পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও আশঙ্কাজনক রূপ নিতে পারে এমন উদ্বেগের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গতকাল বুধবার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এই উদ্বেগের কথা জানান।
তিনি বলেন, বর্ষাকালে আমরা গত কয়েক বছর ধরেই দেখেছি এডিসবাহিত যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি, সেটি সময় সময় অত্যন্ত আশঙ্কাজনক রূপ নিয়েছে। ২০১৯ সালে আমরা দেখেছি, ডেঙ্গু মহামারি আমাদের কীভাবে আক্রান্ত করেছিল। ২০২১ সালে এসে একই রকম একটি পরিস্থিতির মুখে আমরা দাঁড়িয়েছি। আমরা মনে করি, দ্রæত ব্যবস্থা নিলে সেটি মোকাবিলা করতে পারব। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৭ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গু সংক্রমণের চিত্র তুলে ধরে অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ৩ আগস্ট সকাল ৮টার পর্যন্ত ঢাকায় ২৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ১৬ জন ছিলেন ঢাকার বাইরের। এই সময় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এক হাজার ৭২ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ২৫ জন রোগী ছিলেন। অন্যান্য বিভাগে মোট ভর্তি ছিলেন ৪৭ জন রোগী।
অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৪৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ২ হাজার ৩৭০ জন। জুলাই মাসে ২৮৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, আগস্টের তিন দিনে ৭৮৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৭ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীতেই রয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায় ২২১ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আগস্টে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত জুলাই মাসেই ভর্তি হয়েছিলেন ২ হাজার ২৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী। তার আগের মাসে এই সংখ্যা ছিল ২৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাইরে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৬ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৮ জন। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে মোট ভর্তি রোগী আছেন ১ হাজার ৪ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে ভর্তি আছেন ৫৪ জন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৬৮৩ জন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ২ হাজার ৬১৭ জন। এ পর্যন্ত রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ৮টি মৃত্যুর তথ্য প্রেরিত হয়েছে।
এদিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ১৬ মাসেও আলোর মুখ দেখেনি বিচার বিভাগীয় সুপারিশ বলে জানা গেছে। ২০১৯ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। প্রতিদিনই বাড়ছিল আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ঠিক তখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমুটো) হয়ে রুল জারি করেন। রুল শুনানির ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের মার্চে হাইকোর্ট ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বিস্তারে দায়ীদের শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণে করণীয় ঠিক করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ১০ দফা সুপারিশসহ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে। এরপর ১৬ মাস অতিবাহিত হলেও ওই প্রতিবেদনের ওপর কোনো নির্দেশনা আসেনি। উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রতিবেদনটি এখনও ফাইলবন্দি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিচার বিভাগীয় কমিটির সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করলে বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ এতটা বাড়ত না। এ অবস্থায় বিচার বিভাগীয় কমিটির সুপারিশের আলোকে হাইকোর্ট কোনো নির্দেশনা দিলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তা ইতিবাচক ভ‚মিকা রাখবে। তাই জরুরিভিত্তিতে বিষয়টি শুনানির উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
ওই সময়ে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চে দায়িত্ব পালনকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, ২০২০ সালের ৯ মার্চ ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বিস্তারে দায়ীদের শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণে বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদনটি আদালতে দাখিল করা হয়। এর কিছুদিন পরেই করোনার কারণে আদালত বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বতঃপ্রণোাদিত আদেশ প্রদানকারী সিনিয়র বিচারপতি তারিক উল হাকিম পদোন্নতি পেয়ে আপিল বিভাগে চলে যান। ফলে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চটি ভেঙে যায়। এ কারণে পরে বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদনের ওপর আর শুনানি হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।