পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : পণ্যের চাহিদা বিশ্লেষণ করে নতুন নতুন আন্তর্জাতিক বাজার খুঁজতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা ব্যবসায়ের জন্য ক্ষমতায় আসিনি। ব্যবসায়ীদের সবরকমের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করছি, যেন তারা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেন। গত সাত বছরে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আপনারা নতুন নতুন বাজার খুঁজে বেড়ান। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা সেটা বিশ্লেষণ করে বাজার খুঁজুন। বাজার নিজেদের খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সবরকমের সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু বাজার খোঁজার উদ্যোগটা আপনাদেরই নিতে হবে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যা-যা করার দরকার সরকার তা তা করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্টে অনুস্বাক্ষর করেছি। খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিনের ব্যবহার রোধকল্পে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ফরমালিন কন্ট্রোল অ্যাক্ট, ২০১৫ প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ব্যবস্থাপনায় বিদেশে ১৯৬টি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নেয়। বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও রপ্তানি পণ্য প্রদর্শনীর জন্য চীনের সহায়তায় মুন্সিগঞ্জ জেলার বাউশিয়াতে প্রায় ৫৩১ একর জমির ওপর একটি অত্যাধুনিক গার্মেন্টস শিল্প পার্ক নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে ১০টির কাজ এগিয়ে চলছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পণ্য ও বাজার বহুমুখী করার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধিক মূল্য সংযোজিত পণ্য উৎপাদনে ও দেশজ কাঁচামাল নির্ভর রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে আপনাদের মনোনিবেশ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দাটা যদি না হতো, আমাদের রপ্তানির টাকার অংকটা আরও বেশি দেখাতে পারতাম। তারপরও রপ্তানিতে যা আয় হচ্ছে, সেটা বড় কথা।
দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করেছি। খাদ্য ক্রয় করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতো। এখন তা হয় না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কোনো ব্যবসায়ী ঠিক মতো ব্যবসা করতে পারেননি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় আসার পর সার্বিক পরিকল্পনায় ব্যবসা খাতকে এগিয়ে নিতে থাকি।
তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করে বলেন, তারা ক্ষমতায় থাকতে কেবল স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিজেদের জন্য কাজ করেছে। কিন্তু আমরা দেশের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন এদেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিতে। কিন্তু ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়। তারপর ২১ বছর বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা ক্ষমতায় এসে রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ শুরু করি। সবখাতের মতো ব্যবসা খাতের উন্নয়নেও কাজ শুরু করি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর আবারও দেশ পিছিয়ে যায়। ৭ বছর পর আমরা আবারও ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে কাজ করি। ২০০৯ সালে বিশ্বব্যাপী মন্দা ছিলো। প্রতিটি ক্ষেত্রে ভয়ভীতি কাজ করতো। সব দূর করে আমরা মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছি।
বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণকারীদের। একইসঙ্গে স্মরণ করেন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মরফুহা সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ২০১১-২০১২ ও ২০১২-২০১৩ বছরের জন্য সর্বমোট ১১৩টি জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ও সনদ বিতরণ করা হয়, যার মধ্যে ৫২টি স্বর্ণ, ৩৭ রুপা, ২৪ ব্রোঞ্জ ট্রফি রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।