Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোভিড-১৯ টিকার বাংলাদেশকে জন্য বিশ্বব্যাংকের ৫০০ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০২১, ১১:৪৩ এএম

কোভিড-১৯ এর প্রতিরোধে ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষের টিকাদান কার্য্রক্রমে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে বিশ^ব্যাংক আজ ৫০ কোটি ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন করেছে।

‘কোভিড -১৯ এমারজেন্সি রেসপন্স এন্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পে বিশ^ব্যাংকের অতিরিক্ত এই অর্থায়ন প্রথম পর্যায়ে দেশের ৪০ শতাংশ মানুষকে টিকাদানের আওতায় আনতে সরকারের যে প্রাথমিক অগ্রাধিকার পরিকল্পনা তার অধীনে ৩১ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে সহায়তা করবে। এটি নিরাপদ ও কার্যকরী টিকা ক্রয়, সংরক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণ এবং বিতরণে সরকারকে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ^ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, “জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বাংলাদেশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। টিকাদান কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনে দ্রুত এবং সাম্যতার সাথে মানুষের টিকা প্রাপ্তি জরুরি।” তিনি আরো বলেন, ”এই অর্থায়ন জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগণের জন্য অবিলম্বে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করবে।”

প্রকল্পটি কোভিড-১৯ সংক্রমণ চিহ্নিত করা, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা এবং একই সঙ্গে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি পরিস্থিতিতে জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। এছাড়া একটি সফল টিকাদান কর্মসূচির জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেবে এবং টিকা পরীক্ষায় ঔষধ প্রশাসন পরিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়াবে।

এই অর্থায়ন দেশের জনগণের প্রায় ২০ শতাংশের জন্য গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি (কোভ্যাক্স) এর মাধ্যমে প্রাপ্ত টিকা দেওয়ার ব্যয় বহন করবে। বাকি ১১ শতাংশ মানুষের জন্য, এই অর্থায়ন, উৎপাদকের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় অথবা কোভ্যাক্সের মাধ্যমে পাওয়া টিকার ব্যয়ভার ও টিকা প্রদানের ব্যয় বহন করবে। এর বাইরে সরকার নিজস্ব সম্পদের মাধ্যমে দেশের ৯ শতাংশ লোকের জন্য টিকার ব্যয়ভার বহন করবে।

বিশ^ব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস্ অফিসার ও প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার ইফফাত্ মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি ব্যবস্থাপনায় সুদীর্ঘ ও সফল অভিজ্ঞতার আলোকে এই অর্থায়ন সেই সমস্ত মানুষের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যাদের টিকার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশী। এছাড়া প্রকল্পটি টেস্টিং ল্যাবরেটিরি স্থাপন এবং জেলা পর্যায়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র সম্প্রসারণে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।”

অতিরিক্ত এই অর্থায়নের ফলে প্রকল্পটিতে বিশ^ব্যাংকের সহায়তার পরিমাণ দাঁড়ালো ৬০০ মিলিয়ন ডলার। এর বাইরে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এই প্রকল্পে ১০০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করছে।

বিশ^ব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ( আইডিএ) থেকে ৩০ বছর মেয়াদি এই ঋণে ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ড (কিস্তি অব্যাহতির সময়কাল) রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চলমান আইডিএ কর্মসূচির সর্বাধিক অর্থায়ন রয়েছে, যার পরিমাণ ১৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বিশ^ব্যাংক বাংলাদেশের সহায়তায় এগিয়ে আসা প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের অন্যতম এবং এদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান এবং সুদবিহীন ও নমনীয় ঋনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কোভিড-১৯ এর প্রতিরোধে টিকার জন্য দক্ষিন এশিয়ায় প্রথম ধাপে যে তিনটি দেশকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অর্থায়ন এবং জ্ঞানের অন্যতম বৃহৎ উৎস বিশ^ব্যাংক কোভিড-১৯ এর স্বাস্থ্যগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় এসব দেশের সহায়তায় বিস্তৃত এবং দ্রুত কার্য্রক্রম হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নি¤œ এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য কোভিড-১৯ টিকা ক্রয় ও বিতরণ, পরীক্ষা, চিকিৎসা ও টিকাদান ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ১২ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা। এই সহায়তা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সামগ্রিকভাবে বিশ^ব্যাংক গ্রুপের বিস্তৃত কর্মসূচির অংশ যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা জোরদার, দরিদ্র মানুষের সহায়তা এবং ক্ষতিগ্রস্থদের জীবিকা নির্বাহ ও কর্মসংস্থানের জন্য সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে ১০০ টির বেশি দেশকে সহায়তা করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ