Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাপ বাড়ছে ডলারে

অর্থনীতির চাকা সচলের উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

গতিশীল হতে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাত। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য ফের চাঙ্গা হয়ে উঠছে। বাড়ছে আমদানি-রফতানি। ব্যাংকগুলোতে বেড়েছে ডলারের চাহিদা। করোনালকডাউনের কারণে গত বছর উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে নীরব থাকলেও এবার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত মিলেছে।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন প্রান্তিকে দেশি-বিদেশি ১৮৪টি শিল্প ইউনিট স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড (বিডা)। গত বছর একই সময়ে নিবন্ধিত হয়েছিল মাত্র ৪৬টি প্রতিষ্ঠান।
বিডার বিনিয়োগ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৮৪টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ১৪ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ হাজার ৪৪৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা বেশি। ধারণা করা যাচ্ছে, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৪০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুন শেষে আমদানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৫ শতাংশ। আগস্ট শেষে রফতানি প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে অনেক ব্যাংকের কাছেই পর্যাপ্ত ডলার নেই। ডলারের চাহিদা মেটাতে ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কথায়, গত এক মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাড়ে ৩৬ কোটি ডলার বিক্রি করেছে ব্যাংকগুলোর কাছে। বিপরীতে বাজার থেকে প্রায় তিন হাজার ১০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, খাদ্যপণ্য আমদানি বেড়েছে। টিকা আনতেও টাকা লাগছে। তবে ভয়ের কারণ নেই, কারণ রফতানি বেড়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, দুমাস ধরে রেমিট্যান্স কিছুটা কমলেও রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। তাই ডলারের ওপর চাপ নেই।
এদিকে বাজারে অতিরিক্ত তারল্য নিয়ন্ত্রণে চলতি সেপ্টেম্বরেও বাজার থেকে টাকা তুলবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৭, ১৪ ও ৩০ দিন মেয়াদি বিলের মাধ্যমে এ টাকা তোলা হবে। চলতি মাসের প্রথম নিলাম অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল রোববার। ওইদিন ৭ ও ১৪ দিন মেয়াদি বিলের নিলামের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মাসে বাজার থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা তোলা হয়।
দীর্ঘ আড়াই বছর বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম বন্ধ থাকার পর আগস্টে বিলের মাধ্যমে টাকা তোলা হয়। গত মাসে ৭, ১৪ ও ৩০ দিন মেয়াদি বিলের মাধ্যমে মোট ১৯ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা তোলা হয়। সর্বশেষ ৩১ আগস্ট ৩০ দিন মেয়াদি বিলের মাধ্যমে তিন হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা নেওয়া হয়। যেখানে সুদহার ছিল এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।
আগস্টের আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম হয়। নামমাত্র সুদে ওইদিন একটি ব্যাংক মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ সুদে ৭ দিনের জন্য ১৫০ কোটি টাকা রেখেছিল। এরপর থেকে নিলাম বন্ধ রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধিতে বেড়েছে এর বিনিময় হার। বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। গত বুধবারও ৬ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদিন বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা ২০ পয়সা। এর বিপরীতে বাজার থেকে ৫১১ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ৭৯২ কোটি ২০ লাখ ডলার কিনে নেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক গত জানুয়ারিতে ৩ কোটি ডলার বিক্রি করেছিল। গত ২৪ জুন বিক্রি করেছিল ৫০ লাখ ডলার। জুনের পর গত ১৯ আগস্ট একসঙ্গে সাত ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হয় ৫ কোটি ডলার। গত বুধবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, আমদানি ও রফতানি বাড়লেও রেমিট্যান্সের প্রবাহ কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮১ কোটি ডলার। গত বছরের এ মাসে এসেছিল ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। এ হিসাবে আগস্টে ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, জুন শেষে আমদানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। আগস্টে ৩৩৮ কোটি ডলারের (২৮ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা) পণ্য রফতানি হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডলার

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ ডিসেম্বর, ২০২২
১৯ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ