Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ

ইউএনজিএ প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল গণভবনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

জাতিগত নিধনের শিকার জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে এক মিলিয়নের বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আমরা আলোচনায় ছিলাম। যদিও সেখানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছিল না। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু মিয়ানমারের এই পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য ভাসানচরকে প্রস্তুত করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ভাসানচর দ্বীপে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নেওয়া যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত সেখানে ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নেওয়া হয়েছে। এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে মানবিক দিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকির।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকির রোহিঙ্গা সংকট ছাড়াও আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি জাতিসংঘের এই কর্মকর্তার সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মহামারির মধ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ভাইরাস হতে দেশের জনগণ এবং অর্থনীতিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। করোনা ভাইরাস থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এবং এর প্রভাব মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ ও সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের জন্য অন্যান্য অর্থ সুবিধা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারীদের ক্ষমতায়িত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা তার দেখানো পথে রাজনীতি থেকে প্রশাসন সমাজের সকল সেক্টরে নারীর ক্ষমতায়ন করছি। জাতীয় সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার এবং সংসদ উপনেতা চার জনই নারী সে কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকার প্রধান।

এ বছর সরকার প্রধানদের সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন করার চিন্তা-ভাবনার কথা জানান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) প্রেসিডেন্ট ভলকান বজকির। তিনি বলেন, এ বছর জাতিসংঘ অধিবেশনের সময় প্রতিটি দেশ থেকে দুই জনের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত থাকার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন ভলকান বজকির। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একজন লেডি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অসাধারণ সফলতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ প্রসঙ্গে ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশ সারা বিশ্বের সামনে একটি দৃষ্টান্ত।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।



 

Show all comments
  • Abdullahel Farid ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৩ এএম says : 0
    কোনও মানবতার সার্টিফিকেট ও শুভেচ্ছা ধন্যবাদ প্রয়োজন নেই দ্রুত রোহিঙ্গাদের এই দেশ থেকে ফেরত নেবার ব্যাবস্থা করে আমাদেরকে উদ্ধার করেন। আর রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে না চায় তবে জোর করে বার্মায় ফেরত পাঠানো হোক
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Salah Uddin Ahmed ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৪ এএম says : 0
    আন্তর্জাতিক মহল চুপচাপ। আসলেই উদ্বেগের বিষয়
    Total Reply(0) Reply
  • Mustahid Khan ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
    আসলে পররাষ্ট্র নীতিতে যেখানে ভারত ও চীন দুই দেশ ই মিয়ানমার কে কাছে রাখতে চায় সেখানে বাংলাদেশের এই আলোচনা কোন কাজে আসবে বলে মনে হয় না। আর মিয়ানমার ও আলোচনা চালাবে না তারা নানান তালবাহানা করে সময় ক্ষেপন করবে। এখন বাংলাদেশকে একটা কঠিন সিদ্ধান্তে আসতে হবে আর তাও হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী, এমত অবস্থায় বাংলাদেশের যে লেজুড়বৃত্তি পররাষ্ট্র নীতি আছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, আর তা অবস্যই একক ক্ষমতায়নের অন্তরায় বলেই মনে হয়। আর তাই বাংলাদেশকে বহুকাল এই রোহিংগা সংকট ঘাড়ে নিয়ে চলতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • এম.এম হাসান ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
    হুম!ভালোমানুষি করে, মানবতা দেখিয়ে এখন আমরাই বিপদে পড়ে গেলাম।এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের সব দায় আমাদের ঘাড়ে।অন্যান্য দেশ যারা সুপারিশ করেছিল রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে এবং মানবতাবাদী সব সংগঠন এখন নির্বিকার।তাদের তো কোন সমস্যা হচ্ছে না।এজন্যই বলে,"উপকারী গাছের ছাল থাকে না।"
    Total Reply(0) Reply
  • Rahad Sarkar Rasel ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৭ এএম says : 0
    একদিকে ভারত ও মিয়ানমার, এবং অন্যদিকে চীন ও মিয়ানমার পরস্পর ভাই ভাই। অর্থাৎ অন্যান্য ইস্যুতে চীন-ভারত চরম শত্রু হলেও মিয়ানমার ইস্যুতে তাদের অবস্থান একই। অতএব, প্রত্যাবাসনের জন্য ভারত ও চীনের সহযোগিতার ওপর আশায় থেকে রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দেওয়াটা হাসিনা সরকারের বিশাল ভুল সিদ্ধান্ত ছিল!
    Total Reply(0) Reply
  • Asheque Mahmud ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৭ এএম says : 0
    জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতো তাহলে যেকোন সমস্যারই সমাধান আমরা করতে পারতাম। আজ আমরা হাজার ভাগে বিভক্ত,কোন নির্দিষ্ট লক্ষ নাই। নিজেরা নিজেরা মারামারিতে ব্যস্ত, এর সুযোগে অন্যরাও আমাদের ঘাড়ে ছড়ি ঘোরালে কিছুই করার থাকবে না
    Total Reply(0) Reply
  • Nirh Hara Pakhi ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৮ এএম says : 0
    বাংলাদেশের উচিৎ যে কোন ভাবে এদেরকে বাংলাদেশ থেকে বের করা!! -তানাহলে এরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাড়াবে!!
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ মমিন আলম ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৮ এএম says : 0
    তাদেরকে মিয়ানমার কখনোই ফিরিয়ে নিবেনা। যতই একজায়গায় জরো করে রাখা হবে ততই অমঙ্গল হবে, তাদের বিভিন্ন জেলায় বন্টন করে রাখলে নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হবে। আর পার্বত্য জেলা গুলোতে কঠিন ভাবে সিমান্তে বেড়া দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah Mahmood ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৮ এএম says : 0
    আর কিছুদিন পরে মিয়ানমার বাংলাদেশকে বলবে রোহিংগাদের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিতে, কারন তারাতো বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে রয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Dadhack ২৮ মে, ২০২১, ১:১৯ পিএম says : 0
    If our country rule by Qur'an then Myanmar never dare to point a finger to Rohingya Muslim and also India never dare to oppress and kill muslim in India.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ