Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দম্পতিসহ জাল টাকার ৫ কারিগর গ্রেফতার

ভাড়া বাসায় মিনি কারখানা : ৪৩ লাখ জাল টাকা উদ্ধার : টার্গেট ছিল কোরবানির পশুর হাট

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

রাজধানীতে জাল টাকা বানানোর কারিগর এক দম্পতিসহ ৫ জন গোয়েন্দা পুলিশের জালে ধরা পড়েছে। গত তিন বছর ধরে তারা জাল টাকা তৈরি করে বাজারে ছেড়ে আসছিল। আসন্ন ঈদুল আযহায় কোরবানির পশুর হাটকে টার্গেট করে চক্রটি রাতদিন জাল টাকা বানানোয় ব্যস্ত ছিল। চক্রটি মাসে জাল কোটি টাকা বানাতো। জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশ চক্রের কাছ থেকে এসব তথ্য জানতে পেরেছে।
গ্রেফতারকৃত স্বামী-স্ত্রীর নাম আব্দুর রহমান শেখ ও ফাতেমা বেগম। এক বছর ধরে স্ত্রীসহ আব্দুর রহিম শেখের বসবাস ছিল রাজধানীর বাড্ডার নুরেরচালা সাঈদনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায়। এই দম্পতি ভাড়া বাসার মধ্যেই গড়ে তুলেন জালনোট ছাপানের মিনি কারখানা। তাদের জালিয়াতির কারবারে আরও তিন বন্ধু সহযোগিতা করে আসছিল। মাসে এক কোটি টাকা মূল্যের বেশি জালনোট প্রস্তুত করা হতো এই কারখানায়।
গতকাল সোমবার সকালে অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহমান শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমসহ তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার অপর তিনজন হলেন- গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিন।
নুরেরচালার সাঈদ নগরের একটি সাততলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় অভিযান চালিয়ে এক হাজার টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ৪৩ লাখ টাকা মূল্যের জালনোট, বিপুল পরিমাণ জালনোট তৈরির উপকরণসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে।
ডিএমপির গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ ডিসি মো. মশিউর রহমান বলেন, গত তিন বছর ধরে ওই দম্পতি জালনোট তৈরি করে আসছিল। কেউ যাতে টের না পায় সেজন্য ঘরোয়া পরিবেশে তারা জালনোট বানাতো। গত এক বছর ধরে বাড্ডায় বাসা ভাড়া নিয়ে কারখানা তৈরি করেন রহিম। চক্রের পাঁচ সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে আব্দুর রহিম শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম মূলহোতা। বাকি সদস্যরা আব্দুর রহিমের বন্ধু এবং সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।
তিনি বলেন, চক্রটি আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এসব জালনোট তৈরি করছিলেন। তারা মাসে কোটি কোটি টাকার জালনোট ছাপিয়ে বাজারে ছড়িয়ে দিতেন। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে তাদের কার্যক্রম আরও বেড়ে যায়। গ্রেফতার আব্দুর রহিম শেখ এর আগে হাতিরঝিল এলাকায় ভাড়া বাসায় জালনোটের কারবার করে আসছিল। সেখানে সুবিধা করতে না পারায় এক বছর আগে বাড্ডার নুরেরচালা এলাকায় চলে যাওয়ার কথা জিজ্ঞাসাবাদে ওই দম্পতি স্বীকার করেছেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে ফাতেমা বেগম স্বীকার করেন, ২০১৯ সালে হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জাল টাকার তৈরি করার সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। ওই সময় স্বামী রহিম পালিয়ে যান। এর আগে তারা বেশ কয়েকবার জাল টাকা ও মাদক কেনাবেচায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকা খুচরা এবং পাইকারি বিক্রি করতো। গত তিন বছর ধরে ঈদসহ অন্যান্য উৎসবের আগে জাল টাকা বাজারে ছেড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে কয়েক হাত বদল হয়ে জাল টাকা প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ