Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আগামী অর্থবছর থেকে প্রাইমারি শিক্ষার্থীদের দুপুরে খাবার দেয়া হবে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০২১, ১০:১২ এএম

আগামী অর্থবছর থেকে পর্যায়ক্রমে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এক বেলা খাবার দেয়া হবে। খাবার হিসেবে বিস্কুটের পাশাপাশি, রান্না করা খাবার যেমন খিচুড়ি, ডিম ও কলা দেয়া হবে। এ জন্য আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে প্রায় ৬৬ হাজার।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি ২০১৯’ এর খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ। এরই আলোকে আগামী অর্থবছর থেকে পর্যায়ক্রমে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুপুরে খাবার হিসেবে বিস্কুটের পাশাপাশি খিচুড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে দেশের ১০৪টি উপজেলার ১৫ হাজার ৩৪৯টি বিদ্যালয়ে খাবার দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি উপজেলায় রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। বাকিগুলোতে বিস্কুট দেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, খাবার দেয়ার ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে। এর মধ্যে রান্না করা খাবার দিলে ১১ শতাংশ উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়। আর বিস্কুট দিলে ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। সরকারি পরিকল্পনা হলো, যে এলাকায় যে ধরনের খাবারের প্রয়োজন সে ধরনের খাবার দেয়া হবে। প্রতিদিন একই খাবার না দিয়ে খাবারে বৈচিত্র্য থাকবে। মিড ডে মিলের সবচেয়ে লাভজনক দিক হলো, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া কমবে। শিক্ষার মান বাড়বে।
জানা গেছে, প্রথম দিকে সপ্তাহে তিন দিন সবজি খিচুড়ি, বাকি তিন দিন বিস্কুট দেয়া হবে। প্রতিদিন প্রতিটি শিশুকে ৫৩৩ ক্যালরি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দেয়া হবে। তবে যেদিন ডিম-খিচুড়ি দেয়া হবে সেদিন ৬৩০ ক্যালরি পাবে শিক্ষার্থীরা। লক্ষ্য রাখা হবে শিশুরা যাতে ক্ষুধা নিয়ে বিদ্যালয়ে না আসে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে মিড ডে মিল নিয়ে যে নীতিমালা করা হয় তাতে বলা হয়েছে, দেশের অনেক জায়গায় পাইলট বেসিসে চালু হয়েছে। এগুলোকে কিভাবে সমন্বিতভাবে সারা দেশে ছড়ানো যায় তার জন্য এই নীতিমালা। এটি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সেল বা ইউনিট কাজ করবে। কার্যক্রমের পরিধি সম্প্রসারণে প্রয়োজনবোধে প্রাথমিক মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পৃথক জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
স্কুল মিল কর্মসূচির কার্যক্রমের ধরন ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে গাইডলাইন সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তি চাহিদার ক্যালরির ন্যূনতম ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করা হবে, যা প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ৩-১২ বছরের ছেলে ও মেয়েশিশুদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
অর্ধদিবস স্কুলের ক্ষেত্রে দৈনিক প্রয়োজন অনুপুষ্টিকণার চাহিদার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করা। এ ছাড়া জাতীয় খাদ্যগ্রহণ নির্দেশিকা অনুযায়ী দৈনিক প্রয়োজনীয় শক্তির ১০-১৫ শতাংশ প্রোটিন থেকে এবং ১৫-৩০ শতাংশ চর্বি থেকে আসা নিশ্চিত করা হবে। ন্যূনতম খাদ্য তালিকার বৈচিত্র্য বিবেচনায় নিয়ে ১০টি খাদ্যগোষ্ঠীর মধ্যে ন্যূনতম চারটি খাদ্যগোষ্ঠী নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন, একই বিস্কুট বাচ্চারা সব সময় খেতে চায় না তাই খাবারের বৈচিত্র্য বিবেচনায় আমরা বিস্কুট, কলা ও ডিম কমন রাখার চেষ্টা করছি। আর বৃহস্পতিবার অর্ধদিবসে শুধু বিস্কুট রাখা হবে। সব প্রাইমারি স্কুলকে এই মিড ডে মিলের আওতায় নিয়ে আসা হলে আমরা দেখেছি, শুধু বিস্কুট দিলে প্রতিদিন প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য ৯ টাকা হারে বছরে ২ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা, পাঁচ দিন রান্না করা খাবার ও এক দিন বিস্কুট দিলে ৫ হাজার ৫৬০ কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ হবে। বিস্কুট এবং ডিম, কলা ও রুটি দিলে ২৫ টাকা হারে খরচ হবে ৭ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। আমরা সব মডেলে চালাব, যেখানে যেটা প্রযোজ্য হবে।
উল্লেখ্য, দেশে ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১৫ হাজার ৩৪৯টি স্কুলের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে খাওয়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় ২০০০ সাল থেকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চলছে।



 

Show all comments
  • Md shekh sadi ৩০ মে, ২০২১, ১১:২৮ এএম says : 0
    Good Decision for bangladesh government
    Total Reply(0) Reply
  • ইহসান ইলাহী যহীর ৩০ মে, ২০২১, ১১:৪৩ এএম says : 0
    মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও তো দেশের নাগরিক। আগামী অর্থবছর থেকে প্রাইমারি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মক্তব, হেফযখানা এবং ইবতেদায়ীতেও দুপুরের খাবার দেওয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Tarek Aziz ৩০ মে, ২০২১, ১২:৫০ পিএম says : 0
    এক প্লেটের দাম পড়বে ৩০০০টাকা!
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ekhlas ৩০ মে, ২০২১, ১২:৫১ পিএম says : 0
    খাবার লাগবে না, স্কুল খুলে দেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Shahid Ul Islam ৩০ মে, ২০২১, ১২:৫১ পিএম says : 0
    কিছু লোকের ইনকাম এর রাস্তা খুলে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • ɱd ɱonir ৩০ মে, ২০২১, ১২:৫৬ পিএম says : 0
    উদ্যোগ যথেষ্ট ভালো এবং এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের কতটুকুই বা শিক্ষার্থীরা পাবে সে সম্পর্কে বাংলাদেশের জনগণের খুব ভালো ধারণা আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • শেখ রাসেল ৩০ মে, ২০২১, ১২:৫৭ পিএম says : 0
    খুব ভালো উদ্যোগ
    Total Reply(0) Reply
  • MD. NOZIR AHEAD ৩০ মে, ২০২১, ৯:১৮ পিএম says : 2
    যদি কার্যদিবস ২৫ দিন ধরি তাহলে প্রতিটি শিশুর জন্য প্রতিদিন বিস্কুট দিলে ৯ টাকা করে(৯*২৫=২২৫ টাকা) আর বিস্কুট, ডিম,কলা ও রুটি দিলে ২৫ টাকা করে(২৫*২৫=৬২৫ টাকা) মাসিক খরচ হবে। অপরদিকে যারা না খাইলে শিশুদের পাঠদান করানো সম্ভব হবে না তাদের জন্য দুপুরবেলার নাস্তা হিসাবে বরাদ্দ মাসে ২০০ টাকা যা দৈনিক হিসাবে দাড়ায় ৮ টাকা। শিক্ষকদের টিফিন ভাতা শিশুদের সমমান করার জন্য কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • নাসরিন আক্তার ৩১ মে, ২০২১, ৬:০৪ পিএম says : 0
    ছবির ফটোগ্রাফার কে? কখন ছবিটা তোলা হয়েছে জানতে চাই। ????
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Shahin Reza ৩১ মে, ২০২১, ৬:০৫ পিএম says : 0
    যাতে দুনীতি ভালো করতে পারে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nazrul Islam ৪ জুন, ২০২১, ৩:৩৯ পিএম says : 0
    শিশুদের নামে বাজেট করে ধান্দার মহা উৎসব বানিয়েছে।ওখানে লাগবে মারামারি, খাদ্য না দিয়ে দিন পার করবে। খাদ্য সরবারাহ নিয়ে নানা জটিলতা।খাদ্যর মান নিয়ে সমস্যা। স্কুলকে হোটেল বানিয়ে ফেলবে।এদের মাথায় এত নিম্ন মানের বুদ্ধি। আমলা বাণিজ্য বন্ধ করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ