পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঈদে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য মহামারির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ছুটোছুটি না করেÑ যে যেখানে আছেন, সেখানে থেকেই উৎসব-উদযাপন করেন। অনেক সম্পদ থাকার পরও আরও চাই স্বভাবের মানুষগুলোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মরলে তো সবাইকে সেই কবরে যেতে হবে। মাত্র সাড়ে তিন হাত জায়গায়। এই ধন-সম্পদ কেউ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না।
গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অবশিষ্ট মূল অধিবাসী এবং সাধারণ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে প্লট বরাদ্দ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। যাদের অনেক সম্পদ আছেÑ তাদের আরও লাগবে কেন? প্রশ্ন করে শেখ হাসিনা বলেন, যাদের এত বিশাল বিশাল অট্টালিকা, বাড়িঘর ফ্ল্যাট সবই আছে তাদের আরও লাগবে কেন? মরলে তো সবাইকে সেই কবরেই যেতে হবে। মাত্র তিন হাত, সাড়ে তিন হাত জায়গায়। এই ধন-সম্পদ কেউ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না। এই কথাটা মানুষ কেন ভুলে যায়, আমি জানি না।
ঢাকা থেকে বিভিন্ন ছোট যানবাহন, এমনকি পণ্যের ট্রাক বা পিকআপে চড়ে ভেঙে ভেঙে মানুষ ছুটছে উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায়। গাদাগাদি করে তাদের পদ্মা পার হওয়া ঠেকাতে দিনের বেলায় ফেরি বন্ধ রেখে এবং বিজিবি মোতায়েন করেও কাজ হচ্ছে না। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় গত শনিবার থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিআইডব্লিউটিসি। মরিয়া এই যাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা ঈদে কোথাও না গিয়ে নিজের ঘরে থাকতে কী ক্ষতিটা হয়? কাজেই আপনারা ছুটোছুটি না করে যে যেখানে আছেন, সে সেইখানে থাকেন। সেইখানে নিজের মতো করে ঈদটা উদযাপন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা একটু ধৈর্য ধরেন, নিজের ভালো চিন্তা করেন। সাথে সাথে যার যার পরিবারের ভালোর চিন্তা করেন। মহামারিতে সারাবিশ্বেই যে মানুষের প্রাণহানি ঘটছে, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশে প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে এবং এই প্রতিবেশী দেশে যখন হয়, তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দেশে আসারও একটা সম্ভবনা থাকে। সেজন্য আগে থেকেই আমাদের নিজেদের সুরক্ষিত থাকতে হবে। নিজেদের সেভাবে চলতে হবে, যেন সবাই করোনাভাইরাস থেকে বেঁচে থাকতে পারি। সবাইকে স্বাস্থ্যবিষয়ক নির্দেশনাগুলো মেনে চলার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের সময়ে আপনারা একটু মাস্ক পরে থাকবেন। সাবধানে থাকবেন। কারণ আবার নতুন আরেকটা ভাইরাস (করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট) এসেছে, এটা আরো বেশি ক্ষতিকারক। যাকে ধরে, সাথে সাথে তার মৃত্যু হয়। সেই জন্য আপনি নিজে সুরক্ষিত থাকেন, অপরকে সুরক্ষা দেন। শেখ হাসিনা বলেন, যখন পূর্বাচল শুরু হলো তখন আমি দেখেছিÑ এমনকি গুলশান, বারিধারায় বিশাল বিশাল অট্টালিকাও যাদের তাদেরও পূর্বাচলে একটা প্লট না থাকলে নাকি ইজ্জতই থাকে না। এই রকমও কিছু কিছু মানুষের মানসিকতা আমি দেখেছি।
পূর্বাচলে যারা প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের সত্যিকার প্রাপ্য, আপনারা কিন্তু বঞ্চিত ছিলেন। কাজেই সব সময় আমাদের একটা প্রচেষ্টা ছিল যে, কীভাবে আপনাদের বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি দেব। আপনারা জমি দিয়েছেন অথচ আপনারা প্লট পাবেন নাÑ এটা হতে পারে না।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে পূর্বাচলে জাতির পিতার স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটা প্রকল্পের অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাব এসেছিল। যার অনুমোদন তিনি দেননি বলে অনুষ্ঠানে জানান। শেখ হাসিনা বলেন, সেই ফাইলে আমি লিখে দিয়েছিলাম, এখানকার যারা আদিবাসী তারা প্লট পাবে, তারপর আমি প্রকল্পের অনুমোদন দেব। তার আগে কোনো প্রকল্পের অনুমোদন দেব না এবং কীভাবে প্লট বের করবে, সেটা যেন মন্ত্রণালয় বা রাজউক যেন খুঁজে বের করে। সেই নির্দেশনাটাই আমি দিয়েছি। হাসিনা বলেন, আমি এইটুকু চাই, বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। যেইটুকু পারি, যেভাবে পারি একটা মানুষকে একটা ঘর, একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই, সেটা আমরা করে দেব এবং প্রত্যেকটা ঘরেই বিদ্যুৎ থাকবে, আলো জ্বলবে। প্রতিটি পরিবারেই শিক্ষিত মানুষ থাকবে, লেখাপড়া শিখবে। যুব সমাজকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই লেখাপড়া শুধু কেতাবি পড়া না। সাথে সাথে ভোকেশনার ট্রেনিং নিতে হবে, কারিগরি শিক্ষা নিতে হবে, যেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। শুধু বিএ, এমএ পাস করলে হবে না। চাকরির পেছনে ঘুরলে হবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। নিজেরা যেন চাকরি দিতে পারে, সেভাবে নিজেদের কাজ করতে হবে। আমরা সেইভাবে এদেশের যুব সমাজকে গড়ে তুলতে চাই।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমদ অধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে প্লটের বরাদ্দপত্র তুলে দেন। মোট ১ হাজার ৪৪০ জন মূল অধিবাসী এবং সাধারণ ক্ষতিগ্রস্তকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের মূল অধিবাসী ও সাধারণ ক্ষতিগ্রস্তদের ৬ হাজার ৪৪২টি প্লটের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট মূল অধিবাসী ও সাধারণ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ১ হাজার ৪৪০টি প্লটের বরাদ্দপত্র প্রদান করা হয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।