পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২৪৮ কোটি টাকার ৫ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থেকে সরকারি প্রকল্পে অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। আগামী বাজেটের আগেই এ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, আমরা যদি বিশ্বাস করে সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতে পারি এবং সেগুলো ডলারে রিসিভ করতে পারি তাহলে ফান্ড ফ্লো ইনটেক থাকল এবং আমাদের ইনকামটাও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। অর্থমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, শিগগির আমাদের রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন অতিক্রম করবে। দেশের বাইরে বিনিয়োগ করলে এক বা দুই শতাংশ লাভ পাওয়া যায়। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী বৈদেশিক মুদ্রা সরকারি প্রকল্পে ব্যবহারের চিন্তা করছেন। আশা করা যায়, আগামী বাজেটের আগেই তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
গতকাল সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংবাদ বিফ্রিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।
রিজার্ভ বৃদ্ধি ও ব্যবহারে কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা আগেই ঠিক করেছিলাম ৩০ ডিসেম্বরের আগে রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাব, আমরা তার আগেই তা নিয়ে যেতে পেরেছি। এটিই জাতির জন্য পাওয়া। আমি মনে করি আমাদের কমিটমেন্ট আছে ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভকে ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাব। হিসাব করেই বলছি এবং প্রত্যাশা করি সে লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে পারব।
তিনি বলেন, রিজার্ভের মূল ভিত্তি হচ্ছে রেমিট্যান্স, এটি ব্যাংকের মাধ্যমে আসে। যে সময় ব্যাংকগুলোর চাহিদার চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে তখন তারা বাজারে বিক্রি করি। বাজারে বিক্রি করলে কিনে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং মূলত এ কারণেই রিজার্ভ বাড়ে। জুলাই থেকে নভেম্বর পাঁচ মাসে ১১ বিলিয়ন ডলার অর্জন করেছি। বছরের টার্গেটের ৬০ শতাংশ পাঁচ মাসে চলে এসেছে। এই ফ্লো অব্যাহত রাখতে পারলে রিজার্ভ ফান্ড বেড়ে যাবে। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ১০০ মিলিয়ন ডলারের মতো পেমেন্ট করেছি, সেটাও ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ থেকে যাচ্ছে। সবকিছু যাওয়ার পরও ৪২ বিলিয়ন ডলার নেট হাতে আছে। প্রধানমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, আমি মনে করি এজন্য বাইরে ইনভেস্ট করলে ১ থেকে ২ শতাংশের বেশি আমরা পাই না।
এদিকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। এসবের মধ্যে দুটি প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আরেকটি প্রস্তাব সংশোধন করে পরবর্তী বৈঠকে উপস্থানের জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকি পাঁচটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৪৮ কোটি ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৭৫৭ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) আওতায় অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মোটরযানের কর ও ফি আদায়ের অতিরিক্ত সেবা ক্রয়ে সার্ভিস প্রোভাইডার মেসার্স কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস-কে (সিএনএস) চুক্তি মূল্যে বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছিল। পরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে ১০০ ওয়াট পিক ক্ষমতাসম্পন্ন ৪০ হাজার সোলার হোম সিস্টেম ও ৩২০ ওয়াট পিক ক্ষমতাসম্পন্ন ২ হাজার ৫০০ সোলার কমিউনিটি সিস্টেম স্থাপনের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। কিছু বিষয় সংশোধন করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করতে প্রস্তাবটি ফেরত দেয়া হয়।
অতিরিক্ত সচিব জানান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) থেকে কাফকো থেকে ৯ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৬৮৭ টাকা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, বিসিআইসি থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে নবম লটে ২৫ হাজার মেট্রিক টন (১০%+) বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার ৫৫ কোটি ৮০ লাখ ১৫ হাজার ৩১২ টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বিসিআইসি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সউদী আরব থেকে ১১তম লটে ২৫ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার ৫৬ কোটি ৭০ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর বাংলাদেশ পাওয়ার সেক্টর ডেভেলমেন্ট অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ প্রকল্পের আওতায় নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই (এনইএসসি) এলাকায় জিআইএস বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমেরিকার ‘এনআরইসিএ ইন্টারন্যাশনাল’কে ৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮০৮ টাকায় নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
ড. সালেহ জানান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সিলেটের কুমারগাঁও ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের এনার্জি প্রিমা লিমিটেডের সঙ্গে সরকারের চুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাবটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রত্যাহার করে নেয়ায় সভায় কোনো আলোচনা হয়নি।
তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ২ হাজার ৯০০ কিলোমিটার ১১ কেভি ওভারহেড ইনসুলেটেড কন্ডাক্টর কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ২৬ কোটি ১২ লাখ ৫৪ হাজার ৭০০ টাকা।
এর আগে সভায় জরুরি ভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের জন্য ৭৫ কোটি টাকার ঢেউটিন সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার দেয়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।