Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মানবভাস্কর্য নির্মাণে দেশ ও জনগণের কল্যাণ নেই

বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ৯:১২ পিএম

মানবভাস্কর্য বা মূর্তি নির্মাণে দেশ ও জনগণের কোন কল্যাণ নেই। ভাস্কর্য স্থাপন করলে বাংলাদেশের স্থপতি মরহুম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেরও কোন কল্যাণ হবে না। মানবমূর্তি বা ভাস্কর্যবিরোধীতা মরহুম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধীতা নয়। যে বস্তু নির্মাণে দেশের ও জনগণের কোন কল্যাণ নেই তা স্থাপনে এত আগ্রহ কেন? যে দেশের মানুষ খাইতে পায় না, চিকিৎসাহীন ভাবে মারা যায়, লাখ লাখ মানুষ এখনও বস্তি ও ঝুঁপড়িতে ঘুমায়, সেদেশে রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করে এধরণের কাজের কী প্রয়োজন। ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে আগে চরম দুর্নীতি হয়েছে। বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ গতকাল আলোচনা সভা ও বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রধান আমীরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেছেন, খেলাফত শাসনব্যবস্থা না থাকায় দেশে খুন, নারী নির্যাতন ও ধর্ষন, দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতনের সয়লাব চলছে। দেশে বাহ্যিক উন্নয়নের অন্তরালে নৈতিকতার চরম বিপর্যয় ঘটছে। ভাস্কর্যের নামে মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের মোড়ে মোড়ে মূর্তি স্থাপন এবং ইসলামী রাজনীতি বন্ধ করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আন্দোলনরত ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানি করা হচ্ছে। ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন ও ইসলামী রাজনীতি বন্ধের ষড়যন্ত্র ধর্মপ্রাণ জনতা কখনো বরদাশত করবে না। সব ধরণের ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় খেলাফত আন্দোলনের প্রতিটি কর্মী জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। তাগুতি শক্তিকে পরাভূত করে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, খেলাফত শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে হযরত মুহাম্মাদ (সা:) যে ইনসাফ ও ন্যায় বিচার বিশ্ববাসিকে উপহার দিয়ে গেছেন তাতে মুসলমানসহ সকল ধর্মের মানুষের ন্যায্য অধিকার রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন-ই চলবে। আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে কুরআন সুন্নাহর শাসন কার্যকর করতে হবে।
আজ রোববার, সকালে রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর জামিয়া নুরিয়া মাদরাসা ময়দানে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ৩৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে কালিমা, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দলের প্রতিনিধি সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা সোলাইমান নোমানী, মাওলানা ইসমাঈল বরিশালী, মাওলানা হাজী ফারুক আহমাদ, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা আব্দুর রহমান খান তালুকদার, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা সাঈদুর রহমান, মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী, মাওলানা মীর ইদরীস, হাজী জালাল উদ্দিন বকুল, মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, এডভোকেট লিটন চৌধুরী, মাওলানা সানাউল্লাহ, ডা: নেয়ামত আলী ফকীর, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, এডভোকেট আব্দুল আজীজ মোমেনশাহী, মাওলানা গাজী ইউসুফ ফেনী, মৌলভী আব্দুল রকীব নেত্রকোনা, মাওলানা শেখ সাদী নারায়ানগঞ্জ, মুফতি আব্দুল আজীজ চট্রগ্রাম, মাওলানা শিহাবউদ্দিন কাসেমী গোপালগঞ্জ, মাওলানা খোদাদাদ, মাওলানা আব্দুল লতীফ সিরাজী, মাওলানা জুনায়েদ আহমাদ কাটখালী, মাওলানা জিয়াউল হক শহিদী, মুফতি মোর্শারফ হোসাইন নরসিংদী, মুক্তিযোদ্ধা মাসুদুল হক ও মাওলানা হাসান ফারুক প্রমুখ।
প্রতিনিধি সম্মেলন শেষে মজলিসে শুরার অধিবেশনে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীকে আমীর (চেয়ারম্যান) ও মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজীকে মহাসচিব পূনঃনির্বাচিত করা হয়।
মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, ইসলাম, কুরআন-হাদিস ও মহানবী (সা.) কে নিয়ে নাস্তিক্যবাদীরা অপমানজনক ব্যঙ্গ চিত্র প্রদর্শনের দু:সাহস দেখাচ্ছে। যে কোন মূল্যে তাদের প্রতিহত করতে হবে। খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষে তাওহিদী জনতাকে নতুন করে জাগ্রত করতে হবে। তিনি দল-মত নির্বিশেষে সকলকে এক ও নেক হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান।
ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলা : ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলার শাখার সভাপতি আলহাজ সৈয়দ আলী মোস্তফা ও সেক্রেটারী আলহাজ্ব শাহাদাত হোসাইন আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, মানবমূর্তি বা ভাস্কর্যবিরোধীতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধীতা নয়, এ পার্থক্যটা না বুঝার কারণেই একটি গোষ্ঠী দেশের ইসলামপন্থি ও শীর্ষ ধর্মীয় নেতাদের মুখোমুখি দাড় করানোর চক্রান্ত করে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা করছে। নেতৃদ্বয় বলেন, মানবভাস্কর্য বা মূর্তি স্থাপনে দেশ ও জনগণের কোন কল্যাণ নেই। ভাস্কর্য স্থাপন করলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেরও কোন কল্যাণ হবে না। যে বস্তু নির্মাণে দেশের ও জনগণের কোন কল্যাণ নেই তা স্থাপনে এত আগ্রহ কেন? যে দেশের মানুষ খাইতে পায় না, চিকিৎসাহীন ভাবে মারা যায়, লাখ লাখ মানুষ এখনও বস্তি ও ঝুঁপড়িতে ঘুমায়, সেদেশে রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করে এধরণের কাজের কী প্রয়োজন। নেতৃদ্বয় বলেন, ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে চরম দুর্নীতি হয়েছে। ভাস্কর্য স্থাপনের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুর্নীতিবাজরা। কাজেই বঙ্গবন্ধুর শান্তি চাইলে তার নামে মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল-কলেজ ইত্যাদি কল্যাণমূলক কাজ করুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ