Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনার এক বছরে ১৪ হাজারের বেশি আত্মহত্যা

আঁচল ফাউন্ডেশনের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২১, ১২:০৫ এএম

দেশে করোনাভাইরাসের মহামারির গত এক বছরে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী মানুষ। তবে আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি বলে জরিপে উঠে এসেছে। মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন ‘আঁচল ফাউন্ডেশনের’ পক্ষ থেকে গতকাল শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছরের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৭ মার্চ পর্যন্ত দেশে আত্মহত্যা করেছেন ১৪ হাজার ৪৩৬ জন। এরই মধ্যে ৮ হাজার ২২৮ জন নারী (৫৭%) এবং ৬ হাজার ২০৮ জন পুরুষ (৪৩%)। আত্মহত্যার কারণ বিশ্লেষণ করতে ফাউন্ডেশনটির জরিপ টিম আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে ৩২২টি কেস স্টাডি করেছে বলে জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমের তথ্য, হাসপাতাল, পুলিশ ও আঁচল ফাউন্ডেশনের টিমের সদস্যদের তথ্য সম্মিলন ঘটিয়ে এ পরিসংখ্যান দেয়া হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের বিষয় ছিলÑ করোনাকালীন পরিস্থিতে বেড়েছে আত্মহত্যার হার; মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে?

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি তানসেন রোজ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, করোনা শুরুর আগের বছর ২০১৯ সালে ১০ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছিল। সে হিসেবে এবার সংখ্যাটি বেশ উদ্বেগজনক। ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা আঁচল ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের মাঝে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে কাজ করে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, জরিপে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সীরা, যা কি-না মোট আত্মহত্যাকারীর ৪৯ শতাংশ। এরপরেই সব থেকে বেশি আত্মহত্যা করেছেন পাঁচ থেকে ১৯ বছর বয়সী মানুষেরা, ৩৫ শতাংশ। ৩৬ থেকে ৪৫ বছর বয়সী আত্মহত্যাকারী ১১ শতাংশ এবং ৪৬ থেকে ৮০ বছর বয়সী ৫ শতাংশ। অন্যান্য দেশে যেখানে পুরুষ আত্মহত্যাকারীর সংখ্যা বেশি, সেখানে বাংলাদেশে ঠিক তার বিপরীত। বাংলাদেশে নারী আত্মহত্যাকারী ৫৭ শতাংশ, পুরুষ আত্মহত্যাকারী ৪৩ শতাংশ।

আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা তানসেন রোজ বলেন, তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আমি একজন তরুণ হিসেবে শঙ্কিত। যে হারে মানসিক সমস্যা বাড়ছে সে হারে বাড়ছে না সচেতনতা। যে কারো আত্মহত্যা করার পেছনে আমাদের পরিবার, সমাজ ও দেশেরও দায় রয়েছে। একটা মানুষ কেনো আত্মহত্যা করে তা নিয়ে নির্মোহ বিশ্লেষণ করা দরকার। পারিবারিক, সম্পর্কজনিত, আর্থিক, পড়াশোনা এবং অন্যান্য বিভিন্ন কারণে মানুষ আত্মহত্যা করেছে। সর্বাপেক্ষা বেশি ৩৫ শতাংশ আত্মহত্যা করেছে বিভিন্ন পারিবারিক কারণে, এরপরেই ২৪ শতাংশ আত্মহত্যা করেছেন সম্পর্কজনিত কারণে, আর্থিক ও লেখাপড়াজনিত কারণে আত্মহত্যার পরিমাণ যথাক্রমে ৪ শতাংশ ও ১ শতাংশ এবং সর্বশেষ অজানা বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩২ শতাংশ।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে আমাদের জোর দাবি, প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়। পাশাপাশি পরিবার কীভাবে আত্মহত্যা কমাতে ভ‚মিকা রাখতে পারে সে বিষয়ে রূপরেখা দাঁড় করানো দরকার। সবাইকে সচেতন না করতে পারলে ফলাফল অধরাই থেকে যাবে। এসময় মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আজহারুল ইসলাম বলেন, মানসিক অবসাদের কারণেই মূলত আত্মহত্যাগুলো হচ্ছে। নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে আত্মহত্যা ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোসহ ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ