পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বাইপাস সড়ক বাস্তবায়নে কোমর বেঁধে নামার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন এমনিতেই দেরি হয়েছে। তাই এখন আর সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যেই যাতে বাকি কাজ শেষ করা যায় সেজন্য প্রচেষ্টা নিতে হবে। ‘সাপোর্ট টু জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দিতে গিয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ২৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হতে বেড়ে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৬৭৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এছাড়া মেয়াদ চার বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে গনভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠকে শেষে ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘গোপালগঞ্জ জেলার পল্লী এলাকার নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, লবণাক্ত এলাকায় শস্য চাষাবাদ, খাবার এবং যে কোনো ব্যবহারে লবণ পানি থেকে দূরে থাকতে হবে। এছাড়া টিউবওয়েল গেড়ে মাটির নিচ হতে পানি না তুলে ভূ-উপরিস্থ পানি পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকার খুব কাছে গাজীপুর জেলা। সেই শহরটি অগোছালোভাবে হয়েছে। এটাকে সুন্দর করতে হবে। এছাড়া উন্নতমানের আগর রেজিন সঞ্চয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে আরো বেশি গবেষণার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বেশি বেশি গবেষণার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকতে হবে। যাতে ইচ্ছে অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করা না হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে দুর্যোগ প্রশমনে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় একনেক বৈঠক শুরুর আগেই। এ বইতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও দুর্যোগ বিষয়ে যেসব অনুশাসন দিয়েছিলেন বা কথা বলেছিলেন সেগুলো সুন্দরভাবে লিপিব্ধ করা হয়েছে। এটা একটা ইতিহাস বা আকরগ্রস্ত বলা যায়। এছাড়া জাতিসংঘের মূল্যায়নে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি অর্জনের বিষয়টিও আজ আলোচিত হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা প্রতিবেশী ভারতসহ কয়েকটি দেশের তুলনায় এগিয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন একজন ব্যক্তি যিনি এমডিজি এবং এসডিজি দুটি ডকুমেন্টেই স্বাক্ষর করেছেন। বিশ্বে এরকম সৌভাগ্যবান নেতা সম্ভবত আর একজন আছেন।
এদিকে সভায় ঢাকা বাইপাস সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাবসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪ হাজার ১৬৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪ হাজার ১২৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার তহবিল হতে ৪০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব জয়নুল বারী, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদ, শরিফা বেগম প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ঢাকা বাইপাস সড়কটি রাজধানীর যানজটন নিরসনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া অন্য একটি প্রকল্পের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, গ্রাম হবে শহর। এটি বাস্তবায়নে পল্লী এলাকার বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার পর এখন পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা হবে। এ সংক্রান্ত যে কোনো প্রকল্প আসলে আমরা জেনে হোক না জেনে হোক, জ্ঞানে হোক অজ্ঞানে হোক সেগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেব। এ ধরনের প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে ফ্রার্স্ট ট্রাক প্রকল্পের মতো গুরুত্ব দেয়া হবে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে এম এ মান্নান বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার মতপার্থক্য বড় কোনো বিষয় নয়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এক মন্ত্রী সভায় কাজ করছি। এটা জাতীয় কোনো বিষয় নয়। এলাকার কিছু টানাপোড়েন। কিছু সংসদ সদস্য তার কাছে গেছেন। তিনি আমাকে ফোন না করেই ডিও লেটার দিয়েছেন। এটা ঠিক করেননি। একটা ফোন দিয়ে বলতে পারতেন আপনার এলাকায় কি হয়েছে। কেননা আমাদের বন্ধুত্ব ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের হবে। এ ঘটনায় আমি সারপ্রাইজড হয়েছি, কিন্তু শকড নই। আমাদের মধ্যে বড় কোনো মতভেদ নেই। ঠিক হয়ে যাবে। তিনি কাজ করেন সারা বিশ্ব নিয়ে, আমি কাজ করি গ্রাম নিয়ে। গ্রামে একটি টিউবওয়েল বসাতে পারলেই আমি খুশি। আকাশের তারা গোনা আমার কাজ নয়।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে এম এ মান্নান বলেন, মোবাইল ফোনে যে কোনো সময় যে কারো হারাতে পারে। লন্ডনে পর্যন্ত এ রকম হয়। সিলেটের কিছু লোক যারা লন্ডনে থাকেন, তারা বলেন স্যার লন্ডনে রানীর বাড়ির সামনে থেকে আমার ফোন টেনে নিয়ে গেছে। দেশে কয়েক কোটি মোবাইল ফোন জীবন্ত রয়েছে। এর মধ্যে কিছু নষ্ট হবে, কিছু হারাবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার হারিয়ে যাওয়া ফোনটির বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ফোনটিতে চার্জ করানোই হচ্ছে না। ডেড ফোন। মরদেহ খুঁজে পাওয়া কঠিন। এ বিষয়ে আমি দুঃখিত, কিন্তু শঙ্কিত নই। এটি একটি দুর্ঘটনা। এছাড়া বর্তমান যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সেটি অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো। কেননা আগে যে দেশের কি অবস্থা ছিল সেটি সবাই জানেন। নারীরা সন্ধ্যার পর বের হতে পারতেন না। নিরাপত্তা ছিল না। এখন পরিস্থিতি অনেক ভালো হয়েছে। তবে আরো ভালো করার সুযোগ আছে। সে চেষ্টাও রয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, সাপোর্ট টু জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক পিপিপি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এছাড়া নোয়খালী সড়ক বিভাগাধীন ক্ষতিগ্রস্ত কবিরহাট-ছমির মুন্সীরহাট-সোনাইমুড়ী সড়ক এবং সেনবাগ-বেগমগঞ্জ গ্যাসফিল্ড-সোনাইমুড়ী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোতন পেয়েছে। এটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। গোপালগঞ্জ জেলার পল্লী এলাকার নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, ব্যয় ২৬১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। গাজীপুর সিটিকর্পোরেশনের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এবং বিভিন্ন অঞ্চলে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ, ব্যয় ৭৮২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর উন্নয়ন, ব্যয় ৯০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর উন্নয়ন, ব্যয় ৩৪৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ বৃক্ষে উন্নতমানের আগর রেজিন সঞ্চয়ন প্রযুক্তি উন্নয়ন, ব্যয় ৬৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। গাজীপুর জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্যয় ৬৮৫ কোটি টাকা। গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্যয় ৮৬৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং রংপুর নীলফামারী, পীরগঞ্জ শহর ও তদসংলগ্ন এলাকায় গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন নেটওয়ার্ক নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৮ কোটি ১১ লাখ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।