পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগস্ট বাঙালির জীবনে শোকাহত ও অভিশপ্ত মাস। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট। সুবেহ সাদিকের সময় যখন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিজ বাসভবনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে বুলেটের বৃষ্টিতে ঘাতকরা ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল, তখন যে বৃষ্টি ঝরছিল, তা যেন ছিল প্রকৃতিরই অশ্রুপাত। ভেজা বাতাস কেঁদেছে সমগ্র বাংলায়। ঘাতকদের উদ্যত অস্ত্রের সামনে ভীতসন্ত্রস্ত বাংলাদেশ বিহ্বল হয়ে পড়েছিল শোকে আর অভাবিত ঘটনার আকস্মিকতায়। কাল থেকে কালান্তরে জ্বলবে এ শোকের আগুন। বিশাল হৃদয়ের যে মানুষটিকে কারাগারে বন্দী রেখেও পাকিস্তানি হানাদাররা স্পর্শ করার সাহস দেখাতে পারেনি, অথচ স্বাধীন বাংলার মাটিতে নির্মমভাবে সপরিবারে তাকে জীবন দিতে হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে গোটা জাতি।
সোমবার (১৬ আগস্ট) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলার স্বাধীনতা ছাড়া আমাদের কল্পনার আবর্তে আর কোনো কিছুই তখন দোলা দিত না। স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকার, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্তরণ— এর সমস্ত কিছুর অগ্রভাগে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তিনি ছিলেন আন্দোলনের স্থপতি। ছাত্র অধিকার আন্দোলন, সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, সত্তরের সাধারণ নির্বাচন এবং একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার পথে তিনি বরণ করেন ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাবাসসহ অবর্ণনীয় জুলুম—নির্যাতন। দুঃসময় ও হতাশার দেয়াল ভেঙে শোষিত, বঞ্চিত বাঙালি জাতিকে তিনি উপহার দেন একটি ঠিকানা— লাল সবুজ পতাকা খচিত একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। যার নামকরণ তিনি নিজেই করেছিলেন।
তিনি বলেন, জাতিকে এ দুর্লভ উপহার দানের মাধ্যমে তিনি ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব উপাধিতে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব থেকে পরিণত হয়েছেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমাণ এবং ভয়াবহতা ছিল অবর্ণনীয়। তা অল্প কথায় বলে শেষ করা যাবে না। পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করে পাকিস্তানিরা বাংলাদেশকে এক ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, সারাদেশের মানুষজনের হাতে তখন মাত্র চার কোটি টাকার মতো ছিল। বৈদেশিক মুদ্রার কোনো মজুদ বাংলাদেশ ব্যাংকে ছিল না। মাত্র ১০ হাজারের মতো নথি দিয়ে শুরু হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয়। বঙ্গবন্ধু যেদিন টেলিফোনে কথা বলতে শুরু করেন সেদিন ঢাকা জেলা থেকে মাত্র তিনটি জেলার সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্দেশে আল-বদরের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের সব টাকা ১৬ ডিসেম্বর সকালে রাস্তায় এনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করে ফেলেছিল। এমন একটি বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। একটি ধ্বংসস্তূপের ছাই থেকে শুরু করেন বঙ্গবন্ধু, তার নেওয়া সেসব যুগান্তকারী পদক্ষেপের সুফল বাংলাদেশের মানুষ ভোগ করে চলেছে। যার ভিত্তি ভূমির ওপর আজ দাঁড়িয়ে আছে দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতি। সোনার বাংলা গঠনের মজবুত ভিত বঙ্গবন্ধুর হাতেই তৈরি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অতুলনীয় বিশাল ব্যক্তিত্ব। ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড জঘন্যতম হত্যাকান্ড যার নজির ইতিহাসে বিরল, ঐ কালরাতে শিশু অন্তঃসত্ত্বা নারীকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, পাশাপাশি তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের আর্থিক খাতগুলোর জন্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছরে আমাদের আর্থিক খাতের প্রায় প্রতিটি সেক্টরে যে কর্মযজ্ঞ শুরু করেন তা অকল্পনীয়। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। বীমা খাতেও বঙ্গবন্ধুর অবদান শুরু থেকেই। এই বীমা খাতকেও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে সামনে এগিয়ে যাবো।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।