পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত এবং উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে বলেছেন, এর মাধ্যমেই আমাদের তাঁর রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা এদেশের মানুষের জন্য রক্ত দিয়ে আমাদের রক্ত ঋণে আবদ্ধ করে গেছেন। আমাদেরও একটাই লক্ষ্য তাঁর এই রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত আলোচনা সভায় পূর্ব ধারণকৃত এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন। ‘শোক থেকে শক্তি, শোক থেকে জাগরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সব হারিয়েছি। আমি জানি হারানোর বেদনা খুব কষ্টকর। সেই কষ্ট সহ্য করে একটা লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই লক্ষ্য। ইনশাআল্লাহ এই বাংলাদেশকে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো। যে দেশের স্বপ্ন আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন ইনশাআল্লাহ বাস্তবায়িত হবে।
প্রধানমন্ত্রী ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, জাতীয় শোক দিবস আমাদের জন্য শোকের দিন, কষ্টের দিন। কিন্তু বাঙালি জাতির জন্য সব হারানোর দিন। তিনি অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে যারা শাহাদৎবরণ করেছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও দেশবাসীর কাছে তাদের জন্য দোয়া চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। জাতির পিতার আহŸানে সাড়া দিয়ে এ দেশের মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিল। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা দু’লাখ মা-বোনকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
আজীবন শোষণ-বঞ্চণার শিকার এ দেশের নিরন্ন দুঃখী জনগণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা শোষণ-বঞ্চণা, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার তাদের মুক্তির জন্যই জাতির পিতা তাঁর জীবনটাকে উৎসর্গ করেছিলেন। পরাধীনতার নাগপাশ থেকে বাংলার মানুষকে মুক্তি দিয়ে একটা উন্নত জীবন যাতে তারা পায় সেটাই জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য ছিল।
তিনি চেয়েছিলেন এ দেশের ক্ষুধার্ত বুভ‚ক্ষ নর-নারী, যাদের পরনে ছিন্ন কাপড়, যারা শিক্ষার আলো ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত তাদের জীবনটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা। তাই নিজের জীবনটাকে তিনি উৎসর্গ করেছিলেন বাংলার মানুষের কল্যাণের জন্য, তাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। ক্ষুধা-দারিদ্র থেকে মুক্তি পেয়ে বাঙ্গালী জাতি যেন বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। কিন্তু জাতির পিতা নিজের জীবনে কিছুই চাননি, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা স্বাধীনতা চায়নি, বাঙালির বিজয় চায়নি তারাই নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করে এবং কিছু লোকতো বেইমানীও করে, মুনাফেকী করে-এটাই হচ্ছে আমাদের জন্য সব থেকে দুর্ভাগ্যের। তিনি বলেন, তিনি এবং তাঁর ছোট বোন (শেখ রেহানা) বিদেশে থাকায় ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক অধ্যায় থেকে প্রাণে বেঁচে গেলেও এদেশে ফিরে আসার অধিকার হারান। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আসতে (দেশে) দেয়নি। পরবাসে জীবন কাটাতে হয়েছিল রিফিউজি হিসেবে, নিজেদের পরিচয়ও পরিবর্তন করে।
১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর একরকম জোর করে দেশের ফিরে আসার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৮১ সালে দেশে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছিলাম। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েকে রেহানার কাছে রেখে আমি চলে আসি বাংলাদেশে।
তিনি বলেন, ফিরে আসি একটাই লক্ষ্য নিয়ে- যে আদর্শের জন্য আমার বাবা সংগ্রাম করে গেছেন। যে দেশের মানুষের মুক্তির জন্য জাতির পিতা রক্ত দিয়ে গেছেন। রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা’ আমার ভাইয়েরা, লাখো শহীদ রক্ত দিয়েছেন। সেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় মুজিববর্ষে দেশের সকল ভ‚মিহীন-গৃহহীনকে ঘর-বাড়ি করার মাধ্যমে ঠিকানা গড়ে দেওয়ায় তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এদেশের একটি মানুষও আর দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত থাকবে না এবং একটি মানুষও ভ‚মিহীন থাকবে না। জাতির পিতা ’গুচ্ছগ্রাম’ কর্মসূচির মাধ্যমে খাসজমি বিতরণ এবং দরিদ্র জনগণকে ঘর তৈরি করে দেয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন- আমরা তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বাংলাদেশে আর একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। কাজেই আমরা গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান (ইউজিসি) অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।