পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার লাশ নেই : জিয়া সরাসরি যুদ্ধ করেছেন প্রমাণ নেই
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বলে পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, আমি শুধু এইটুকু চাই, যারা ষড়যন্ত্রকারী, চক্রান্তকারী, যে উদ্দেশ্য নিয়ে জাতির পিতাকে ১৫ আগস্ট হত্যা করেছে, তাদের উদ্দেশ্য তো ছিল বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন ব্যর্থ হোক, স্বাধীনতার আদর্শ ধ্বংস হয়ে যাক, সেটাই করতে দেব না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর তারা ইতিহাস বিকৃত করেছিল। আমার দেখা নয়া চীন, কারাগারের রোজনামচা, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, ১৪ খÐেু এসবির গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকেই সত্যিকারের রিপোর্ট বের হয়ে আসছে।
তিনি গতকাল গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে স¤প্রতি সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপি (পুলিশের সঙ্গে) সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। বিএনপি কি জানে না যে, সেখানে জিয়ার কবর বা কবরে জিয়ার লাশ নেই? যদি তাই হয়, তাহলে তারা এই নাটক কেন করে? খালেদা জিয়া তা ভাল করেই জানেন। খালেদা জিয়া অথবা তারেক জিয়া জিয়াউর রহমানের লাশ দেখেছিলেন কিনা প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাস্তবতা হলো বুলেটে জর্জরিত লাশও সহজেই শনাক্ত করা যেত। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে যে বাক্সের মধ্যে লাশ আনা হয়েছিল সে বাক্সের মধ্যে কেউ জিয়ার লাশ দেখতে পায়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সেই সময় এইচ এম এরশাদের কাছ থেকে শুনেছেন যে, বাক্সের মধ্যে যে লাশটি ছিল তা সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিল। কিন্তু জিয়া সে সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর প্রেসিডেন্ট কখনো সামরিক পোশাকে থাকেন না। তিনি জানতে চান, বিএনপির নেতা-কর্মীরা কি জানেন না যে, প্রেসিডেন্ট সামরিক পোশাক পরিধান করেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা মনে করেছিল যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে কিছু স্থানীয় সহযোগিদের সহায়তায় হত্যা করতে পারলেই দেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ হয়ে যাবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান দেশের কোথাও কখনও সরাসরি যুদ্ধ করেননি এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে জিয়া খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতার উৎস ছিলেন বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান জেলের ভেতর জাতীয় চারনেতা হত্যার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানকে দিয়ে জোর করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করান চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা প্রথমে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা করলেও, পরে মনে করেছিল যে একজন সামরিক বাহিনীর কেউ ঘোষণা দিলে যুদ্ধ হচ্ছে এমনটা মনে হবে। তখন জিয়াউর রহমানকে জোর করে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিয়ে এসে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করানো হয়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। তিনিই সীমিত সম্পদ দিয়ে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এনেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীরা খাদ্য না থাকা, মুদ্রা জমা না থাকা ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা না থাকা দেশটিকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চেয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা প্রমাণ করতে চেয়েছিল যে, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা অর্জন করা ভুল ছিল এবং সেজন্যই দেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পরপরই ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল। তিনি বলেন, সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে তারা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রতিবন্ধী নারী বাসন্তীকে মাছ ধরার জাল পরিয়ে বিশ্বব্যাপী তার সেই ছবি প্রচার করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সেই সময় মাছ ধরার একটি জালের দাম ছিল ১৫০ টাকা, আর একটি শাড়ীর দাম ছিল ৬ থেকে ৭ টাকা। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার জন্য যারা সপ্তম নৌবহর পাঠাতে চেয়েছিল তারাই ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ প্রমাণ করতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকার দেশের ও দেশের মানুষের জন্যই কিছুই করেনি।
তিনি বলেন, তারা তিন জনই তার মধ্যে জিয়া অন্যতম যিনি দেশে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি করেছিলেন এবং দেশকে চিরতরে ধ্বংস করে দেয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মেধাবীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় জিয়াউর রহমান তার শাসনামলে রাতে কারফিউ জারি থাকা সত্তে¡ও গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনিই দেশে ভোট জালিয়াতি শুরু করেছিলেন এবং বার বার সংবিধান লঙ্ঘণ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার অপশাসনের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার দেশকে যে জায়গায় এনেছিলেন সেখান থেকে খারাপ অবস্থার দিকে চলে গিয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা ছিল না।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল ও উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন ও উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, দক্ষিণের দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।
সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।