পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের বিপদজনক উপসর্গ শ্বাসযন্ত্রে (ফুসফুস) সংক্রমণ। এ সংক্রমণ শ্বাসযন্ত্রে পৌঁছালে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটছে। শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের উপশমে বিস্ময়কর প্রতিকার মিলছে ‘কুস্ত’ বা ‘কোস্টাস রুট’ নামের একটি ওষুধি গাছে। সুপ্রিম কোর্ট বারের এক আইনজীবীর গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য। ইন্দোনেশিয়া, মিসর, সউদী আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কুস্তের ব্যাপক প্রয়োগ হচ্ছে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায়। গালফ নিউজে বলা হয়েছে, ইয়েমেন করোনা মোকাবেলায় ট্র্যাডিশনাল হার্বস মেডিসিনে ঝুঁকছে। এ হার্বসের মধ্যে কুস্তও রয়েছে। কাকতালীয় হলেও করোনাভাইরাসের সঙ্গে কুস্তের ফুলের সাদৃশ্য রয়েছে। যা সত্যি অভাবনীয়।
মিসরের সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাহমুদ সাইফ আল ইসলাম ও সউদী আরবের আল মারেফা বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাহ মোহামেদ এল সাইদের নেতৃত্বে ১৭ জনের গবেষণায় কুস্তের কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে মিসরের বেনি সুয়েফ বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয় ও সউদী আরবের মক্কার ম্যাটারনিটি ও চাইল্ড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেও কুস্তের সাফল্য প্রমাণিত হয়েছে।
এসব দেশের সা¤প্রতিক গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগেই ‘কুস্ত’র বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় তিনি গত এপ্রিলের শুরুতে ‘রিসার্চ অন প্রোফেটিক মেডিসিন টু কমব্যাট কোভিড-১৯’ শীর্ষক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। এটি গত ৯ এপ্রিল অক্সফোর্ড ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইমেলে পাঠিয়েছিলেন তিনি। এরপর গত ২৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর ইমেলে পাঠান।
ব্যারিস্টার রিয়াজ উদ্দিন যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির ‘ক্যামব্রিজ বিজসেন অ্যান্ড ল’ একাডেমীর প্রিন্সিপাল।
কুস্ত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধী। যা কুস্ত আলহিন্দ নামের একটি গাছের শিকড়। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে এটি সহজলভ্য। ইসলামী চিকিৎসাশাস্ত্রে কুস্ত ‘প্রোফেটিক মেডিসিন’ হিসেবে পরিচিত। সউদী আরবে এটিকে ‘নবায়ী তিব্বুন’ বলা হয়। সহীহ বা বিশুদ্ধ হাদিসে এটি গলাব্যাথা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে।
গবেষণাপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যারিস্টার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসে সংক্রমণ প্রতিরোধে কুস্ত প্রয়োগ করা যেতে পারে। ফলে রোগীর শ্বাসকষ্ট কমবে। ভেন্টিলেটর ব্যবহার করতে হবে না। গবেষণাপত্রে সহীহ বুখারী হাদিসের (৫৬৭৮) উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘যাতুল জানব’ হিসেবে উল্লিখিত উপসর্গ প্লিউরিসি নামে পরিচিত যা ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এ প্রদাহই হলো নিউমোনিয়া। বুখারীর হাদিসে (৫৭১৫) প্লিউরিসির বিষয়ে উম কাইস বিনতে মিহসান (রা.) থেকে বর্ণিত হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, নিউমোনিয়া ও গলা ব্যাথা থেকে সুস্থ হতে ‘কুদ আলহিন্দ’ মুখের ভেতরে এক পাশে রাখো। এতে ৭টি রোগের উপশম রয়েছে। বুখারীর আরেকটি হাদিসে (৫৬৯৬) হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সন্তানদের গলা ব্যাথা হলে ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে তাদের কোস্টাস দাও।
হাদিসে বর্ণিত এ ‘কুস্ত আলহিন্দ’ই হলো কুস্ত। দুই ধরনের কুস্ত রয়েছে- কুস্ত আলহিন্দ ও কুস্ত আলবাহরি। কুস্ত আলহিন্দ কিছুটা গাঢ় এবং কুস্ত আলবাহরি হলো কিছুটা হালকা উজ্জ্বল। পুরনো ঢাকার চকবাজারের কুস্ত পাওয়া যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।