পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ইভিএম মাধ্যমে ভোট দিচ্ছি। সেখানে ভোট নিয়ে কারচুপি করার কোন সুযোগ নেই। যার যার ভোট সে নিজে দিচ্ছে। এখন আর ‘দশটা হোন্ডা বিশটা গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা‘র দিন নেই, সে ধরনের ভোট বন্ধ হয়ে গেছে। ভোট বন্ধ একটা ঘোষণা করে দিল, সেটাও এখন আর নেই। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ছোট খাটো দুই একটা ঘটনা ছাড়া অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে জনগণ ভোট দিয়েছে। ভোট দেয়ার আগ্রহ মানুষের মাঝে আমরা লক্ষ্য করেছি। সেজন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সমাপনী ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করছিলেন। রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশনে সংসদ নেতার সমাপনী বক্তব্যের আগে বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলীয় নেতা। এবারের অধিবেশনে একদিনও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদেরকে দেখা যায়নি। জিএম কাদের করোনা আক্রান্ত হলেও এখন তিনি করোনামুক্ত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে-বিদেশে নানা অপপ্রচার হচ্ছে, শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। মুজিবের বাংলায় কেউ গৃহহীন থাকবে না। ইতোমধ্যে ৭০ হাজার গৃহহীনকে ঘর দেয়া হয়েছে। আরো এক লাখ ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসব ঘর হস্তান্তর করা হবে। পদ্মা সেতু নিয়ে সমালোচনার জবাবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে শেষ পর্যন্ত নৌকায় উঠতে হবে।
সমাপনী ভাষণে শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতার অনুপস্থিতির কথা তুলে ধরে বলেন, এই অধিবেশন করোনার সময়ে চলছে। যার জন্য হয়তো সকল সংসদ সদস্যকে একই সাথে আনা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের বিরোধী দলীয় নেতার এখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার বাসায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে তিনি জনগণের কথা চিন্তা করে এখানে আসেননি। আমরা তার বক্তৃতা শুনতে পারলাম না এজন্য আমি দুঃখিত, কিন্তু তার ভেতর যে জনগণের প্রতি কল্যাণমূলক চিন্তা তার জন্য তাকে ধন্যবাদ। তিনি আসলে ভালো হতো আমরা তার বক্তব্যও শুনতে পেতাম।
পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তব্যের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে এত কথা অথচ এরকম একটা কাজ নিজস্ব অর্থায়নে করলাম। সেটার প্রশংসা তো করতেই পারলো না। উল্টো বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিল জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু করা হচ্ছে কেউ উঠবেন না। তাহলে নদীটা পার হবে কিসে স্পিকার। যদি নৌপথে যেতে হয় তাহলে নৌকায় যেতে হবে। উপায় তো নাই। তাকেও এখন নৌকায় চড়তে হবে। তিনি হাস্যরস করে বলেন, আমাদের নৌকা অনেক বড়, কোন অসুবিধে নাই। আমাদের নৌকা অনেক বড় সবাইকে নেব, তবে দেখে নেব কেউ আবার নৌকায় বসে নৌকা ফুটো না করে।
সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১২ বছর সরকার একটানা ক্ষমতায় থাকায় উন্নয়নকাজ দৃশ্যমান হয়েছে। একসময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বাংলাদেশ চলতো। একেকটা দলের একেকটা নীতি আছে। বিএনপি বলেছিল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না। অনেক প্রশ্ন তারা করেন, সমালোচনা করেন। আয়নায় মনে হয় ভালো করে চেহারা দেখেন না। আয়না দেখেন নিশ্চয়ই সেটা মেকআপের জন্য। কিন্তু নিজেদের কাজগুলো দেখেন না। তিনি বলেন, তার সরকার দেশকে নিজ পায়ে দাঁড় করাতে চেয়েছে। সেটা পেরেছে। জনগণ ভোট দিয়েছে, তাদের মর্যাদা রক্ষা করা, সেবা করা সরকারের দায়িত্ব। শত্রæর মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
বিএনপি’র রাজনীতির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি যখন একটা দলের নেতা, স্বাভাবিকভাবে তাদের ওপর মানুষের আস্থা থাকে না, বিশ্বাস থাকে না। মানুষ এখন আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সেবা পাচ্ছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে দেশের মানুষের কল্যাণ হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে মানুষের আস্থা বিশ্বাস আওয়ামী লীগ অর্জন করেছে। যার প্রতিফলন দেখলাম স্থানীয় সরকার নির্বাচন গুলিতে। মানুষ এখন আন্তরিকভাবে ভোট দিচ্ছে। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে নির্বাচন মানে কি ছিল? সবাই জানে। যাদের গায়ে হাজার কালির ছিটা তারা আবার এতো বড় কথা বলে মুখে। আমরা ইভিএমে মাধ্যমে ভোট দিচ্ছি। সেখানে ভোট নিয়ে কারচুপি করার কোন সুযোগ নেই। যার যার ভোট সে নিজে দিচ্ছে। এখন আর ’দশটা হোন্ডা বিশটা গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা‘ সে পদ্ধতি নেই। বা ভোট হয়ে গেছে। ভোট বন্ধ একটা ঘোষণা করে দিল, সেটাও এখন আর নেই। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ছোট খাটো দুই একটা ঘটনা ছাড়া অত্যন্ত সুষ্ঠভাবে সুন্দরভাবে জনগণ ভোট দিয়েছে। ভোট দেওয়ার আগ্রহ মানুষের মাঝে আমরা লক্ষ্য করেছি। সেজন্য দেশবাসীকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ।
করোনা ভাইরাস বিশ্ব থেকে চলে না যাওয়া পর্যন্ত সকলকে মাস্ক পরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যারা করোনার ভ্যাকসিন নেবেন তাদেরও মাস্ক পরে চলতে হবে। পরিস্থিতি আরো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভ্যাকসিনের যখন গবেষণা শুরু হয় তখনই আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলাম কারা গবেষণা করছে, আগে থেকে ঠিক করে রাখার। ভ্যাকসিন বাজারে এলেই আমরা কিনবো। এজন্য আমরা এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখি। যখনই বাজারে আসে তখনই ক্রয় করি। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকে কথা বলেছিলেন। আসলে করোনা ভ্যাকসিনই সেই সামলোচনার উত্তর দিয়েছে। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আমরা ক্রয় করেছি। এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর খারাপ কোনো রিঅ্যাকশনের কথা শোনা যায়নি। তারপরও আমরা মনিটর করছি। আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি থেকে সারাদেশে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। প্রথম কারা করোনা ভ্যাকসিন পাবেন সেটাও আমরা ঠিক করে ফেলেছি। এ নিয়ে দেশে প্রশংসা শুনিনি। কিন্তু জাতিসংঘের মহাসচিব প্রশংসা করেছেন।
সংসদ নেতা বলেন, যারা ক্ষমতায় থাকতে ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশ তখন সারা বিশ্বে দুর্নীতিতে এক নম্বর। দুর্নীতির দায়ে এতিমের অর্থ আত্মসাৎতের দায়ে যাদের কারাবরণ করতে হয়। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারির মামলা, গ্রেনেড হামলা করে প্রকাশ্যে দিবালোকে বিরোধী দলকে হত্যা বা আমাকে হত্যার প্রচেষ্টার মামলা, এসব মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত এরা যখন কোন দলের নেতৃত্বে থাকে সেই দল জনগণের কাজ করবে কিভাবে? জনগণ তাদের কাছ থেকে আস্তে আস্তে সরে গেছে।
সংসদের অধিবেশন সমাপ্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সফলভাবে এই অধিবেশন পরিচালনা করা হয়েছে। মনে হচ্ছে আমি একটা বড় কারাগারে বন্দি আছি। সংসদ চলার সময় আমি অধিবেশনে আসি, ভালো লাগে। সংসদে এসে সবার সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বলেন, এই অধিবেশনে এতো অল্প সময়ের মধ্যে ১৩২ জন সংসদ সদস্য প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর বক্তব্য দিয়েছেন। কাজেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন। করোনাকালে অধিবেশন পরিচালনার জন্য স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।