পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তোলা একটি স্থাপনা নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেললেও আরেকটির অবৈধ অংশ ভাঙেননি ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজী সেলিম। পুরান ঢাকার চকবাজারের ইমামগঞ্জ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ওই স্থাপনার অবৈধ অংশ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটি)। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাংসদের ওই স্থাপনার যে অংশ নদীর সীমানায় পড়েছে, তা বিআইডব্লিউটি উচ্ছেদ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ইমামগঞ্জ এলাকায় হাজী সেলিমের মালিকানাধীন ‘চাঁন সরদার কোল্ড স্টোরেজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কোল্ড স্টোরেজের মূল ভবনটি নদীর সীমানার বাইরে নির্মাণ করা হলেও তার সামনের জায়গাটিতে অস্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল।
জানা যায়, পুরান ঢাকার সোয়ারীঘাট এলাকায় নদীর জায়গা দখল করে বুড়িগঙ্গার তীরে স্থাপনা তৈরি করেছিলেন হাজী সেলিম। তিনি ওই স্থাপনায় মদিনা পানির ট্যাংকের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এতদিন নদীর জায়গা দখল করে রেখেছিলেন। ওই স্থাপনা অবশ্য তিনি নিজেই ভেঙে দিয়েছেন। মদিনা পানির পাম্প নামের বিজ্ঞাপনে মোড়ানো স্থাপনাটি একটি গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করা হতো বলে জানিয়েছেন সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা।
বিআইডব্লিউটি সূত্র জানায়, গতকাল সকাল ১০টার দিকে সোয়ারীঘাটের চাঁন সরদার কোল্ড স্টোর ইমামগঞ্জে অভিযান শুরু হয়। বিকেল ৪টায় সোয়ারীঘাটের মদিনা ট্যাংকে গিয়ে অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। আজ ফের সেই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।
গতকালের অভিযানে মোট ১৬৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এরমধ্যে ১০টি পাকা দোতালা, ২০টি পাকা একতলা, ২৫টি আধাপাকা, ৬০টি টং ঘর/টিনের ঘর ও ৫০টি মাছের গদি উচ্ছেদ করা হয়। সেখানে মোট দুই একর ভ‚মি দখলমুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উচ্ছেদ অভিযানে থাকা বিআইডব্লিউটিএর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের পর থেকে সোয়ারীঘাট পর্যন্ত সড়ক ঘেঁষে নদীর জায়গায় যেসব দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে, তার সবই অস্থায়ীভাবে নির্মিত। যারা নদীর জায়গায় দোকান বসানোর সাহস করেছেন, তারা কোনো না কোনোভাবে হাজী সেলিমের অনুসারী।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। বুড়িগঙ্গার তীরে ইমামগঞ্জ এলাকা থেকে অভিযান শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে সোয়ারীঘাট হয়ে অভিযান কামরাঙ্গীরচরের দিকে অগ্রসর হয়। পরে ৪টায় সোয়ারীঘাটের মদিনা ট্যাংকে গিয়ে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিআইডব্লিউটি-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা গুলজার আলী, উপ-পরিচালক শাহজাহান সিরাজ, সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম প্রমুখ।
গতকাল সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বিআইডব্লিউটি-এর সোয়ারীঘাট ল্যান্ডিং স্টেশনের পশ্চিম পাশে থাকা হাজী সেলিমের ওই স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার পর তার ভেতর নদীর সীমানা চিহ্নিত করতে বসানো সীমানা পিলার দৃশ্যমান হয়েছে। ওই স্থাপনার সামনে বসা নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, কয়েক দিন আগে তারা নিজেরাই নদীর জায়গায় গড়ে তোলা স্থাপনা ভেঙেছেন। সাংসদের এখন খারাপ সময় যাচ্ছে, তাই তিনি ঝামেলা করতে চাচ্ছেন না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার এখানে স্থায়ী স্থাপনা তৈরি করা হবে বলে জানান এই নিরাপত্তাকর্মী।
অস্থায়ীভাবে তৈরি করা এই স্থাপনার চারপাশে মদিনা পানির পাম্পের বিজ্ঞাপন লাগানো হলেও এটি গোডাউন হিসেবে ব্যবহার হতো বলে জানিয়েছেন এখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা। হাজী সেলিমের অস্থায়ী এই স্থাপনা বাদেও ইসলামবাগসহ আশপাশ এলাকায় অনেক দখলদারকে নিজ উদ্যোগে নদীর জায়গায় গড়ে তোলা স্থাপনা ভেঙে ফেলতে দেখা গেছে।
এদিকে, ঢাকার চারপাশের নদুনদীর তীরে পুনর্দখল ঠেকাতে বিরতি দিয়ে অভিযান চালাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ। এরই অংশ হিসেবে গত ২২ ও ২৩ নভেম্বর বাবুবাজার এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। বিআইডব্লিউটি-এর ঘোষণা অনুযায়ী, আজ পুরান ঢাকার চকবাজার ও লালবাগ থানাধীন ইমামগঞ্জ থেকে লোহারপুল পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর তীরভ‚মির সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।