পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
“তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপের দাবী“তে যৌথভাবে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) ও এইড ফাউন্ডেশন। শনিবার (২২ মে) সফটওয়্যার জুম এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানার সভাপতিত্বে, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপির প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল। আলোচনায় অংশগ্রণ করেন, পদ্মার নির্বাহী পরিচাল হাবিবুর রহমান, দৈনিক লাখোকন্ঠের মেহেরপুর প্রতিনিধি প্রভাষক রফিকুল আলম, নড়াইল কণ্ঠের সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক মিলন রহমান, এসসিডিও নির্বাহী পরিচালক শুকান্তা দাস, পল্লী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ইলিয়াস হোসেন, কেএসকেএস সংস্থার পরিচালক আরিন্দম দেনাথ, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট প্রতিনিধি মিথুন বৈদ্য, ঢাকা ট্রিবিউন খুলনা প্রতিনিধি হেদায়েত হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে হামিদুল ইসলাম হিল্লোল বলেন, প্রতিবছর জাতীয় বাজেটে “রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে” তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ ও এর ওপর কর আরোপ করা হয়। কিন্তু করারোপের পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতার কারণে এটি যেমন প্রত্যাশা মতো রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে পারে না তেমনি তামাকের ব্যবহার কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমিয়ে আনতে পারে না। আমাদের দেশে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্যের ওপর শতাংশ হারে (অ্যাড ভেলোরেম পদ্ধতিতে) সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়। করারোপের এই পদ্ধতিটি জটিল ও ত্রুটিপূর্ণ। এই কারণে তামাকজাত দ্রব্যের দাম বাড়লেও তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেমন কাক্সিক্ষত হারে কমছে না, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে না। ফলে তামাক কোম্পানির মুনাফা অনাকাক্সিক্ষতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীর নিজস্ব নথিতে দেখা যায়, ২০০৯ থেকে ২০১৮ এই ১০ বছরে তাদের উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুন কিন্তু একই সময়ে তাদের মুনাফা বেড়েছে পাঁচ গুন। এই জটিল কর কাঠামোর কারণে সরকার কাঙ্খিত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তামাক কোম্পানির মুনাফা অনাকাঙ্খিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থেকে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপর কার্যকর পদ্ধতি হিসাবে সুনির্দিষ্ট সম্পুরক শুল্ক আরোপ পদ্ধতি বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত। বিশ্বে তামাক নিয়ন্ত্রণে সফল দেশগুলো ‘অ্যাড ভেলোরেম’ করারোপ পদ্ধতির পরিবর্তে ‘সুনির্দিষ্ট করারোপ’ পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে। ‘সুনির্দিষ্ট করারোপ’ পদ্ধতিতে দ্রব্যের মূল্যের ওপর শতাংশ হারে করারোপের পরিবর্তে দ্রব্যের পরিমাণের ওপর সুনির্দিষ্ট পরিমাণ কর নির্ধারণ করা হয়। তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করা হলে- এই পদ্ধতিটি সহজে বাস্তবায়ন করা যাবে, করের পরিমাণ নির্ণয় ও কর আদায় করা সহজ হবে, সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে, সব ধরণের তামাকজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে, তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কমবে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী তামাক কর ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে বিশ্বের এমন ১৪৩ টি দেশের মধ্যে ৭৫.৫ ভাগ (১০৮ টি) দেশে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কোন না কোনভাবে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে করারোপ করা হয়। এর মধ্যে ৫০ টি দেশে শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট কর এবং ৫৮ টি দেশে মিশ্র (সুনির্দিষ্ট ও অ্যাডভেলোরেম এক্সাইজ) করারোপ ব্যবস্থা রয়েছে। শুধুমাত্র অ্যাডভেলোরেম পদ্ধতিতে করারোপ করা হয় ৩৫ টি দেশে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং নেপালও সুনির্দিষ্ট করারোপ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে। আবার ১৪৩ দেশের মধ্যে ১১৫ টি দেশে টহরভড়ৎসবফ কর ব্যবস্থা (কোন মূল্য স্তর নেই) চালু রয়েছে।
প্রতি বছরের মত এ বছরেও আমরা আসন্ন বাজেট লক্ষ্য করে সব ধরণের তামাকজাত দ্রব্যের ম্ল্যূ ও কর প্রস্তাব সরকারের কাছে পেশ করেছি। বৈশ্বিক প্রেক্ষপট বিবেচনায় নিয়ে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং তামাকের ব্যবহার কার্যকরভাবে কমিয়ে আনতে ‘২০২১-২২ অর্থ-বছর’ থেকে সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপের প্রস্তাব করেছি আমরা।
তামাকজাত দ্রব্যের উপর্যুক্ত মূল্য বৃদ্ধি এবং করারোপের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে ১১ লক্ষ প্রাপ্ত বয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দেবে এবং ৮ লক্ষ তরুণ নতুন করে ধূমপান শুরুকরতে নিরুৎসাহিত হবে। পাশাপাশি ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে ৮ লক্ষ তামাক ব্যবহারকারীর জীবন রক্ষা হবে। একইসঙ্গে রাজস্ব আয় প্রায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পাবে। তাই আমাদের দাবী উপর্যুক্ত প্রস্তাব অনুযায়ী তামাকজাত দ্রব্যে করারোপ করুন, এতে মানুষের জীবন বাঁচবে, রাজস্ব আয়ও বাড়বে বলেও লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন।
পাশাপাশি সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণের অন্যতম কার্যকর কৌশল হলো তামাক জাত দ্রব্যে দাম বাড়িয়ে এর সহজলভ্যতাকে সংকুচিত করা। ২০৪০ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে হলে তামাকের ব্যবহার প্রতি বছর গড়ে ১.৫% হারে কমিয়ে আনতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা বাড়বে যদি আরো আগেই তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ব্যাপকহারে কমিয়ে আনা যায়। এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ২০২১ সালের মধ্যে বর্তমান তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ২৮.৪% কমানোর লক্ষ্য স্থির করতে হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।