পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. মওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য দেশের মুসলিম জাতিসত্তার জন্য অশনি সঙ্কেত। আমাদের দেশের মাত্র শতকরা ১০ ভাগ ছেলে-মেয়ে মাদরাসায় পড়ে। বাকি ৯০ ভাগ পড়ে স্কুলে। শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী যদি মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলাম শিক্ষাকে বাদ দেয়া হয় তা হবে আমাদের শিক্ষিত যুব সমাজ ও নতুন প্রজন্মকে ইসলাম থেকে দূরে সড়ানোর এবং নাস্তিক কিংবা ভাষ্কর্যপূজারী বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র। সমগ্র বিশে^ যখন ইসলামের জোয়ার শুরু হয়েছে তখন এখানকার নাস্তিকরা দেশ থেকে কৌশলে ইসলামকে উৎখাত করার যে খোয়াব দেখছে তা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ কোনো দিনও বাস্তবায়ন হতে দিবে না। দূর্বার ঈমানী চেতনায় শাণিত, আল্লাহ ও রাসূলের ভালোবাসায় উজ্জীবিত এ দেশের জনগণের শরীরে এক ফোঁটা রক্তকণা থাকতে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলাম শিক্ষা বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র কিছুতেই মেনে নিবে না। এসব কুচিন্তা মাথা থেকে নামিয়ে রাখুন। মুসলমানাদের বুকে আগুন ধরিয়ে দিয়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টির পথ পরিহার করুন।
তিনি আজ শনিবার পুরানা পল্টনস্থ বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া’র ৯২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মাদরাসা শিক্ষার দ্বীনি স্বকীয়তা রক্ষা ও এবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুর রহমান।
ড. ঈসা শাহেদী আরো বলেন, মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও পৃষ্ঠপোষকতার উদ্দেশ্যে যে ইসলামী আরবি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকদের মাঝে কোনো আশার সঞ্চার করতে পারেনি। কারণ ফাযিল ও কামিল স্তরে অনেকগুলো মাদরাসায় অনার্স কোর্স খোলা হলেও নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। ফলে ছাত্ররা উপযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার অভাবে মাদরাসা শিক্ষার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে কলেজ বিশ^বিদ্যালয়ে পাড়ি জমাচ্ছে। অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষার ফাদার প্রতিষ্ঠান স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণ করা হচ্ছে। দেশে হাজার হাজার প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষকদের বেতন ভাতা ও শিক্ষাবৃত্তি যে হারে দেয়া হয় সে তুলনায় একই মানের ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলো চরম বৈষম্যের শিকার। দেশে ১৫১৯টি এবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষকদের মাত্র ২,৫০০ টাকা ভাতা এবং সহকারী শিক্ষকের ২,৩০০ টাকা ভাতা দেয়া হয়, তাও আবার ৩ মাস অন্তর অন্তর। বাকি রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত মাদরাসার শিক্ষকগণ ৩৬ বছর যাবৎ বেতন ভাতা হতে বঞ্চিত। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দানের সাথে সাথে ১৩তম গ্রেডের বেতন ভাতা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, অনার্স কোর্সে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রাখা এবং ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলোকে পঙ্গু বানিয়ে গোটা মাদরাসা শিক্ষাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। কারণ তাতে গাছের মাথা ও শিকড় একসাথে কেটে দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বিনা নোটিশে সর্বস্তরের মাদরাসাগুলো ছাত্র ও শিক্ষক শূন্যতার শিকার হয়ে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। পরিতাপের বিষয় হল, দেশের ঐতিহ্যবাহী কওমী মাদরাসাগুলোকেও নানা প্রলোভন দিয়ে আলিয়া নেসাবের মাদরাসাগুলোর একই পরিণতির জালে আটকানোর গভীর চক্রান্ত সফল হতে চলেছে।
ড. শাহেদী বলেন, ফ্রান্সে সরকারীভাবে আমাদের প্রিয়নবী বিশ^ ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের বিরুদ্ধে গোটা মুসলিম উম্মাহ ও বাংলাদেশের সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা সোচ্চার হলেও আমাদের সরকার অর্থপূর্ণ নীরবতা পালন করেছে। সেই ব্যর্থতা ঢাকা দেয়ার জন্য স্বাধীনতার ৫০ বছর পর জাতির পিতার নতুন করে ভাষ্কর্য নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে দেশে অশান্তি সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রে সহজে পা না দেয়ার জন্য তিনি ইসলামপ্রিয় যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ দেশের বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠী কোনো অবস্থাতেই ভাষ্কর্যের নামে জাতীয় জীবনে শিরকি সংস্কৃতি চর্চার পাঁয়তারা বরদাশত করবে না।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রধান সম্পদক মোস্তফা আল মুজাহিদ এর সঞ্চালনায়, সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহব্বায়ক মো. জহিরুল ইসলামের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয়ে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক মাওলানা এরশাদ উল্যাহ ভূঁইয়া, প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, প্রিন্সিপাল মো. শওকাত হোসেন, মাওলানা ফারুক আহমদ, মাওলানা সুরুজুজ্জামান, কাজী সাইফুদ্দীন, মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল ফারুক, মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমিন, মাওলানা আব্দল হামিদ, ড. মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন, অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান, মাওলানা কাজী আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা এ এম এম কামাল উদ্দীন, মোস্তফা বশীরুল হাসান, মাওলানা মাকছুদ উল্লাহ আমিনী, মাওলানা মাহফুজুর রহমান, মাওলানা সাইফুল্লাহ খান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ভুঁঞা, মাওলানা আব্দুল কাদির, মো নজরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ সরকার, শাহ মুহাম্মদ নাজিউল্লাহ, মাগফুর মাহমুদ, মো. মাহমুদুল্লাহ, মো. রাফাত ইসলাম যুবায়ের খান ও মো. যুবায়ের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।