পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমণের বিরোধীতা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচি পালন করে। এসব কর্মসূচিতে হামলা করে তা পন্ড করে দেয় ছাত্রলীগ। সব হামলায় ছাত্রলীগের মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছে অধিক পরিমাণে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ইঙ্গিতে আন্দোলন দমাতে ব্যবহার করা হচ্ছে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের। ঢাবি ক্যাম্পাসে অপরিচিত হওয়ায় এদের হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যুগ যুগ ধরে কাজ করে আসা কর্মচারিরাও। এমনকি হামলার শিকার হয়েছে ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত পুলিশ ও সাংবাদিক। হামলার পর ভিকটিমের মোবাইল, মানিব্যাগ, টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে একাধিক ঘটনায়।
গত বৃহস্পতিবার ঢাবি ক্যাম্পাসে মোদি বিরোধী মশাল মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় হামলার শিকার হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনি পুলিশের এক কর্মকর্তা। এসময় তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। ঢাবি দক্ষিণ ফুলার রোড আবাসিক এলাকায় দায়িত্বরত দু’জন কর্মচারী একই ঘটনায় হামলার শিকার হন। ওই দুই কর্মচারী হলেন নিরাপত্তা প্রহরী জমির ও মালি ইদ্রিস। ওই দুই কর্মচারী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করলে তারা অনেকেই দক্ষিণ ফুলার রোড আবাসিক এলাকা, উত্তর ফুলার রোড আবাসিক এলাকা সহ আশেপাশের শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় আশ্রয় নেয়। সেখানে তাদের উপর দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়।
হামলার সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সহস্রাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নেন। হামলার শিকার গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জমির বলেন, আমি গেটে দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন দেখলাম, কতগুলো ছেলে কিছু না বলেই ভিতরে ঢুকে গেলো। তাদের থামাতে চাইলেও তারা থামেনি। তাদের পিছন পিছন কিছু ছেলে ঢুকে হঠাৎ হামলা শুরু করে। এসময় আমি সেখানে থাকলেও আমার উপরও হামলা করে বসে। আমার সাথে ইদ্রিস ছিলো, তার উপরও হামলা করে বসে।
এর আগে সন্ধ্যায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকা থেকে মশাল মিছিল বের করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোট। কর্মসূচি শেষ করে চলে যাওয়ার উদ্যোগ নিলে ভিসি চত্ত¡র এলাকায় এ হামলা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সেখানে জোটের অন্তত ২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়। এসময় গণমাধ্যমকর্মী ভেবে ছাত্রলীগেরই একজনকে মারধর করেন তারা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। হামলার শিকার সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, আমরা ধাওয়া খেয়ে আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। সেখানে তারা আমাদের বাঁশ, লাঠি-সোঠা দিয়ে মারতে থাকে। সেখানে থাকা কয়েকজন কর্মচারীর উপরও তারা হামলা করে।
তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বহিরাগত নিয়ে আসে। তারা আগে থেকেই লাঠি সোঠা হাতে প্রস্তুত ছিলো। তারাই হামলা করে।’ একই ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে হামলার শিকার হয় প্রথম আলোর ঢাবি প্রতিবেদক আসিফ হাওলাদার। ভিসি চত্ত¡র এলাকা থেকে তাকে শিক্ষকদের আবাসিক কোয়ার্টারের ভিতরে নিয়ে লাঠি, বাঁশ দিয়ে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আসিফকে ফেলে রেখে চলে গেলে সেখানে কয়েকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়ে লেখক বলেন, দেখা যায় যে অনেকে কার্ড বানিয়ে সাংবাদিক সেজে ঘুরে বেড়ায়। যার কারণে অনেক সময় সাংবাদিক আর অসাংবাদিকের চিহ্নিত করা যায় না। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা চিনতে পারেনি, তাই তারা না বুঝে হামলা করেছে।
ভিসির সামনে হামলা: গত বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় বিচ্ছিন্ন নেতাকর্মীরা শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় ডুকে পড়লে ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীদের আবাসিক এলাকা থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তার কিছুক্ষণ পরই ভিসির সামনে জোটের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র-জোটের নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা ভবনে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরপরই ভিসি স্যার আসেন। সেখানে তিনি আন্দোলনকারীদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলেন। তারপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের উপর হামলা করেন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগরের সভাপতি রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, আমরা হামলার শিকার হয়ে দক্ষিণ ফুলার রোড আবাসিক এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নেই। আশ্রয় নেয়ার দুই মিনিট পর ভিসি আসেন। তিনি আমাদের কাছ থেকে পরিচয় জানতে চান। আমরা পরিচয় দিলে তিনি আবাসিক এলাকা থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলো। তারপর ভিসি বের হওয়ার আগেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে ঢুকে আমাদের উপর হামলা করেন। তিনি জানান, ছাত্রলীগের হামলার আধঘন্টা পর শিক্ষকদের একটি টিম এসে আমাদের উদ্ধার করে। তারা আমাদের সেখান থেকে নিরাপদে বের করে নিয়ে আসেন।
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কতগুলো ছেলে-মেয়ে আবাসিক এলাকার ভিতরে ঢুকে পড়লে তাদের জিজ্ঞেস করতে যাই। তারা জানায়, তারা প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতা-কর্মী হিসেবে নিজের পরিচয়। এসময় প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যদের মাধ্যমে তাদের নিরাপদে বের করে দেয়ার জন্য বলি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।