পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নয় বছরেও শেষ হয়নি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অধীনে চার বছরের ফাজিল (স্নাতক)। এক শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা শেষ হতে দেড় থেকে দুই বছর সময় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে মূল্যবান পাঁচ বছরের অধিক সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে অনেক শিক্ষার্থীর চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু চাকরিতে আবেদন করতে পারছে না।
জানা যায়, ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিল (স্নাতক) চালু হয়। তখন থেকে ইবির অধীনে সারাদেশের ৩১টি মাদরাসায় শিক্ষার্থীরা ফাজিল (স্নাতক) কোর্সে ভর্তি হন। চার বছর মেয়াদি এই কোর্সের ৪ হাজার ১শ’ মার্কের ওপর পরীক্ষা দেন তারা। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু করে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট পাঁচটি বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনটি বর্ষ চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছে। কিন্তু ফাজিল (স্নাতক) সম্মান ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষ-২০১৭ ও ১৮ সালের চূড়ান্ত পরীক্ষা এখনো সম্পন্ন হয়নি। এই হিসাবে ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নয় বছরেও সম্পন্ন করতে পারেনি। দীর্ঘদিন ধরে এসব পরীক্ষা নেয়ার আশ্বাস দিলেও সঠিক সময়ে কোন পরীক্ষা নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ৩১টি মাদরাসার সবগুলোতে পাঁচটি সাবজেক্ট দেয়া হয়নি। কিছু মাদরাসায় দুই একটি করে সাবজেক্ট দেয়া হয়েছে। আবার যে সব মাদরাসায় সব সাবজেক্ট দেয়া হয়েছে সেখানে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এভাবে চলতে থাকলে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বড় ধরণের সেশনজটে আটকে থাকবে। জয়পুরহাট মাদরাসার ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আল-কোরআন বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম বলেন, নয় বছরেও আমরা পরীক্ষা শেষ করতে পারছি না। ফাইনাল পরীক্ষা কবে হবে তার কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে রেজাল্ট দিতে আরো ৬ মাস কখনো আবার এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, এই সমস্যার জন্য দায়ী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান ফাজিলে সময় মতো পরীক্ষা হচ্ছে, দ্রুত রেজাল্ট হচ্ছে এবং তারা সেশনজট মুক্ত।
ঢাকা তা›মীরুল মিল্লাত মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মুফতী মুহাম্মাদ আবু ইউসুফ খান বলেন, করোনাকালীন সময় দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরও বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলাতে পরীক্ষা নিচ্ছে। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিল পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে কোন পরিকল্পনা দেখি না। তারা ইচ্ছা করলে পরীক্ষা নিতে পারেন। তাদের জন্য ছাত্ররা এভাবে সেশনজটে আটকা পড়ে গেছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান ইবির অধীনে ফাজিল ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ দুটি সেশন রয়েছে। ইতোমধ্যে সেশন দুটি একসঙ্গে করা হয়েছে। আমরা দ্রুত তাদের পরীক্ষা নেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। ভিসি স্যার ক্যাম্পাসে আসলে তার থেকে অনুমতি নিয়েই আমরা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করব।
ইবি প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয় আমার কিছু জানা নেই। তাই আমি কোন মন্তব্য করতে পারছি না। বিষয়টা আমি জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ইবি ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুস সালাম বলেন, এ বিষয় আমাকে আগে অবহিত করা হলে আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকে জানিয়েছিলাম কিন্তু তিনি আমাকে কি জানিয়েছিলেন সেটা আমার মনে নেই। তাছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে গিয়ে টানাহেঁচড়া করতে হচ্ছে। পরবর্তীতে অবস্থা অনুকূলে আসলে বিষয়টা দেখা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।