Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জয়কে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুক্তিযুদ্ধকালীন বন্দিদশায় তার জন্ম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া নামে নামকরণ, বৈরী পরিবেশে তার শিক্ষা, জয়ের পরামর্শ ও অনুপ্রেরণায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা- সার্বিক বিষয় উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিচারণে। করোনা মহামারির কারণে জন্মদিনে মা-সন্তান একত্রিত হতে না পারার কষ্টের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
গতকাল জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন এবং জনপ্রশাসন পদক ২০২০ ও ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় সন্তান জয়কে নিয়ে তিনি স্মৃতিচারণ করেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অংশ নেন তিনি। ২৭ জুলাই সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন। ১৯৭১ সালের এদিন তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। যেভাবে শুরু হলো- ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা, সেই গল্প শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

‘২৭ তারিখ আমাদের জন্য বিশেষ দিন’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটিও আমার বিশেষ দিন। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ, পাকিস্তান দিবস। সেদিন বাংলাদেশের কোথাও পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করেনি। (ধানমন্ডি) ৩২ নম্বরের বাড়িতে আমার বাবা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করলেন। তখন আমি কেবল সন্তানসম্ভবা। আমি সাধারণত বাবার হাত-পায়ের নখ কেটে দিতাম, সেটা আমার নিয়মিত কাজ ছিল। সেদিন এক মগ পানি নিয়ে বাবার নখ কাটতে বসলাম। সেদিন বাবা বললেন, হ্যাঁ, ভালোভাবে কেটে দে, কারণ পরে আর সুযোগ পাবি কি-না! তবে তোর ছেলে হবে, সে ছেলে স্বাধীন বাংলাদেশে হবে, তার নাম ‘জয়’ রাখবি।
২৫ মার্চের ভয়াল রাতের ঘটনা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্দি অবস্থায় মেডিকেলে জয়ের জন্ম হয়। পরে বাচ্চা নিয়ে কারাগারে আসলে একজন পাকিস্তান সেনা অফিসার জিজ্ঞেস করে তার নাম কী? আমি বলি জয়। বলে মানে কী? বলি, জয় মানে জয়, ভিক্টরি। তখন এই ছোট্ট শিশুকেও তারা গালি দেয়।

তিনি বলেন, আজ তার (জয়ের) জন্মদিন। ৫০ বছর বয়স হলো জয়ের। এই করোনার কারণে আমরা একসাথে হতে পারলাম না, এটা আরেকটা দুঃখ। আপনারা এই দিনটি স্মরণ করছেন, সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আজকে যেই ডিজিটাল বাংলাদেশে আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। এটা জয়েরই ধারণা, জয়েরই চিন্তা। কারণ, ’৮১ সালে এসে যখন বার বার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করি। তখন বার বার আমাকে গ্রেফতার-গৃহবন্দি করা হয়েছে। তখন বাবার বন্ধু আজিজ সাত্তার কাকা জয় ও পুতুলকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। স্কুল থেকেই জয় কম্পিউটার শিক্ষা নেয়। যখন ছুটিতে আসতো, কম্পিউটার নিয়ে আসতো। জয়ের কাছ থেকেই আমি কম্পিউটার শিখেছি। ’৯১ সালে যখন পার্টির জন্য অনেক দামে কম্পিউটার কিনি, তখনই আমরা আলোচনা করি, কীভাবে দেশে কম্পিউটার শিক্ষা শুরু করা যায়।

তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, জয় আমাকে পরামর্শ দিল কম্পিউটারের ওপর থেকে ট্যাক্স তুলতে হবে, দাম সস্তা করতে হবে। মানুষের কাছে সহজলভ্য করতে হবে, মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাহলেই মানুষ এটা শিখবে। সেভাবেই কিন্তু আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আবার যখন সরকারে আসি, দেখি কেউই এটা ব্যবহার করতো না। আমিই নির্দেশ দেই, সব ফাইল যেন কম্পিউটার কম্পোজ হয়ে আমার কাছে আসে। এখন কিন্তু সে সুফল আমরা ভোগ করছি।
এর আগে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্যেষ্ঠ সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫১তম জন্মদিনে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়: তারুণ্যদীপ্ত গর্বিত পথচলা’ স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এই দ্বিভাষিক গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর বেশকিছু নিবন্ধ, সংবাদচিত্র ও দুর্লভ আলোকচিত্র রয়েছে এই বইয়ে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে উৎসর্গ করা হয়েছে বইটি। ‘সজীব ওয়াজেদ জয়: তারুণ্যদীপ্ত গর্বিত পথচলা’ স্মারকগ্রন্থের প্রচ্ছদ ও গ্রন্থ পরিকল্পনা করেছেন শাহিয়ার খান বর্ণ।
বইটির ইংরেজি সংস্করণের নাম ‘সজীব ওয়াজেদ জয়: আ স্পিরিটেড গ্রেসফুল জার্নি’। ১৬০ পৃষ্ঠার বইটির উপদেষ্টা সম্পাদক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বইটি সম্পাদনা করেছেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। জয়ীতা প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশ করেছেন ইয়াসিন কবীর জয়। ই-বুক আকারেও বইটি পড়া যাচ্ছে।



 

Show all comments
  • Md Ataur Rahman ২৯ জুলাই, ২০২১, ৪:৩৮ এএম says : 0
    Thank,s
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ