Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘মোটা চাল ছেঁটে মিনিকেট করায় পুষ্টি ঘাটতির শঙ্কা বাড়ছে!’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:২৩ পিএম

মোটা বোরো চাল কেটে মিনিকেট নামে যে চালে বাজার সয়লাব, তাতে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবারসহ পুষ্টিগুণ থাকে না। তারপর সেই পুষ্টির ঘাটতিপূরণে দেশের মানুষের মাছ-গোশত সবজি খাওয়ার প্রবণতাও কম বলে মনে করেন গবেষকরা।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) পুষ্টি নিরাপত্তায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড-২০২০ এর ভার্চুয়াল আলোচনায় বলা হয়, জনগণের খাদ্যাভ্যাসও একটা বড় সমস্যা। তারা পেটেরক্ষুধা মেটানোকেই বেশি গুরুত্ব দেন।

কম দামের পুষ্টিকর খাদ্য চিহ্নিত করে সে তালিকা প্রযুক্তির ব্যবহারে ছড়িয়ে দিলে গরিব জনগোষ্ঠীর পুষ্টি পরিস্থিতিতে ইতিবাচক ফল পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন আলোচকরা।

মূল প্রবন্ধে কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. এম এ সাত্তার মন্ডল বলেন, নিউট্রিশন লেন্স নীতিমালায় গুরুত্ব দিলে পুষ্টি বৈচিত্র্য ও করণীয় সম্পর্কে কৌশল হাতে নেয়া সহজ হবে। দেখা গেছে, গত দশ বছরে খাদ্যের প্রাপ্যতা বাড়লেও মাছ ছাড়া সবজি, গোশত, দুধ গ্রহণের মাত্রা ততটা বাড়েনি।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের জন্মলগ্নে বার্ষিক ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হতো। গত পাঁচ দশকে তা চারগুণ হয়েছে। দেশে বর্তমানে বার্ষিক চালের উৎপাদনই ছাড়িয়েছে সাড়ে তিন কোটি টন। গত এক দশকে চালের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। পাশাপাশি সবজি, ফল, ডাল, মাছ, গোশতের মতো খাদ্যপণ্যেও অগ্রগতি অব্যাহত আছে। তবে নিম্ন আয় আর অসচেতন খাদ্যাভাসের কারণে এখনও সুষম খাদ্য পায় না বড় জনগোষ্ঠী।

গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামের কৃষকরা খাদ্য উৎপাদন করলেও শহরের মানুষ মাছ, গোশতসহ পুষ্টিকর খাবার বেশি খায়। তবে ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল- এ ছয় বছরে অপুষ্টিতে থাকা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৪১ থেকে ৩১ শতাংশে নামিয়েছে বাংলাদেশ। এরপরও ৫ বছরের কম বয়সী ৩ শিশুর একজনই বঞ্চিত পুষ্টিকর খাবার থেকে। যা করোনা মহামারিতে আরও বাড়ছে বলে মনে করেন কানাডীয় হাইকমিশনার বেনওয়া প্রিফেন্টেইন।

তবে তার মতে, আশার কথা হলো চলতি মাসেই বৈশ্বিকক্ষুধা ও পুষ্টি সমস্যাকে সামনে রেখে একটা কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে। যেখানে উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশকে ৩০০ কোটি ডলারের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে কানাডা সরকার দেবে ৫১ কোটি ডলার। আগামী ৫ বছর ধরে পাওয়া এ অর্থ এদেশের প্রান্তিক মানুষের পুষ্টিকর খাবার প্রাপ্তিতে ইতিবাচক ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে পুষ্টিকর খাবারকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না, পাশাপাশি সরকারের ভর্তুকিও শস্য উৎপাদন নির্ভর বলে মনে করেন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি মনে করেন মাছ, গোশত বা দুগ্ধ উৎপাদনে খরচ মিটিয়ে তা লাভজনক করতে হিমশিম খায় খামারিরা। তিনি জানান, এসব সমস্যা চিহ্নিত করে বিভিন্ন পরিকল্পনাও গ্রহণ করছে সরকার।

পুষ্টি নিরাপত্তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী প্রচারণা ও আধুনিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হয়ে ইতিবাচক ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ