পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনাকালে বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ চাল (জিআর) এবং শতভাগ মানুষ নগদ আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। করোনা মহামারির মধ্যে চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশের ৩৭টি জেলা বন্যা কবলিত হয়েছিল।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সিপিডি, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে যৌথভাবে আয়োজিত ‘করোনা ও বন্যা মোকাবেলায় ত্রাণ কর্মসূচি এবং কৃষি প্রণোদনা: সরকারি পরিষেবার কার্যকারিতা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মোস্তফা আমির সাব্বির মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সিপিডির ওই গবেষণার জন্য নেত্রকোনা জেলাকে নির্বাচিত করা হয়। ওই জেলার তথ্য যাচাই-বাছাই করেই মূল প্রবন্ধটি তৈরি করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। এর মাধ্যমে বন্যা কবলিত অন্যান্য জেলাগুলোতে সরকারি পরিষেবার একটি তুলনামুলক চিত্র পাওয়া যায়। ১২ থেকে ২৭ জুলাইয়ের মাঝে বন্যায় নেত্রকোনা জেলায় মোট ভূমির ৪৬ শতাংশ এবং প্রায় ৫৯ শতাংশ গ্রাম কবলিত হয়েছিল।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য বিতরণ করা হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে নগদ আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। সিপিডি বলছে, জেলা-উপজেলা উভয় পর্যায়ে সুষ্ঠুভাবে সুবিধাভোগী নির্বাচন ও তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রবন্ধে বলা হয়েছে, গত বন্যায় দেশের ১৬০টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৮টি। অন্যদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, বন্যায় ৩৭ জেলায় ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। ওই সময় তলিয়ে যাওয়া জমির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন।
সিপিডি’র ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল। এছাড়া নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখে যাচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজি বাস্তবায়নে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলোকে এই অতিমারি আরও কঠিন করছে। সাম্প্রতিক বন্যা নেত্রকোণার মতো তুলনামূলকভাবে বেশী দুর্যোগ প্রবণ হাওর অঞ্চলের পরিস্থিতি আরও সংকটময় করেছে। হাওর অঞ্চলে আয়ের মূল উৎস কৃষিখাত এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট কৃষকেরা সবথেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোভিড-১৯ এবং বন্যা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের মাধ্যমে বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে হঠাৎ বেকারত্বের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা (চাল); দেশব্যাপী নির্বাচিত বিপন্ন পরিবারগুলিকে সরাসরি নগদ সহায়তা (২,৫০০ টাকা) প্রদান এবং শিশুখাদ্য, গো-খাদ্য বিতরণ ইত্যাদি। এছাড়া, সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে তাদের মধ্যে বিনামূল্যে আমন ধানের বীজ বিতরণ করেছে সরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।