পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাধীনতা আল্লাহ তায়ালার মহান নেয়ামত। জন্মলগ্ন থেকেই আল্লাহ তায়ালা মানুষকে স্বাধীন করে বানিয়েছেন। মানুষের স্বাধীনতা হরণের অধিকার আল্লাহ তায়ালা কাউকেই দেননি। গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। আসন্ন পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কেও জুমার বয়ানে পেশ ইমামরা গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান গতকাল জুমার খুৎবা পূর্বে বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই্ আল্লাহ তায়ালা মানুষকে স্বাধীন করে বানিয়েছেন। স্বাধীনতা মানুষের স্বভাবগত বিষয়। কোন ভাষা, দেশ, গোষ্ঠী বর্ণ কোনো কিছুর মিছে অজুহাতে মানুষের স্বাধীনতা হরণের অধিকার আল্লাহ তায়ালা কাউকেই দেননি। আল্লাহ তায়ালা এ পৃথিবীতে মানুষকে পাঠিয়েছেন একমাত্র তার গোলামী করার জন্য, কোনো মানুষের গোলাম হতে নয়। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদিগকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদিগকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অন্যের সহিত পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকি। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু জানেন, সব খবর রাখেন।’ (সূরা-৪৯ হুজুরাত, আয়াত: ১৩, পারা: ২৬)।
পেশ ইমাম বলেন, স্বাধীনতা আল্লাহ তায়ালার মহান নেয়ামত। জুলুমের অবসানে জেগে উঠে বাংলার জনগণ, ছিনিয়ে আনল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। স্বাধীনতা ও বিজয়-পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে কোরআন মজিদে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন : ‘আমি তাহাদিগকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, জাকাত আদায় করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ার। (সুরা-২২ হজ, আয়াত: ৪১, পারা: ১৭)। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের স্বাধীনতাকে কেয়ামত পর্যন্ত অক্ষুণœ রাখুন। যাদের ত্যাগ, কোরবানি ও জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা উত্তম বিনিময় দান করুন আমীন!
ঢাকা লালমাটিয়াস্থ বায়তুল হারাম মসজিদের খতিব মাওলানা কাজী আবু হুরায়রা জুমার খুৎবা পূর্বে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিগত ১৪ শত বছর পর্যন্ত ইসলামের দুশমনদের দ্বারা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে হাজারও ষড়যন্ত্রের উদাহরণ থাকলেও স¤প্রতি কোরআনের ২৬টি আয়াত বাদ দেয়া অথবা এগুলোর নির্দেশনা স্থগিত চেয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে জনৈক মুরতাদের মামলা দায়ের এক নজিরবিহীন ঘটনা। ওয়াসিম রেজভী নামের এই শিয়া নেতার পেছনে ইসলামবিদ্বেষী আন্তর্জাতিক চক্রের যে হাত রয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ঘটনায় বিশ্ব মুসলিমের কলিজায় আগুন জ্বলছে। এ ধরনের একটি উস্কানিমূলক, অনৈতিক ও অনভীপ্রেত রিট আবেদন খারিজ না করে শুনানির জন্যে ভারতীয় আদালত গ্রহণ করায় সারাবিশ্বের মুসলিম বিস্মিত ও উৎকণ্ঠিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা এবং এ দূরভিসন্দিমূলক রিট আবেদন খারিজ করার আবেদন জানাচ্ছি।
দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রেজাউল করিম গতকাল জুমার খুৎবার পূর্বে বলেন, শাবান মাসে শবে বরাত অর্থাৎ মুক্তির রজনী। শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে বায়হাকী ও ইবনে মাজাহ শরিফ এ একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহপাক এই রাতে প্রথম আসমানে এসে বান্দাদের লক্ষ্য করে বলেন তোমাদের মধ্যে কেউ পাপি আছ আমার কাছে মাফ চাইবে আমি তাকে মাফ করে দিব। তোমাদের মধ্যে কেউ রিজিক চাওয়ার আছ, আমি তাকে রিজিক দান করব। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ আছ, আমার কাছে রোগমুক্তি চাইবে আমি মুক্তি দেবো। এইভাবে বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে মানুষকে ডেকে ডেকে চাইতে বলেন অর্থাৎ দোয়া করতে বলেন। শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন রাত্রি জাগরণ করে ইবাদত করো দিনে রোজা রাখো। এ রাতে রাসুল (সা.) জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে গিয়েছিলেন মৃত ব্যক্তি ও শহীদের জন্য দোয়া করেছেন।
ভোলা সদর নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা একেএম মুশাররফ হুসাইন জুমার খুৎবার বয়ানে বলেন, বরকতময় শাবান মাস হলো রমজানের প্রস্তুতির মাস। মুসলিম উম্মাহ অপেক্ষায় থাকেন কখন রহমত, বরকত, নাজাতের পয়গাম নিয়ে নতুন চাঁদের আগমন ঘটবে। উম্মাহর জন্য রমজান মাস আগমনের প্রথম সুন্নাহ হলো চাঁদ দেখা। কেননা রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাঙো। এরপর দ্বিতীয় সুন্নাহ হলো এশার ফরজ এবং দুই রাকাত সুন্নাহর পরে সলাতুত তারাবিহ আদায় করা, এরপর তৃতীয় সুন্নাহ হলো সাহরি খাওয়া। রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন তোমরা সাহরি খাও, কেননা সাহরির মধ্যে বারাকাহ রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের ফরজ বিধান রমজানের রোজা পালন করার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট সুন্নাহগুলোও সুন্দরভাবে পালন করার তৌফিক এনায়েত করুন। আমীন!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।