পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২ অক্টোবর দেশে ফিরছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটির জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করার নির্দেশনা দিবেন বলে জানা গেছে। এ সার্চ কমিটিতে হাইকোর্টের একজন বিচারক, পিএসপি চেয়ারম্যান ও মহা-হিসাবরক্ষক (সিএজি) সহ আরো তিনজন থাকছেন। সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এই কমিটি নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য নাম প্রস্তাব করবে। তার মধ্য থেকে অনধিক পাঁচ সদস্যের ইসি গঠন করবেন প্রেসিপেন্ট মো. আবদুল হামিদ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে সার্চ কমিটি গঠনের পরে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রেসিডেন্ট। সার্চ কমিটি গঠনের পরপরই প্রেসিডেন্টর সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার মনোনয়নের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচটি নাম পাঠানোর আহ্বান জানানো হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সাড়ে পাঁচ মাস মেয়াদ রয়েছে। তাদের মেয়াদ শেষে নতুন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন হচ্ছে আগামী মাসে। সেই কমিটির বাছাই করা নামের তালিকা থেকেই সাংবিধানিক সংস্থা ইসিতে দায়িত্ব নেবেন নতুন ব্যক্তিরা, যাদের অধীনে হবে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন। বাংলাদেশের সংবিধানে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেয়ার জন্য আইন করার কথা বলা আছে। কিন্তু ইসি গঠনের আইনটি সরকার এখনও করতে পারেনি। এছাড়া আইন করে ইসি গঠনের পর্যাপ্ত সময়ও সরকারের হাতে নেই। তবে আগামীতে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আইন প্রণয়নের কাজ এগিয়ে চলছে। এই আইন প্রণয়নে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই।
জানা গেছে, বর্তমানে আইন না থাকায় ইসি গঠনে প্রেসিডেন্ট সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করে থাকেন। এটাও আইনসিদ্ধ। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করবেন’।
সংবিধানের বিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট সবসময় সিইসি ও ইসি নিয়োগ দিলেও গত ২০১২ সালে কমিশন হয় সার্চ কমিটির মাধ্যমে। ওই সময় প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট। নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার প্রেসিডেন্টে সংবিধানে বলা আছে, একটি আইনের অধীনে তিনি এই নিয়োগ দেবেন। সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন ঠিক করে দেবে না, তারা প্রেসিডেন্টেকে সহায়তা করতে কিছু নাম বাছাই করে দেবে। প্রেসিডেন্টে তা থেকে নিয়োগ দেবেন। স্বাধীনতার পর ১২ জন সিইসি ও ২৭ জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পেয়েছেন।
গত সময়ের মতো এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য আগামী মাসে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। এরপরে গঠন হবে নতুন নির্বাচন কমিশন। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বর্তমানে ইসি গঠন নিয়েই আলাপ-আলোচনা চলছে। বিশেষ করে কোন্ প্রক্রিয়ায় ইসি গঠন হবে সেটি আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনের মাধ্যমে না গত দুই মেয়াদের মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমেই সেটি নিয়েও জোর আলোচনা চলছে। বিভিন্ন দলের নেতারা ইসি গঠন নিয়ে মতামত দিচ্ছেন। আবার দেশের ৫১ নাগরিক ইতোমধ্যেই সবার সঙ্গে কথা বলে সব রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যাক্তিকে সিইসি নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও বর্তমান সিইসি নরুল হুদা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। নির্বাচন কমিশনের ইমেজ পুনরুদ্ধারে নিরপেক্ষ ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে ইসি গঠন করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইনকিলাবকে বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এবারও সবরকম গ্রহণযোগ্য পন্থায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। গতবারও প্রেসিডেন্ট একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন। সার্চ কমিটি গঠন করার পর সেখানে বিএনপির প্রতিনিধি ছিল। তাদেরও কিন্তু এখন একজন আছে। এবারও সবরকম গ্রহণযোগ্য পন্থায় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপি এখন ইসি গঠনের বিষয়ে ভাবছে না। তবে আগের পদ্ধতি অনুসরণ করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা এ বিষয়ে সুর্নিষ্ট প্রস্তাব দিয়ে প্রেসিডেন্টকে চিঠি দেব। বর্তমানে বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচন কিভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যায় সেই বিষয়েই ভাবছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে ২০১২ সালে তৎকালীন সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান একটি সার্চ কমিটি গঠন করেন। তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেন নির্বাচন কমিশন। এরপরে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেন। তবে ২০১২ সালে চার সদস্যের সার্চ কমিটির পরিবর্তে ছয় সদস্যের গঠন করা হয়।
গত ২০১২ সালে নতুন ইসি গঠনের আগে প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেন, গঠন করা হয় সার্চ কমিটি। সে সময় সার্চ কমিটির আহ্বানে আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি দল নতুন কমিশনের জন্য তাদের পছন্দের ব্যক্তির নামের তালিকা দিলেও বিএনপি দেয়নি। পরবর্তীতে নতুন ইসি গঠন প্রেসিডেন্ট ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন। অধিকাংশ দলের সুপারিশ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ইসি গঠনের সুপারিশ তৈরির জন্য ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য ১০ জনের নাম সুপারিশ করার সময়সীমা দেয়া হয় সার্চ কমিটিকে।
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করার পরে ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের হাতে সেই তালিকা তুলে দেয় সার্চ কমিটি। এরপরে ওইদিন নতুন ইসি গঠন করেন প্রেসিডেন্ট। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন সিইসি কে এম নুরুল হুদাসহ নতুন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদস্যরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন এ কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। সেই হিসেবে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। তাদের জায়গায় সার্চ কমিটির সুপারিশে নতুন ইসি গঠন করা হবে। আপাতত দেশের রাজনৈতিক দলগুলো জানুয়ারিতে গঠন করতে যাওয়া সার্চ কমিটির দিকেই নজর রাখছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।