসায়ীদের মুনাফার প্রতি অতিলোভের কারণে মাঝে মাঝেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে থাকে। বাজার মনিটরিংয়ের জন্য মূল্য কমিশন গঠন করে বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। সরকার ধানের যে দাম নির্ধারণ করেছে, তাতে করে মোটা চালের দাম ৪১ টাকার মতো হতে পারে। ন্যায্যমূল্য পাওয়া কৃষকের অধিকার।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, দেশে চালের উৎপাদন বেড়েছে এবং আমদানিও কম করতে হচ্ছে। গম উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করতে হয়।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের দেশীয় অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কৃষিতে সাফল্য এসেছে, কারণ সরকার কৃষি-গবেষণার ক্ষেত্রটিতে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছে। এটিকে অব্যাহত রেখে দেশীয় সম্পদকে ব্যবহার করে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে গবেষণা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, বাজারে আমরা খাদ্যশস্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। দেশের বড় ৫০টি অটো রাইস মিলের হাতেই থাকে বেশিরভাগ চালের মজুত। ফলে প্রচলিত আইন না ভেঙেই তারা চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, শুধু মূল্য বেঁধে দিয়ে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে নতুন কিছু ভাবতে হবে। মূল্য কমিশন গঠন হলেও তাদের সুপারিশ যথাযথভাবে হবে, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সাহানোয়ার সাইদ শাহীন বলেন, খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে আমাদের মোট কৃষিজ জমির ৭৪ দশমিক ৮৫ শতাংশে ধান উৎপাদিত হয়। মোট ধান উৎপাদনের মাত্র ছয় শতাংশ মজুতের সক্ষমতা রাখে সরকার। দেশে চাল ও গমের উৎপাদন ও ব্যবহার যেভাবে হচ্ছে, সে অনুযায়ী ২০২১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রক্ষেপণ সামঞ্জস্যহীন। উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানিও গত কয়েক বছরে বেড়েছে। গত দশ বছরে এ আমদানি নির্ভরতা ১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এ বিষয়টিও আমাদের ভেবে দেখতে হবে। প্রবন্ধে তিনি বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। এর মধ্যে একটি হলো ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিত ও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ৫০ লাখ টন ধান কেনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।