Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিক্ষুব্ধ মাদরাসা ছাত্রদের ওপর পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ

আহত ১৫ : গ্রেফতার ১৮ জন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ৯:২৮ পিএম

দাঙ্গা পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জে রাজধানীতে মিছিলকারী প্রায় ১৫ জন বিক্ষুব্ধ মাদরাসার ছাত্র আহত হয়েছে। পুলিশের হাতে আটক হয়েছে প্রায় ১৮ জন ছাত্র। গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ।
পুলিশী বাধা অতিক্রম করে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইট থেকে ছাত্রদের মিছিল শান্তিনগর বাজারের সামনে পৌঁছে। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা মুহু মুহু শ্লোগান দেয় ’মামুন ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’ মসজিদের নগরী ঢাকাকে মূর্তির শহর বানাতে দেবো না দেবো না’ শাহাবাগীদের আস্তানা এই বাংলায় থাকবে না’ ইসলামী মাহফিলে বাধা কেন প্রশাসন জবাব চাই’ জবাব চাই’।
মিছিলকারীদের সাথে কোনো শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অংশ নেননি। মিছিলের আগে পিছে কড়া পুলিশী প্রহরা ছিল। শান্তিনগরে রাস্তার ওপর মিছিলটিকে পুলিশ আটকে দেয়। এসময়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সাবেক সভাপতি মুফতি আব্দুল রহিম সাঈদ সংক্ষিপ্ত মোনাজাতের মাধ্যমে মিছিল সমাপ্ত করার চেষ্টা করেন। এসময়ে বিনা উষ্কানিতে পুলিশী হামলায় মিছিলটি মুহুর্তে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পাশেই কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মার্কেটে ছাত্ররা আশ্রয় নিলে সেখান থেকে বের হলে পুলিশের লাঠিচার্জে অনেকেই আহত হয়।
উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শাহাবাগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ-এর কটুক্তি এবং ইসলামী মাহফিলে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে গতকাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইট থেকে মাদরাসার শত শত ছাত্র বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। জুমার নামাজ শেষ হবার সাথে সাথে মসজিদের ভেতর থেকেই মাদরাসার ছাত্ররা শ্লোগান দিয়ে উত্তর গেইটে জড়ো হতে থাকে। পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে ছাত্ররা রাস্তায় নেমে পড়ে। পুলিশ মিছিলকারীদের রাস্তায় বের হতে নিষেধ করলে তারা পুলিশী বাধা ভেঙ্গে পল্টন মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়। পরে মিছিলটি শ্লোগান দিতে দিতে কাকরাইল মোড় হয়ে শান্তিনগর ফ্লাই ওভারের সামনে অবস্থান নেয়। এর আগে সকাল দশটা থেকেই বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও পুরানা পল্টন মোড়ে দাঙ্গা পুলিশ অবস্থান নেয়।
এদিকে, ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি শুক্রবার এলে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সমাবেশ বা মিছিল বের করতে আমাদের কাছে চিঠি দিয়ে অনুমতি চেয়ে থাকে। কিন্তু গতকাল যারা মিছিল বের করেছে তারা কোনো অনুমতি নেয়নি। কিন্তু অনুমতি না নিয়েই তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইট থেকে মিছিল বের করে।
তিনি বলেন, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরকে উপেক্ষা করে তারা মিছিল এগিয়ে নিতে থাকে। এভাবে নয়াপল্টনের নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত মিছিল আসতে থাকে। পরে পুলিশ তাদেরকে বারবার বুঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তারা তখনও কোনো কথা না শুনে কাকরাইলের কর্ণফুলী মার্কেটের সামনে পর্যন্ত চলে আসে। এতে যানবাহন চলাচল থেমে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় গতকাল রাত ৭টা পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : বাদ জুমা শান্তিনগরে মাদরাসার ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মূর্তি বিরোধী কোন কর্মসূচিতে পুলিশী হামলা মেনে নেয়া যায় না। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত মাদরাসা ছাত্র এবং ঈমানদার মুসল্লিদের মুক্তির দাবি জানান।
মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের হামলা স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে, তাহলে কি সরকার নাস্তিক মুরতাদ ও শয়তানী শক্তির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে? ওলামায়ে কেরামের মূর্তি ও ভাস্কর্যের বিষয়ে এতো খোলামেলা বিশ্লেণের পরেও কোন মুসলমান মূর্তি বা ভাস্কর্যের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না।

বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলন : সারাদেশ ব্যাপী ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম সহ ওলামা একরামের বিরুদ্ধে নাস্তিক-মুরতাদদের কটুক্তির প্রতিবাদে গতকাল শান্তিনগরে ছাত্র ও তৌহিদি জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশে লাঠিচার্জ ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, হামলা মামলা ও গ্রেফতার করে ওলামায়ে কেরামের মূর্তি ও ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনকে কোনক্রমেই স্তব্ধ করা যাবে না। গুটিকয়েক কচুরি পানার মতো ভেসে আসা নাস্তিক-মুরতাদ ও ছাত্রলীগ যুবলীগ কর্মীদের আন্দোলন ওলামায়ে কেরামের কণ্ঠকে রোধ করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। মুফতি ফখরুল ইসলাম অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নিরপরাধ ছাত্রদেরকে মুক্তির জোর দাবি জানান।



 

Show all comments
  • Jack Ali ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ১০:১৩ পিএম says : 0
    We are warning you police, you are committing extreme crime, our government have transgressed all the boundary.. government should release all the madrasa students and also those police tortured madrasa people they must apologise.. Warning for PM-- Allah is recording every atomic things, don't you think that you are powerful than Allah.. Every body will die-- death is hovering on our head..
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ