পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যে কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে প্রকল্প পরিকল্পনায় গলদ থেকে যাচ্ছে, বা যাদের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সম্মেলন কক্ষের এই সভায় যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একনেক সভায় সংশোধনের জন্য উপস্থাপিত ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির মেয়াদ তিন বছর এবং ব্যয় ২ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব আসায় প্রধানমন্ত্রী ওই নির্দেশনা দেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটির ব্যয় কেন বাড়ছে তা বিশ্লেষণে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল প্রকল্পে ডিজাইন ছিল না। কাদের গাফিলতির জন্য প্রকল্পের ডিজাইনটা ইনকারেক্ট হল, আমাদের সময়-অর্থ দুটোই অপচয় হল, তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নিন। আগামীতে যেন এমন আর না হয়, সেজন্যও প্রধানমন্ত্রী সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যখন কোনো প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাব আসে, তখন সেখানে দুই-একটি নতুন বিষয় যুক্ত হতে দেখা যায়। সেসব যুক্ত করতে গিয়েই যে প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বেড়ে যায়, প্রধানমন্ত্রী তা তুলে ধরেন বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাহলে প্রকল্প যখন তৈরি করা হয়, তখন কি এই সকল বিষয় দেখেন নাই? আপনারা কি তাহলে প্রকল্পের সাইটে যান নাই, তাহলে নতুন সেতু কোথা থেকে পাচ্ছেন?
বৈঠকে সরকারপ্রধানের দেওয়া নির্দেশনা তুলে ধরে মান্নান বলেন, তিনি অর্ডার দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে। যাদের কারণে প্রকল্পের সময়-ব্যয় বাড়ল, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, প্রকল্পের স্থান নির্বাচনেও সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কোনো ব্যক্তির স্বার্থে বাড়ির পাশে ব্রিজ নির্মাণ করা যাবে না, জনগণের প্রয়োজনে ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। সেতু নির্মাণ করার সময় দেখতে হবে যেন নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয়। সুতরাং এই প্রকল্পে যারা আছেন, এলজিইডির, তারা সাবধানতা অবলম্বন করবেন। ঢাকার চারপাশে নৌপথ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর পর বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেখা গেল, অনেক স্থানে বাধাগ্রস্ত হয়। ব্রিজ এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যেন নৌ চলাচলে বাধাগ্রস্ত না হয়।
প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অনেক ছোট ছোট ঠিকাদার আছেন, তাদের কীভাবে যুক্ত করা যায়, সেই বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা আইন লংঘন না করে আইনের প্রতি সম্মান রেখে অন্যান্য ঠিকাদাররা যাতে আসতে পারে, যাতে করে ঠিকাদারি কাজে বৃহদাকারে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে, আপনারা সেই দিকে নজর দেবেন।
এদিন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশসহ পারিপার্শ্বিক এলাকায় বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৪৭ কোটি ২১ লাখ টাকা।
মিরসরাইয়ে বিশাল চরাঞ্চল জুড়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুন্ড উপজেলা এবং ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’ স্থাপনের কাজ চলছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এই শিল্প নগরীতে বেসরকারি বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করার উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি অুনমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পটির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরকে জলবায়ু সহিষ্ণু পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেবাভিত্তিক শিল্প এলাকার জন্য বেসরকারি খাতে একটি গতিশীল বাজার ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৩৭৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে। বিশ্ব ব্যাংক ঋণ সহায়তা হিসেবে জোগান দেবে ৩ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একনেক বৈঠকে এটিসহ মোট ১১ হাজার ৩২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ের আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্য প্রকল্পগুলো, ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। এর ব্যয় বাড়ছে ২ হাজার ৫৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’; এর ব্যয় ২ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা। ‘টাঙ্গাইল জেলার ১০টি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (প্রস্তাবিত)’ প্রকল্প; এর ব্যয় ২৭২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ‘যানবাহন চালনা প্রশিক্ষণ’ প্রকল্প; এর ব্যয় ১০৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
‘তৃণমুল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন’ প্রকল্প; এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্প; এতে ব্যয় হবে ৩৫৩ কোটি টাকা। হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন’ প্রকল্প; এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।