Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও ইলিশ শিকারে যেতে পারেনি জেলেরা

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষেও সাগরে ইলিশ শিকারে যেতে পারলেন না পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সাগর সংলগ্ন আলীপুর-মহিপুর মৎস্য বন্দরের ৫ শতাধিক ট্রলারের জেলেরা। গত ২৩ জুলাই রাত ১২টায় ইলিশ শিকারের নির্ধারিত নিষেধাজ্ঞার সময় অতিবাহিত হয়।

জানা গেছে, সামুদ্রিক মাছের বাঁধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষণে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দীর্ঘ ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য বিভাগ। বছর জুড়ে ইলিশের আকাল আর করোনার প্রার্দুভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরে দখিনের জেলেরা। এছাড়া এসময়ে সরকার প্রদেয় অপ্রতুল খাদ্য সহায়তা নিয়েও রয়েছে জেলেদের মধ্যে ক্ষোভ। দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে ধরা পড়বে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ফের প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে আসবে মৎস্য বন্দর আলীপুর মহিপুরের আড়ৎগুলোতে এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সকলের। এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকা বরফকলগুলোও বরফ উৎপাদনের জন্য চালু করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া শুরু হওয়ায় জেলেদের দীর্ঘ ৬৫ দিনের অপেক্ষার মধ্যে নতুন করে কালো ছায়ার প্রভাব পড়েছে।
আলীপুর মৎস্য বন্দরের দুলাল কোম্পানির সত্বাধিকারী মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল জানান, তার এফবি-মামনী-২ ও ৩ নামে দুটি ট্রলার রয়েছে। অবরোধের সময় শেষ হওয়ায় তিনি তার ট্রলার দুটিকে প্রস্তুত করেছিলেন ১৫ দিনের বাজার বরফসহ প্রয়োজনীয় সকল জিনিস দিয়ে। প্রতিটি ট্রলারে কমপক্ষে ২১ জন লোকের প্রয়োজন হয়। প্রতিটি ট্রলারের জন্য ২০০টি বরফক্যানও লোড দেয়া হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল থাকায় তারা সাগরে যেতে পারেননি। এদিকে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় ঘাটেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদেরকে। যার ফলে বাজারসহ অন্য খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
সৈকত ফিসিংয়ের মালিক আসাদুজ্জামান দিদার জানান, গতবছরে সাগরে ইলিশ মাছ কম ধরা পড়ায় অনেক মালিক তাদের ট্রলার বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ বছরে ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে যখন ট্রলার মালিকরা জেলেদের প্রস্তুত করেছেন তাদের প্রয়োজনীয় বাজার সদাই নিয়ে সাগরে মাছ শিকার করতে তখনই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া শুরু হওয়ায় তাদের মধ্যে হতাশার ছাপ দেখা দিয়েছে। প্রতিটি বড় ট্রলারে কমপক্ষে সাড়ে তিন থেকে ৪ লাখ টাকা ব্যয় প্রথম ট্রিপে সাগরে মাছ ধরতে।
কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়তদার ও ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ও লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করায় অবরোধের সময় শেষ হওয়ার পরও সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারেননি ট্রলারগুলো।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, কলাপাড়া উপজেলায় প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রলার ও ১৮ হাজার ৩০৫ জন জেলে তালিকাভুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে কিছু অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা না মেনে সাগরে মাছ শিকারের চেষ্টা চালায়। তাদেরকে ধরতে প্রায়ই অভিযান চলছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় ট্রলারগুলো তাদের প্রয়োজনীয় রসদ নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলেই তারা সাগরে ইলিশ মাছ শিকারে নেমে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ