পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সবরকম প্রস্তুতি রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবরকম প্রস্তুতি আমরা নেব। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়- এ পররাষ্ট্রনীতি নিয়েই আমরা চলবো এবং আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ চাই না -যোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মিডশিপম্যান ২০১৮ আলফা এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার (ডিইও) ২০২০ ব্রাভো ব্যাচের কোর্স সমাপনী রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের সব ধরনের উদ্যোগ যেন থাকে এবং প্রশিক্ষণ থাকে, সেইভাবে আমরা আমাদের প্রতিটি বাহিনীকে আমরা গড়ে তুলছি। আমাদের লক্ষ্য এই স্বাধীন দেশ সবসময় বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে এবং আমরা আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবরকম পস্তুতি নেব। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি আরো বলেন, তার সরকার নৌবাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার জন্য ইতোমধ্যে ২৭টি যুদ্ধ জাহাজ সংযোজন করেছে। ২০১৭ সালে নৌবহরে ২টি অত্যধুনিক সাবমেরিন সংযোজন করে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে এভিয়েশন সিস্টেম সংযোজনসহ সরকার এই বাহিনীকে একটি পূর্ণ ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি, আরো উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য নেভাল একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সও নির্মাণ করা হয় এবং নৌবাহিনীর সদস্যদের আবাসন সমস্যা সমাধানেরও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ’৯৬ সালে সরকারে আসার পর খুলনা শিপইয়ার্ড নৌবাহিনীকে প্রদানের তথ্য উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ড দুটিও নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছি। লক্ষ্য হলো, আমাদের নিজস্ব শিপইয়ার্ডেই আমরা যুদ্ধ জাহাজও তৈরি করবো। যার কাজ ইতোমধ্যে কিছু কিছু শুরু ও হয়েছে। তাছাড়া, কক্সবাজার এবং পেকুয়াতে সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে এবং রামনাবাদে নৌবাহিনীর ঘাঁটি স¤প্রসারণের কাজ চলছে। এ সবের মাধ্যমে আমরা আমাদের সমুদ্র সম্পদকে যেন উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করতে পারি, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীকে অনুষ্ঠান থেকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয় এবং তিনি মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজও প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় প্রশিক্ষণে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। মিডশিপম্যান মেহরাব হোসেন অমি সেরা চৌকষ মিডশিপম্যান হিসেবে সোর্ড অব অনার লাভ করেন। অনুষ্ঠানে মিডশিপম্যান এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসারদের শপথ বাক্য ও পাঠ করানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী নবীন কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের ২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন সারথী আখ্যায়িত করে বলেন, আজকের কমিশনপ্রাপ্ত নবীন অফিসার সেসময় স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। তখন আপনারাই হবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। কাজেই, এদেশের লক্ষ্য-২০৪১ অর্জনের ক্ষেত্রে আপনারাই মূল সৈনিক হিসেবে কাজ করবেন এবং দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আমি আশা করি, চাকরি বা ব্যক্তি জীবনের যে কোন সঙ্কট অতিক্রমে আমাদের এই নবীন অফিসাররা সব থেকে বেশি দক্ষ হবে। তোমরা যেন উন্নত জীবন যাপন করতে পার এবং দেশের সেবা করতে পার, সেজন্য আমার দোয়া থাকলো তোমাদের জন্য।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে সৃষ্ট স্থবিরতার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সংক্রমণ যেন ব্যাপকভাবে আমাদের দেশে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য এবং দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে তার সরকার জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদযাপন এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি আয়োজন করছে। করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য সরকার বিশেষ প্রণোদনা যেমন দিয়েছে তেমনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সার্বিক নির্দেশনাও প্রদান করেছে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে যেন ছড়িয়ে না পড়ে বা সবাই যেন আক্রান্ত না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখাটা সকলের দায়িত্ব। আমি আশা করি, সবাই এ বিষয়ে ব্যাপকভাবে সচেতন থাকবেন। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরই জাতির পিতার ১৯৭৪ সালে প্রবর্তিত প্রতিরক্ষা নীতিমালাকে সময়োপযোগী করে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন এবং সমুদ্রসীমায় যে অধিকার রয়েছে তা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যদিও জাতির পিতা ১৯৭৪ সালেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালেই ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস এন্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট’ নামে সমদ্র আইন করে যান। তথাপি, জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকারসহ কোন সরকারই এই সমুদ্র আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি। আমাদের সমুদ্র সীমায় যে অধিকার রয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে সমুদ্রসীমা অর্জন করতে সমর্থ হই। সেক্ষেত্রে উভয় প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এই মামলা জয়কে তার সরকারের অন্যতম কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যুগোসøাাভিয়া ও ভারত থেকে ৫টি আধুনিক রণতরী সংগ্রহ করেন, নৌবাহিনীর বৃহত্তম প্রশিক্ষণ ঘাঁটি বানৌজা ঈসা খান কমিশনিং করেন এবং নৌবাহিনীকে ‘নেভাল এনসাইন’ প্রদান করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের জন্য ব্যাপকভাবে ‘মুজিববর্ষ’ পালন না করে সীমিত আকারে করলেও দেশ ও জাতির জন্য যেটা ‘সবথেকে কল্যাণকর’ তেমনই কিছু কর্মসূচি তার সরকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমাদের সিদ্ধান্ত মুজিববর্ষ প্রতি ঘরে আমরা বিদ্যুতের আলো জ্বালবো। সেইলক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ৯৯ ভাগ মানুষের ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। ইন শা আল্লাহ শতভাগ গৃহে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছাব। দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, সেই নীতি নিয়ে সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং নৌবাহিনীর মাধ্যমে সরকারের এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের শুরু হয়, বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এবারে ৩১ জন মিডশিপম্যান এবং ৩২ জন ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৬৩ জন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন।
ঢাকা শিশু হাসপাতালকে ১০ কোটি টাকা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
জন্মগত শিশু হৃদরোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানায় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন। বিনা অপারেশনে জন্মগত শিশু হৃদরোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেয়ার লক্ষ্যে এ আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সফি আহমেদের কাছে ১০ কোটি টাকার চেকটি হস্তান্তর করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।