পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরো ২০৪ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপরেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীলরা নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে নাগরিকের বাসায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছেন।
এতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ২০৪ জন। এর মধ্যে ঢাকাতেই ১৯৪ জন। আর ঢাকার বাইরের রয়েছেন ১০ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৯৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৯৫৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে সর্বমোট ৩৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট চার হাজার ৩১৯ জন। একই সময়ে তাদের মধ্য থেকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়প্রাপ্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১২ জন রোগী। পাশাপাশি রোগতত্ত¡ রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ১০টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। আইইডিসিআর এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর পর্যালোচনা সমাপ্ত করেনি এবং কোনো মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত কারণে বলে নিশ্চিত করেনি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, দেশে চলতি বছরে গতকাল শনিবার পর্যন্ত চার হাজার ১১৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি আগস্ট মাসে গতকাল পর্যন্ত প্রথম সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৬১ জন। জুলাই মাসে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অন্তত ২ হাজার ২৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া, জুন মাসে ২৭২ জন ও মে মাসে ৪৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
জানতে চাইলে কীটতত্ত¡বিদ ও বাংলাদেশ প্রাণীবিজ্ঞান সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে এডিস মশা ঠিকঠাক মতো দমন করা হয়নি। এ কারণেই এ বছর ডেঙ্গুর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। নিজেদের কাজ সঠিকভাবে না করে সিটি কর্পোরেশন জনগণকে জরিমানা করছে। এতে বাস্তবে কোনো লাভ হবে না। অথচ সিটি কর্পোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যেসব উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল তার কোনোটাই তেমনভাবে নেওয়া হয়নি। তাই ডেঙ্গু এক ধরনের মহামারি আকার ধারণ করেছে। এই সময়ে অ্যাডাল্ট মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু সেটি তেমনভাবে নেওয়া হচ্ছে না। কোন কোন জায়গায় ডেঙ্গুর ক্লাস্টার আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। কীটতত্ত¡বিদ তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন অ্যাডাল্ট মশা মারা। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কোনো হাত নেই। এই কাজটি অবশ্যই সিটি কর্পোরেশনকেই করতে হবে। অথচ সিটি কর্পোরেশন যে ফগিং করে সেটি ত্রুটিপূর্ণ। তাছাড়া তাদের লোকবলের দক্ষতা নিয়েও সন্দেহ আছে। তাদের অধিকাংশ কাজ ত্রুটিপূর্ণ। সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব কোনো কীটতত্ত¡বিদ নেই। আমাদের কাছে মাঝে মধ্যে কিছু পরামর্শ নেয়। কিন্তু, আমরা যা বলি তারা তা শোনে না। সিটি কর্পোরেশনকে দক্ষ জনবল দিয়ে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে, তবেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এসব অভিযান, জরিমানা করে তেমন কোনো লাভ হবে না।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালের শুরু থেকেই উড়ন্ত মশা মারার ওষুধ ছিটানো বন্ধ থাকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি)। সংস্থাটির ভান্ডার বিভাগে আমদানি করা ওষুধ থাকলেও সেটি ফরমুলেশন (মিক্সিং) করতে না পারায় এ সমস্যা দেখা দেয়। তবে ওষুধ ফরমুলেশনের জন্য ১০ মাসে চার দফা টেন্ডার আহ্বান করে সংস্থাটি। এই দীর্ঘসময় মশার ওষুধ ছিল না ডিএসসিসিতে। ডিএনসিসির অবস্থাও ছিল অভিন্ন। তারা দীর্ঘ দিন মশা নির্ধনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
তবে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কিউল্যাক্স মশা বেড়েছে চারগুণ। তখনও তথ্যটি আমলে নেয়নি দুই সিটি কর্পোরেশন। এতেও হু হু করে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু। কীটতত্ত¡বিদরা জুন থেকে ডেঙ্গু বাড়ার পূর্বাভাস দিয়ে এলেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি।
জানতে চাইলে কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, জুনের শুরু থেকে আমরা বলে আসছি ডেঙ্গু বাড়বে। তখন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কারণে এই প্রাদুর্ভাব। এখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সিটি কর্পোরেশনের অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কমিটি করতে হবে। প্রতিটি কমিটিতে একজন লার্ভিসাইডিং স্প্রেম্যান ও একজন অ্যাডাল্টিসাইডিং স্প্রেম্যান দিতে হবে। এদের সঙ্গে একজন ক্লিনার রাখতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।