পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানি দেয়ার জন্য সারা দেশে প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি গবাদিপশু, যার মধ্যে প্রায় ৬২ লাখ ৩৬ হাজার গবাদিপশু হূষ্টপুষ্ট করেছেন দেশের সাত লাখ খামারি। বাকি পশু পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা হয়েছে। তবে এবার কোরবানিতে বিক্রি হতে পারে ৯৯ লাখ ২২ হাজার পশু। এমতবস্থায় সারাদেশে প্রস্তুত থাকা পশুর মধ্যে ২০ লাখ বা প্রায় ১৭ শতাংশ অবিক্রীত থাকতে পারে।
রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে গতকাল সোমবার যে পরিমান পশু বিক্রি হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। আজও প্রচুর সংখ্যক পশু নিয়ে বিক্রেতারা আশায় আছেন। ক্রেতা কম থাকায় গত কয়েকদিনের তুলনায় পশুর দাম অনেকাংশে কমেছে। তারপরেও আজকের মধ্যে সব পশু শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম। অনেক ব্যাপারিকে অবিক্রিত গরু নিয়ে ফিরে যেতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কোরবানিযোগ্য মোট পশুর মধ্যে গরু-মহিষ ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার ও ছাগল-ভেড়া ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার। একদিকে চাহিদা কমে যাওয়া, অন্যদিকে গ্রাম থেকে শহরে পশু আসতে প্রতিবন্ধকতার কারণেই গবাদিপশু অবিক্রীত থাকতে পারে। পাশাপাশি করোনাকালে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হওয়া, বাজার ব্যবস্থাপনায় জটিলতা, বিক্রির শুরুতেই কঠোর বিধিনিষেধের কবলে পড়া, বাজার পর্যন্ত গরু পরিবহন করতে না পারা, বড় শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে পাইকারি ব্যবসায়ী কম যাওয়া, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়াসহ নানা কারণে বিপণন ব্যবস্থায় এবার জটিলতা তৈরি হয়েছে। এজন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা আশঙ্কা করছে, এ বছর ২০ লাখ পশু অবিক্রীত থাকতে পারে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কোরবানির হাটে ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক হাজার গরু এখনও অবিক্রিত রয়ে গেছে। বিক্রেতাদের আকাঙ্খা অনুযায়ী পশু বিক্রি হচ্ছে না। গতকালের তুলনায় অনেক কম দাম চেয়ে গরু বিক্রি করতে পারছেন না বলে বিক্রেতারা জানান। তারা বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় বৃষ্টির কারণে ক্রেতারা হাটে আসতে পারেন নি। আশপাশ থেকে গরু কিনে ফেলেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, গতবারের তুলনায় এবার ক্রেতা কম। করোনার কারণে মানুষের সক্ষমতা কমে গেছে। কুষ্টিয়া থেকে ১৬টি গরু এনেছিলেন বেলাল বেপারি। মাত্র ৬টি গরু বিক্রি করেছেন। বাকি ১০টি গরু নিয়ে এখনও অপেক্ষায় আছেন। বললেন, এখন লাভের চিন্তা বাদ দিয়েছি। আসল দাম বললেই ছেড়ে দেবো। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা কম। তবে তিনি আশাবাদি রাতের মধ্যেই সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেপারি সালাম বলেন, এভাবে দাম পড়ে যাবে ভাবতে পারিনি। এখন আসল দাম পেলেই ছেড়ে দেবো। তিনি জানান, এখনও মাত্র চারটি গরু বিক্রি বাকি আছে। শনিরআখড়া হাটে প্রচুর গরু থাকলেও ক্রেতাও আছে।
রাজধানীর অন্যান্য হাটেও প্রচুর গরু আছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। রামপুরায় আফতাবনগর হাটে এখনও অবিক্রিত গরু আছে প্রচুর। সে তুলনায় ক্রেতা নেই।
জানা গেছে, উৎপাদন সংকট থাকায় কোরবানির আগে বৈধ-অবৈধ পন্থায় শুধু গরুই আমদানি হতো ২০-২৫ লাখ। বাংলাদেশে গরু রফতানি বন্ধ করতে ২০১৪ সালে ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশের পর বৈধ পথে প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে ভারতীয় গরু আমদানি। সংকটকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে বাড়তি পদক্ষেপ নেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কারণে ২০১৬ সালেই কোরবানির পশুর সংখ্যা প্রথমবারের মতো এক কোটি ছাড়িয়ে যায়। ২০১৫ সালে দেশে কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশুর সংখ্যা ছিল ৯৬ লাখ ৩৫ হাজার। ২০১৬ সালে এসে তা দাঁড়ায় ১ কোটি ৪ লাখের বেশি। এরপর প্রতি বছরই বেড়েছে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার। চলতি বছর দেশে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ১৯ লাখ ১৭ হাজারে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. শেখ আজিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, এবারের কোরবানিতে সারা দেশে ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা আশা করছি, কোরবানিযোগ্য সব পশুই বিক্রি হবে। কেননা দেশের খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোরবানির পশু করোনাকালে যাতে সারা দেশে যেতে পারে সেজন্য ট্রেনে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানীর বাজার তদারকি ছাড়াও খামারি ও পশু ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।