Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে যা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০২১, ৪:৩৫ পিএম

সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। কিন্তু এখানে মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমুন্নত রাখা হয়েছে। এর ফলে ধর্মীয় বৈষম্যে বিধিনিষেধ রয়েছে। সব ধর্মের সমতা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় খাতে গত বছর ঘটে যাওয়া ঘটনার ওপর প্রণয়ন করা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০১৬ সালে একজন হিন্দু পুরোহিতকে হত্যার দায়ে সহিংস চরমপন্থি গোষ্ঠী জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) চারজন সদস্যকে অভিযুক্ত করে ১২ই মার্চ মৃত্যুদন্ড দিয়েছে বাংলাদেশের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। উগ্রপন্থা প্রতিরোধে সরকার পুরো বছরই মসজিদের ইমামদের নির্দেশনা দিয়েছে। এ সময়ে মসজিদ থেকে কোনো উস্কানি দেয়া হচ্ছে কিনা তা নজরদারিতে রাখা হয়।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বলেছেন, জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও বিরোধপূর্ণ জমি দখল বন্ধে সরকারি কার্যক্রম অকার্যকর ছিল। সম্ভাব্য সহিংসতা বন্ধে ধর্মীয় স্থাপনায়, উৎসবে এবং অনুষ্ঠানে আইন প্রয়োগকারী ব্যক্তিদের মোতায়েন করে সরকার। হিন্দুদের একটি উৎসবের সময় নির্বাচন দেয়ায় ছাত্ররা এবং ধর্মীয় গ্রুপগুলো প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। এর ফলে জানুয়ারিতে ঢাকার স্থানীয় নির্বাচন নতুন করে শিডিউল করে নির্বাচন কমিশন
অক্টোবরে মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ হয় যে, লালমনিরহাটে পবিত্র কুরআনের অবমাননা করার অভিযোগে একজন মুসলিমকে কয়েক শত মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এরপর ওই ব্যক্তির দেহ পুড়িয়ে দেয়া হয়। জুলাই মাসে মিডিয়া এবং সুফি মুসলিমদের মতে, গাজীপুরে সুফি সমাধির বাইরে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। জুলাই মাসে স্থানীয় মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ হয় যে, মুসলিমদের কবরস্তানে দাফন করার কারণে আহমাদি সম্প্রদায়ের একটি নবজাতকের দেহ সেখান থেকে তুলে ফেলা হয়। পরে তা রাস্তার পাশে দাফন করা হয়। বলা হয়, তার পরিবারের সদস্যরা কাফের। পরে ওই নবজাতকের মৃতদেহ একটি সরকারি কবরস্তানে দাফন করা হয়েছে। নভেম্বরে হিন্দু সম্প্রদায় এবং মিডিয়ায় প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ফ্রান্সে শার্লি এবদো পত্রিকায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর ব্যঙ্গচিত্রের সমর্থন করেছেন কিছু হিন্দু। এমন গুজবে কুমিল্লায় কয়েক শত মানুষ হিন্দু পরিবারগুলোর বাড়িঘরে লুটপাট চালায়। ভাঙচুর করে। বাড়িঘরে আগুন দেয়। হিন্দুত্ব থেকে বা ইসলাম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টান হওয়ার জন্য হয়রান, সাম্প্রদায়িক শারীরিক নির্যাতনের হুমকি অব্যাহত আছে বলে দাবি করেছে ক্রিস্টান ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও অন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বলেছে, সারা বছরেই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত ছিল।
সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ, ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এবং মুক্ত বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, অন্য প্রতিনিধিরা, মার্কিন দূতাবাসের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক এম্বাসেডর অ্যাট লার্জ ধর্মের নামে এসব সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তারা সরকারকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সমুন্নত রাখতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বিগত বছরে বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিম এবং তাদেরকে ঠাঁই দেয়া সম্প্রদায়কে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৩৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার সাহায্য বিষয়ক কর্মসূচি গ্রহণ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ