পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী বলেছেন, আবহমান কাল থেকেই বাংলাদেশ হিন্দু,মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সম্প্রীতিপূর্ণসহ অবস্থানের উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে হিন্দু ভাই-বোনদেরকে কখনো এ দেশের মুসলমানেরা অবহেলা ও অবজ্ঞা করেনি। তারা নির্দ্বিধায় এ দেশে তাদের ধর্মচর্চা করে আসছে। মুসলমানেরা কখনো তাদের ধর্মকর্মে কোন প্রকার বাধার সৃষ্টি করেনি। ব্যবসা-বাণিজ্য ও সরকারি-বেসরকারি চাকরিসহ সর্বক্ষেত্রে তারা স্বাধীনভাবে তাদের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে । এর পরেও অতি সম্প্রতি একটি কুচক্রি মহল বিরাজমান সম্প্রীতির এই ঐতিহ্য বিনষ্ট করার নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। এমনকি রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে নানা রকম আপত্তিকর শ্লোগান দিয়ে ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টির উস্কানি দিচ্ছে। এহেন অবস্থায় আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই যে, আমরা কোন অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের এই চক্রান্ত বরদাশত করবোনা। সরকারকেও এই জঘন্য অপতৎপরতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আমাদের করণীয়" শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এসব কথা বলেন।
জমিয়তের সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফীর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর সঞ্চালনায় উক্ত গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্য ফোরামের আহবায়ক সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না,জমিয়তের সহ সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া,বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের,বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়বে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী,ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা মোস্তফা তারেকুল হাসান, যুগ্মমহাসচিব মুফতী মুনীর হোছাইন কাসেমী, মাওলানা নাজমুল হাসান ও মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, জমিয়তের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, খেলাফত মজলিশের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, জমিয়তের সাংগঠনিক সম্পাদক,প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নাল আবেদীন মাওলানা বশীর আহমদ, মাওলানা আফজাল হোছাইন রাহমানী,মুফতী বশীরুল হাসান খাদেমানী,মুফতী মাহবুবুল আলম ও ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা ইখলাসুর রহমান রিয়াদ।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্তে সরকারের হাত রয়েছে এবং এটা সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি হাতিয়ার। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আলেম ওলামারা লড়াই করে যাচ্ছেন। ধর্ম মানুষকে সাম্প্রদায়িকতা শিখায় না। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা রক্ষোয় সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, যে দলে পাপিয়া তৈরি হয়, যে দলে জিকে শামীম তৈরি হয় সে দলের ভূমিদৈস্যুদের দ্বারা হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করা সম্ভব।
তিনি বলেন, এই সরকার দশ কোটি মানুষের ভোটাধিকার কেঁড়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, ঈমানদার সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত মানুষের অধিকার আদায় সম্ভব নয়। সামগ্রিক অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করার ওপরগুরুত্বারোপ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া বলেছেন, যারা ধর্মে বিশ্বাস করে তারা কখনো সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করতে পারেনা। কোন ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থ নিয়ে বাড়াবাড়ি কারো কাছ থেকেই কাম্য নয়। তিনি বলেন, নবী রাসুল, কুরআনকে নিয়ে যেভাবে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি হয়’ তা’ কোনো মতেই উচিত নয়। ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষকে খন্ডিত করে না। এ দেশ সম্প্রীতির দেশ। যুগ যুগ ধরে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহবস্থানে বসবাস করে আসছে। বৈষম্য করার কোনো সুযোগ নেই। ধর্ম কখনো বিভেদ সৃষ্টি করে না। কাজী আবুল খায়ের বলেন, একটি কুচক্রি মহল দেশের আলেম ওলামা, এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী শ্লোগান দিচ্ছে। সরকারকে এদের চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র উদঘাটন করতে হবে। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে কোনো চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুর রব ই্সুফী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে আমাদের দেশকে অশান্ত ও অস্থিতিশীল করার যে কোন তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। কারণ এ জাতীয় অপতৎপরতায় আমাদের কর্ষ্টাজিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। তিনি বলেন, কোনো চক্রান্তকারীদের ফাঁদে পা দেয়া যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।