পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) পরিচালক ড. সৈয়দ এহসানুল করিম বলেছেন, দেশে ২১শ’ কোটি টাকার মোটরসাইকেলের বাজারের মধ্যে দেশীয় শিল্পের দখলে মাত্র ২০ কোটি টাকার বাজার। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হলে মাত্র ৫ থেকে ৭ বছরে ২১শ’ কোটি টাকার পুরোটাই দেশীয় শিল্পের দখলে আনা সম্ভব। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে হালকা প্রকৌশল শিল্প: মোটরসাইকেল শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ উন্নয়ন প্রেক্ষিত এক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিল্পসচিব কে এম আলী আজম। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরীয়া এবং বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পসচিব কে এম আলী আজম বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ জন্য শিল্পায়নের কোনো বিকল্প নেই। তাই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন শিল্পের নীতি তৈরি ও বাস্তবায়ন এবং সহায়তা করতে চায় সরকার। হালকা প্রকৌশল শিল্পকে গুরুত্ব দিয়েছেন বলেই প্রধানমন্ত্রী এই শিল্পকে ২০২০ সালের বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। দেশের শিল্প খাতের বিকাশে সরকারের এই ঘোষণা ও বিভিন্ন উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরীয়া বলেন, শুল্ক ও আমদানি পর্যায়ে সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিয়ে মোটরসাইকেল অ্যাসোসিয়েশন নেতারা যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। শিল্প ও বাণিজ্য খাতকে ন্যায়সংগত সব ধরনের নীতি সহায়তা দিয়ে প্রস্তুত আছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
বিশেষ অতিথি বিটাক মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, মোটরসাইকেল শিল্পে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বিটাক। এর ফলে এই খাতের কারিগরি সক্ষমতা বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশের প্রয়োজনীয় হালকা প্রকৌশল খাতের ৭০ হাজার কোটি টাকার পণ্যের চাহিদার মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ দেশীয় শিল্পসমূহ সরবরাহ করে থাকে। আগামী পাঁচ বছরে দেশের মোটরসাইকেলের বাজার দ্বিগুণেরও বেশি বাড়তে পারে। তাই এই খাতের বিভিন্ন সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে দেশের শিল্পায়নকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে উদীয়মান বৃহৎ শিল্পসমূহের মধ্যে মোটরসাইকেল অন্যতম। দেশে ৭টি স্থানীয় ও ৮টি আন্তর্জাতিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৩৮টি মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী ও সংযোজনকারী শিল্প রয়েছে। এ শিল্পের বার্ষিক উৎপাদন আনুমানিক ৪ লাখ ৪০ হাজার ইউনিট, যা মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ। এ শিল্পের উন্নয়নে ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৮ প্রণয়ন করেছে।
কিন্তু এখনো এ শিল্পের অধিকাংশ উপকরণ যেমনÑ মোটরসাইকেল চেসিস, চাকা, হ্যান্ডেল বার, ব্রেক সিস্টেম, ফুয়েল ট্যাংক, প্লাস্টিকের পণ্য (মাডগার্ড, ফেন্ডার, সাইড কভার) ইত্যাদি বিদেশ থেকে আমাদনি করতে হয়। দেশীয়ভাবে এসব উপকরণ উৎপাদন সম্ভব হলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস ও বিপণন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।