Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোলার পার্ক প্রকল্প থেকে নিজের নাম বাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওর্য়াক সম্প্রসারণসহ একনেকে ৯ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

সোলার পার্ক প্রকল্প থেকে নিজের নাম বাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে ‘শেখ হাসিনা সোলার পার্ক, জামালপুর-এ মাদারগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমার নাম বাদ দিতে হবে। কিন্তুু নামটি রাখার জন্য পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক সদস্য (সচিব) অনুরোধ করেন। তারা বলেছেন, এটা আইকনিক প্রকল্প। ১০০ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশে এটাই প্রথম। তাই এই প্রকল্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নামটা থাকা উচিত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি রাজি হননি। একনেক শেষে ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ব্রিফিং-এ পরিকল্পনামন্ত্রী জানান প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের নতুন নাম দিয়েছেন ‘সোলারপার্ক, মাদারগঞ্জ, জামালপুর’। এছাড়া পর্যায়ক্রমে সারা দেশে জরার্জীর্ণ ও বেইলি সেতু ভেঙ্গে নতুন সেতু করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জরাজীর্ণ অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলী ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন (রংপুর জোন) শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মারক সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, যেসব দেশের নাম আমরা জানিনা কিন্তু সেসব দেশে স্মারক থাকতে পারে। যেমন পূর্ব ইউরোপের কিছু দেশ আছে, সেসব দেশ থেকেও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক খুঁজে আনতে হবে। এদিকে কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত দুধকুমর নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দুধকুমার নদী ড্রেজিং ভালভাবে করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ড্রেজিংসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে।
এদিকে সভায় গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওর্য়াক সম্প্রসারণসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৬৬০ কোটি ২৯ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ১৩৭ কোটি ৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
গতকালের বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিফ্রিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রি ড. শামসুল আলম।
এ সময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব জয়নুল বারী, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবং আইএমইডি’র সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিং এ জানানো হয়, গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ২০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ১১৪ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার তহবিল থেকে ৬০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। প্রকল্পটি চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, যেহেতু বেসরকারি খাতে মোবাইল কোম্পানি প্রায়ই সব গুলো। সেখানে মাত্র একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই টেলিটকে কল রেটও অনেক কম। ফলে অনেক সময় লস দিতে হয়। তবে জনস্বার্থে লস দিয়ে হলেও সরকার এটা পরিচালনা করেছে। সবকিছু বেসরকারি খাতের উপর ছেড়ে দিলে হয় না। সরকারেরও অংশগ্রহণ জরুরী।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্প গুলো হচ্ছে-জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলী ও অন্যান্য ঝুঁকিপুর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এছাড়া বাগেরহাট-রামপাল-মংলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন, ব্যয় হবে ৪৬৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। দেশি-বিদেশী উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। চর ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-৪ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন, ব্যয় হবে ১ হাজার ৯০ কোটি টাকা। পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্পে হবে ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন, ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। উপক‚লীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, ব্যয় হবে ৫৯ কোটি ৯ লাখ টাকা। জামালপুর এর মাদারগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।##



 

Show all comments
  • রুহুল আমীন যাক্কার ১১ আগস্ট, ২০২১, ৯:৩১ এএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী তেলবাজি পছন্দ করেননা। পদ্মা সেতুর নামও প্রধানমন্ত্রীর নামে দিতে ওয়েল মিলের মালিকরা প্রয়াস পেয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি দেননি। এমনিতেই তেলের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এসব তৈলবাজদের বোল্ড আউট না করলে কী পরিণতি হবে ; আল্লাহই ভালো জানেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ