Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের অগ্রাধিকার সর্বোচ্চ

জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার উপকূলীয় অঞ্চল জুড়ে কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সৃষ্টির পাশাপাশি সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়ে এর জীববৈচিত্র্য রক্ষার মাধ্যমে সুন্দরবন সম্প্রসারণের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে যে পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেন, সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়। সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র রক্ষার বিষয়ে বর্তমান সরকার সবসময় আন্তরিক ও বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুন্দরবনের আয়তন বাড়ানোর জন্য কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়ে সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলে এর বিস্তৃতি ঘটানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনের বৃক্ষাদি এবং বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য তথা বন অপরাধ দমনের জন্য স্মার্ট পেট্রোলিংসহ নানাবিধ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের এয়োদশ অধিবেশনে (২০২১ সালের বাজেট অধিবেশন) তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারী দলের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা নাদিরার প্রশ্নের জবাবে জাতীয় সংসদকে এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

এ সময় সুন্দরবনের উন্নয়নে সরকারের নেয়া নানান পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালে বাঘ শুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। ২০১৮ সালের শুমারিতে এর সংখ্যা ১১৪টি পাওয়া গেছে। সুন্দরবনের কার্বন মজুদের পরিমাণ ২০০৯ সালের ১০৬ মিলিয়ন টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯ সালে ১৩৯ মিলিয়ন টন হয়েছে।

তিনি বলেন, জীব বৈচিত্রের আধার সুন্দরবনে এখন ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড এবং ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। বন্যপ্রাণীর মধ্যে ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর, ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ২১০ প্রজাতির মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি ও ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া আছে।
সরকারপ্রধান সুন্দরবনের গাছপালা ও বন্যপ্রাণীকূল রক্ষার জন্য বনকর্মীদের যুগোপযোগী করে তুলে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
২০১৭ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনের প্রায় ৫৩% এলাকা অভয়ারণ্যের অন্তর্ভুক্ত।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সহিদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপে গত ১১ বছরে দেশে মাছের উৎপাদন ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে। এখন আমরা মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে দৈনিক ৬০ গ্রামে চাহিদার বিপরীতে আমরা ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম মাছ গ্রহণ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ২০০০ সালে ৬৯৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা রিজার্ভ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়াও ইকোফিশ প্রকল্পের সহায়তায় নিঝুমদ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় ৩ হাজার ১৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা (এমপিএ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের স্মরণে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে ১৫০ পুট উঁচু গ্লাস টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। যশোরের রাজগঞ্জ বাজারে ও ফরিদপুরের আম্বিকা ময়দানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। ঢাকার মিন্টো রোড ও আব্দুল গণি রোডের ভবনগুলোতে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ছিল, বিধায় সেগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ